তফসিলি জাতি-উপজাতির জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল আগেই। এ বার উচ্চশিক্ষায় ভর্তির ক্ষেত্রে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি বা ওবিসি-র ছাত্রছাত্রীদের জন্য সংরক্ষণ ব্যবস্থা চালু করতে বৃহস্পতিবার বিধানসভায় বিল পাশ করল সরকার। ওবিসি-র জন্য মোট ১৭% আসন সংরক্ষিত থাকবে। তার মধ্যে ১০% অনগ্রসর মুসলিমদের জন্য। ২০১৪-’১৫ সালের শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন সংরক্ষণ চালু হবে।
তফসিলি জাতি-উপজাতি এবং সাধারণ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য এখন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যত আসন রয়েছে, তা অপরিবর্তিত রেখেই ওবিসি-দের জন্য সংরক্ষণ চালু করতে চায় রাজ্য। এই কারণে আসন বাড়ানো এবং অন্যান্য পরিকাঠামো গড়ে তুলতে ছ’বছর লাগবে বলে বিলে জানানো হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, ২০১৪-’১৫ সালের শিক্ষাবর্ষ থেকেই প্রতিটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসন বাড়ানো সম্ভব কি?
এ দিন সভার দ্বিতীয়ার্ধে ওয়েস্টবেঙ্গল স্টেট হায়ার এডুকেশনাল ইনস্টিটিউশনস (রিজার্ভেশন ইন অ্যাডমিশন) আইন, ২০১৩ শীর্ষক বিল সমর্থন করেও বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র জানান, অত্যন্ত তাড়াহুড়ো করে এটি আনা হয়েছে। তাঁর প্রস্তাব, এটি সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হোক। কারণ শিক্ষা কেন্দ্র ও রাজ্যের যুগ্ম তালিকাভুক্ত। তাই অত্যন্ত সতর্ক হয়ে আইনের ধারা-উপধারা, বিধি রচনা করা দরকার। সিলেক্ট কমিটিতে গেলে পূর্বতন বাম সরকারের মন্ত্রীদের অভিজ্ঞতার সহায়তা পাওয়া যাবে। বিরোধী পক্ষের দাবি, বাম আমলেও এই সংরক্ষণের উদ্যোগ শুরু হয়েছিল। কিন্তু নানান বাধায় তা সম্পূর্ণ করা যায়নি। সূর্যবাবু জানান, মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আসন বাড়াতে হলে তাদের সর্বভারতীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন দরকার। এই সব খুঁটিনাটি সমস্যার সম্ভাবনার কথা বিলে উল্লেখ করা হয়নি। এতে ভবিষ্যতে সমস্যা হতে পারে। তৃণমূলের বিধায়ক তাপস রায়, শশী পাঁজারা পাল্টা যুক্তি দেন, বিলটি সিলেক্ট কমিটিতে গেলে আরও দু’বছর দেরি হবে। জবাবি ভাষণে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, সাচার কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, এ রাজ্যে স্নাতক স্তরে প্রতি ২৫ জনের মধ্যে এক জন, স্নাতকোত্তরে ৫০ জনে এক জন সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রী। এই লজ্জা মোচন করতে সামাজিক সদিচ্ছা দরকার। সরকার সেটাই করতে চাইছে। |