|
|
|
|
ইমাম ভাতা দিলেই উন্নয়ন হয় না, ক্ষোভ সংখ্যালঘু তৃণমূল নেতাদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
রাজ্যের সরকার সংখ্যালঘু উন্নয়নে যথাযথ পদক্ষেপ করছে না এমন অভিযোগ তুললেন তৃণমূলের সংখ্যালধু সেলের নেতারাই। সেই সঙ্গে প্রকাশ্যে এল দলের গোষ্ঠী কোন্দলও।
বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে লোধা স্মৃতি ভবনে সংখ্যালঘু সেলের সভা ছিল। সব নেতারা উপস্থিত থেকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই প্রমাণের আপ্রাণ চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু দেখা গেল সেলের রাজ্য সভাপতি ইদ্রিশ আলি বক্তব্য রাখার সময়েই অনেকেই সভা ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন। যাওয়ার সময় বলে গেলেন, “৩টেয় সভা ডেকে সব ৬টায় হাজির হচ্ছেন। আমাদের তো কোনও কাজ নেই। এমন করলে সেলের কী প্রয়োজন।”
সংখ্যালঘু সেলের দাসপুর ব্লক সভাপতি গোলাম মোর্তাজা বলেন, “এটা মানতেই হবে যে, নির্বাচনে জিততে হলে সংখ্যালঘুদের ভোট অবশ্যই প্রয়োজন। কিন্তু শুধু ভোট চাইলেই তো হবে না। তার জন্য সংখ্যালঘুদের জন্য কিছু করতে হবে। পঞ্চায়েতের ত্রিস্তরে সংখ্যালঘুদের প্রার্থী করতে হবে, চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু কিছুই হচ্ছে না।” পিংলা ব্লকের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি মহম্মদ মহসিনের কথায়, “ইমামদের ভাতা দিলেই কী মুসলিমদের উন্নয়ন হয়ে গেল? ক’টা নতুন মাদ্রাসা করা হয়েছে, ক’জন মুসলিম গরিব মানুষ উপকৃত হয়েছেন? আমাদের কথারও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।” একই অভিযোগ সবং ব্লক সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি মহম্মদ মোবারকের। |
|
তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের সভায় বক্তব্য রাখছেন ইদ্রিশ আলি।—নিজস্ব চিত্র। |
নানা দাবি নিয়ে আলোচনা করতেই এ দিন জেলার প্রতিটি ব্লক থেকে হাজির হয়েছিলেন সংখ্যালঘু সেলের নেতারা। ৩ টের সময় সভা ডাকা হয়েছিল। কিন্তু ফেডারেশন হলে বর্ধিত সভা থাকায় এই সভায় বুড়ি ছোঁওয়া করে সেখানে চলে যান সেলের রাজ্য সভাপতি। তারপর যখন ফিরে আসেন তখন বিকেল সাড়ে ৫টা। এসেছিলেন বিধায়ক মৃগেন মাইতি, শ্রীকান্ত মাহাতো, দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় ও কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ। প্রদ্যোৎবাবু বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, “আগে মুসলিম সম্প্রদায়ের হাতে বই, খাতার বদলে বোমা-বন্দুক তুলে দিত বামফ্রন্ট সরকার। যাতে তারা অসামাজিক কাজে জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু আমাদের মুখ্যমন্ত্রী উন্নয়ন চান। তাই মাদ্রাসা তৈরি, ইমামদের ভাতা দেওয়ার কথা বলছেন। করছেনও।” ইদ্রিশ আলির কাছে আগেই ক্ষোভের কথা পৌঁছেছিল। তাই বক্তব্যের শুরুতে তিনি বলেন, “হয়তো কিছু ক্ষোভ রয়েছে। তবু বলতে চাই, আমাদের নেত্রী অনেক কিছু করতে চাইছেন। সমস্ত দ্বিধাদ্বন্দ্ব ভুলে পঞ্চায়েতে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।” এরপরই অনেকে সভা ছাড়তে শুরু করেন। বাইরে বেরিয়ে নিজেদের মধ্যে বলতে থাকেন, “এই বক্তব্য তো প্রতিদিন শুনি। কী লাভ।”
সব মিলিয়ে এ দিনের সভা থেকে পরিষ্কার, সংখ্যালঘুদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী যত ঘোষণাই করুন না কেন, ক্ষোভ প্রশমিত হচ্ছে না। |
|
|
|
|
|