পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি যখন তুঙ্গে, সেই সময়েই সিপিএমকে উদ্বেগে রাখছে সাম্প্রতিক বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের হার। তিনটি কেন্দ্রের মধ্যে দু’টিতেই বামেদের ভোট কমেছিল প্রায় ১১ ও ১২% করে। একটি কেন্দ্র তারা জিতলেও সেখানেও ভোটের হার কমেছিল ৬%-এর বেশি। পঞ্চায়েতের প্রস্তুতির হাল-হকিকত খতিয়ে দেখার ফাঁকেই উপনির্বাচনের এই ধাক্কার প্রাথমিক ময়নাতদন্ত উঠে আসতে পারে সিপিএমের আসন্ন রাজ্য কমিটির বৈঠকে। বিরোধী ভূমিকায় গিয়ে প্রথম পঞ্চায়েত ভোটের আগে সাংগঠনিক ব্যর্থতার পাশাপাশি আলিমুদ্দিনকে ভাবাচ্ছে দলীয় অন্তর্ঘাতের তত্ত্বও। আগামী রবিবার আলিমুদ্দিনে রাজ্য কমিটির বৈঠকের আলোচ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন ও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি। সেই অবসরেই উপনির্বাচনের প্রসঙ্গ আলোচনায় আনতে চান দলের নেতাদের একাংশ। দিল্লিতে সদ্যই পলিটব্যুরোর বৈঠকে রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু যে রিপোর্ট দিয়েছেন, সেখানে বলা হয়েছে, ভোটের হার এ ভাবে কমে যাওয়া যথেষ্টই বিস্ময়কর। তিন কেন্দ্রেই বামেদের তরফে বেশ কিছু ‘রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক ঘাটতি’র কথা রিপোর্টে কবুল করে নেওয়া হয়েছে বলে সিপিএম সূত্রের খবর। তিন কেন্দ্রের মধ্যে মালদহের ইংরেজবাজারে প্রার্থী ছিল সিপিএমের। সেখানে প্রার্থী বাছাই নিয়ে দলের অন্দরেই বিরোধ আরও বিপদ ডেকে আনে বলে সিপিএমের বক্তব্য।
দলের একাংশের মতে, ইংরেজবাজারে পুরনো প্রার্থী সমরেন্দ্র রায়কেই ফের আসরে নামানো পরিস্থিতির বিচারে ঠিক সিদ্ধান্ত হত। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর একাংশও তা-ই চেয়েছিলেন। কিন্তু মালদহের এক প্রাক্তন মন্ত্রী ও জেলা কমিটির একাংশের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত প্রার্থী করা হয় নতুন মুখ কৌশিক মিশ্রকে। এর জেরে বামেদের কর্মী-সমর্থক মহলেরই সব ভোট তাদের প্রার্থীর বাক্সে পড়েনি বলে দলের আশঙ্কা। দলীয় নেতৃত্ব এখনও বুথওয়াড়ি পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য বিশ্লেষণের অপেক্ষায় । রেজিনগর ও ইংরেজবাজার দুই কেন্দ্রেই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়া মন্ত্রীদের হারানোর আহ্বানের উপরে বেশি জোর দেওয়া হিতে বিপরীত হয়েছে বলেও সিপিএমের মত। |