ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার এক কর্মীকে খুনের অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল দুই ব্যক্তির। বৃহস্পতিবার এই রায় দেন পুরুলিয়া জেলা আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক মনোজিৎ মণ্ডল। মামলার সরকারি কৌঁসুলি পঙ্কজ গোস্বামী জানান, খুনের ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১০ সালের ১২ জুলাই বান্দোয়ান থানার মাকপালি গ্রামের অদূরে জুরি জঙ্গলে। ওই দিন সন্ধ্যায় মাকপালি গ্রামে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার একটি সভা ছিল। ওই দলের সক্রিয় কর্মী মাকপালি গ্রামের বাসিন্দা বছর চব্বিশের শ্রীকান্ত হাঁসদা সভা শেষে রাতে বাড়ি ফেরার পথে খুন হন। গ্রামবাসীরা রাতে জঙ্গল থেকে গুলির শব্দ পেলেও মাওবাদী অধ্যুষিত বান্দোয়ানের ওই গ্রামে ভয়ে কেউ বাড়ি থেকে বের হননি। পরের দিন সকালে রাস্তায় ওই যুবকের গলাকাটা ও গুলিবিদ্ধ দেহ মেলে। নিহতের বাবা রামচাঁদ হাঁসদা বান্দোয়ান থানায় মাকপালির বাসিন্দা বঙ্গেশ্বর মুর্মু ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলপাহাড়ির বাসিন্দা বিকাশ মুর্মুর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। এলাকায় তারা ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার বিরোধী একটি রাজনৈতিক দলের কমর্ীর্ বলে পরিচিত। ঘটনার পর থেকেই দু’জনে এলাকায় ছিল না। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বান্দোয়ান থানার পুলিশ অভিযুক্ত বঙ্গেশ্বরকে গ্রেফতার করে। পরে বিকাশ পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে। খুনের কারন হিসেবে শুনানিতে উঠে এসেছে, অভিযুক্তেরা শ্রীকান্তকে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ছাড়তে বলেছিল। কিন্তু তিনি রাজি না হওয়াতেই খুন করা হয়। সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এ দিন বিচারক দু’জনকেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। অন্য দিকে, এক পড়শি যুবককে খুনের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রামপুরহাট ফাস্ট ট্র্যাক প্রথম আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সুধীর কুমার চার জনের যাবজ্জীবন দণ্ড দেন। সাজাপ্রাপ্তরা হল-- লালন শেখ, সেলিম শেখ, মিলন শেখ, কোয়াতাব শেখ। তাদের বাড়ি মুরারই থানার কনকপুর গ্রামে। সরকারি আইনজীবী দেবপ্রসাদ ভট্টাচার্য জানান, ২০০৮ সালের ১৬ এপ্রিল কনকপুরে পুকুরে চান করা নিয়ে কাজিবুল শেখের সঙ্গে পড়শি লালন শেখের ঝগড়া হয়। পূর্ব আক্রোশবশত অস্ত্র ও অ্যাসিড বাল্ব নিয়ে কাজিবুলের বাড়িতে চড়াও হয় লালন ও তার সঙ্গীরা। কাজিবুলকে বাইরে বের করে এনে লাঠি ও টাঙ্গি দিয়ে মারধর করা হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। পরে মৃতের ভাইপো মান্নান শেখ পুলিশের কাছে ৬ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। |