বিনপুর নিয়ে বৈঠক
দলের মুখরক্ষায় ফের জঙ্গলমহলে সভার ভাবনা
বিনপুরের সভায় লোক কম হওয়ায় চটেছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। এই পরিস্থিতিতে দলের ভাবমূর্তি বাঁচাতে তৎপর হলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে দলীয় বৈঠকে স্থির হয়েছে, যত শীঘ্র সম্ভব জঙ্গলমহলে একটি সভা করা হবে। সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হবে তিন সাংসদ মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী এবং সুব্রত বক্সীকে। লোধাশুলি বা জামবনিতে ওই সভা হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে খবর। আলোচনার প্রেক্ষিতে তা অন্যত্রও হতে পারে। কেন তড়িঘড়ি সভার পরিকল্পনা? তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ।
প্রস্তাবিত সভায় অন্তত কুড়ি হাজার মানুষের জমায়েত করতে চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ইতিমধ্যে এ নিয়ে দলীয়স্তরে আলোচনাও শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার বিনপুরে সভা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সরকারি সভা। সভা যেখানে হয়, সেখানে প্রায় ২৫ হাজার লোকের জমায়েত হতে পারে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় জমায়েত হয়েছিল বড়জোর ৫ হাজার। পালাবদলের পর বহুবার জঙ্গলমহলে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সভায় এত কম ভিড়, এই প্রথম। এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে দলের অন্দরেও। সামনে আসে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। একাংশ নেতৃত্বের মতে, জঙ্গলমহলে দলের কাণ্ডারী শুভেন্দু অধিকারী। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সভার আয়োজনে শুভেন্দুকে দায়িত্বই দেওয়া হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য গরমের জন্য লোক হয়নি বলে সভা থেকে দাবি করেন। বলেন, “এটা গরমকাল। এত রোদে বেলা বারোটার সময় সভা হয় না। মাথার উপর ছাউনি দিলে ভাল হত। এটা আমাদের ভুল হয়ে গিয়েছে।” তবে মাধ-বসন্তে তাঁর এই যুক্তি খুব একটা দানা বাঁধেনি। তাই তড়িঘড়ি আরও একটি সভা করেই দলের মুখরক্ষা করতে চাইছেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব।
বৈঠকে সুব্রত বক্সী ও তৃণমূলের জেলা নেতারা। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরের ফেডারেশন হলে তৃণমূলের দু’টি বৈঠক হয়। দু’টিই পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে। প্রথম সভাটি টাস্ক ফোর্সের। দ্বিতীয়টি জেলার বর্ধিত সভা। যেখানে ব্লক সভাপতি এবং জেলা কোর কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। চলতি বছরের জানুয়ারির গোড়ায় মেদিনীপুরে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলায় এসে তিনি দলের বিধায়ক এবং নেতাদের নিয়ে এক বৈঠকও করেন। ছিলেন মুকুল রায়ও। বৈঠক থেকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য একটি ‘টাস্ক ফোর্স’ গঠন করা হয়। নির্দেশ ছিল, এই ‘টাস্ক ফোর্স’ই পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজকর্ম দেখভাল করবে। বৈঠক করবে। তবে দু’মাসের মধ্যে ‘টাস্ক ফোর্সের’ একটিও বৈঠক হয়নি।
দলীয় সূত্রে খবর, কেন বৈঠক হয়নি, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জেলা সফরে এসে তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের কাছেও তা জানতে চান মুকুলবাবু। তবে, সদুত্তর দিতে পারেননি সভাপতি। শেষমেশ, বৃহস্পতিবার সেই টাস্ক ফোর্সের সভা হল। এই সভাতেই মুখ্যমন্ত্রীর সভার ড্যামেজ কন্ট্রোলে জঙ্গলমহলে আরও একটি সভা করা নিয়ে আলোচনা হয়। পরে দলের সাংসদ তথা দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর উপস্থিতিতে জেলার বর্ধিত সভা হয়। দলীয় সূত্রে খবর, সভায় সুব্রতবাবু স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, দুর্দিনে যাঁরা দলের সঙ্গে ছিলেন, পঞ্চায়েতের প্রার্থী নির্বাচনে তাঁদেরই গুরুত্ব দিতে হবে। ৫০ শতাংশ মহিলা সংরক্ষণ হয়েছে বলে পরিবারতন্ত্র চলবে না।
তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ বলেন, “দলের সাংগঠনিক সভা ছিল। প্রথমে টাস্ক ফোর্সের বৈঠক হয়েছে। পরে জেলার বর্ধিত সভা হয়। রাজ্য সভাপতি পঞ্চায়েত নির্বাচনের গাইডলাইন দিয়েছেন। সেই মতোই কাজ হবে।” দলেক মুখরক্ষা করতেই কি ফের জঙ্গলমহলে সভার পরিকল্পনা হয়েছে? প্রশ্নের সদুত্তর এড়িয়ে প্রদ্যোৎবাবুর বক্তব্য, “জেলার সব মহকুমা থেকেই একটি করে সভা করার প্রস্তাব এসেছে। ঝাড়গ্রাম মহকুমা থেকেও এমন প্রস্তাব এসেছে। তবে দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি। আলোচনা চলছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.