রাজ্যের বিধায়করা মাইনে, ভাতা, টেলিফোন বিলের টাকা গত ডিসেম্বর মাস থেকে পাচ্ছেন না। আজ, শুক্রবার রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের প্রথম পর্ব শেষ হবে। চার মাস মাইনের টাকা না পাওয়ায় সব দলের বিধায়করাই কমবেশি ক্ষুব্ধ। বৃহস্পতিবার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গত বছর বিধায়কদের ভাতা বৃদ্ধি হয়। সেই সংক্রান্ত কিছু পদ্ধতিগত প্রশ্ন তুলে পে-অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস বিল আটকে দেওয়াতেই এই বিপত্তি। স্পিকারের আশ্বাস, “বিষয়টি মিটে গিয়েছে। শীঘ্রই বিধায়করা সমস্ত বকেয়া টাকা একসঙ্গে পাবেন।”
বিধায়কদের মাইনে থেকে আরম্ভ করে টেলিফোনের মাসিক টাকা সব আটকে গেল কেন? জবাবে বিমানবাবু বলেন, “বাম আমলে বিধায়করা বিদ্যুতের বিল, রান্নার গ্যাস ইত্যাদি বাবদ সাড়ে তিন হাজার টাকা পেতেন। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে তা বাড়িয়ে পাঁচ হাজার টাকা করা হয়। বিধায়করা এই বিল জমা দিলে পদ্ধতিগত কিছু প্রশ্ন তুলে অর্থ দফতর তা আটকায়।” বিধায়করা রান্নার গ্যাস, টেলিফোনের বিল ছাড়াও ১২ হাজার টাকা করে মাইনে পান। প্রতি মাসে সব টাকাই একসঙ্গে দেওয়া হয়। ডিসেম্বর থেকে আর কোনও টাকাই অর্থ দফতর অনুমোদন করেনি। তবে বিধায়কদের ভ্রমণ ভাতা বা বিভিন্ন কমিটির বৈঠকে আসার জন্য বিশেষ ভাতা আটকে নেই বলে স্পিকারের দাবি।
চার মাস ধরে মাইনে না পেয়ে বাম-কংগ্রেস-তৃণমূল সব দলের বিধায়করাই ক্ষুব্ধ। কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া জানান, এ ব্যাপারে তাঁদের দলের বিধায়ক নেপাল মাহাতোর নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল সম্প্রতি স্পিকারের কাছে গিয়ে অনুযোগ করেন। মানসবাবুর কথায়, “রাজ্য সরকারের আর্থিক সঙ্কট রয়েছে। কিন্তু তার মধ্যেই সমস্ত সরকারি কর্মীরা মাইনে পাচ্ছেন। বেচারি বিধায়করা কী দোষ করলেন যে, তাঁরা চার মাস ধরে মাইনে পাবেন না?” তাঁরা বিষয়টি কেন বিধানসভায় তুললেন না? আরএসপির সুভাষ নস্কর কিছুটা আক্ষেপ করে বলেন, “নিজেরা মাইনে পাচ্ছি না বলে তো বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বলা যায় না! এটা আমাদের সংস্কৃতি নয়। কিন্তু অসুবিধা হচ্ছে।” সিপিএমের সুশান্ত ঘোষও অসুবিধার কথা জানান। তৃণমূলের বর্ষীয়ান বিধায়ক পরশ দত্ত বলেন, “কম-বেশি সকলেরই অসুবিধা হচ্ছে। তবে এ মাসেই সমস্যা কেটে যাবে।” |