কোটলায় ৪-০-র হাতছানি। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে তো এমনই হাল হয়েছিল ধোনিদের। সেই দুঃসময়ের কথা ভেবেই মাঠে নামুক ধোনিরা। ভারতীয় ক্যাপ্টেনের জন্য আমার পরামর্শ, ওদের একটুও দয়া দেখিও না। ৪-০ করতেই হবে।
সন্ধিক্ষণে থাকা একটা দল ৪-০-য় সিরিজ জিতলে তা ক্রিকেটের ইতিহাস চিরকাল মনে রাখবে। উল্টো দিকের দলটা কী অবস্থায় রয়েছে, তা এখানে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার নয়। সিরিজের ফলটাই আসল। সে যে বিপক্ষই হোক। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানের ব্যাটে রানের বন্যা দেখে যে কী ভাল লাগছে, সে আপনাদের বোঝাতে পারব না। তবে পাশাপাশি খারাপও লাগছে শিখর ধবনের কথা ভেবে। বেচারা এত ভাল ভাবে টেস্ট জীবন শুরু করেও ঘরের মাঠে খেলতে পারবে না। এটা ওর পক্ষে খুব হতাশাজনক।
এ জন্য অবশ্য আর একটা ছেলের সামনে সুযোগ এসে গেল। যে ছেলেটা দীর্ঘদিন ভারতীয় দলের সঙ্গে থেকেও এখনও টেস্ট ক্রিকেটের স্বাদ পায়নি। বুঝতেই পারছেন কার কথা বলছি। অজিঙ্ক রাহানে, আবার কে। গৌতম গম্ভীরেরও ভাগ্যটা খারাপ। এই সময়েই শরীর খারাপ হয়ে গেল ছেলেটার! তাও ভাল, নির্বাচকদের তো ওকে মনে আছে। যা অবস্থা, তাতে মুরলী বিজয় ছাড়া দলে আর কোনও স্পেশালিস্ট ওপেনার নেই। এ ক্ষেত্রে রাহানেকে ওপেন করতে পাঠানোই ভাল। কোটলার পাটা উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার নির্বিষ বোলিংয়ের বিরুদ্ধে টেস্ট জীবনের স্মরণীয় সূচনার সুবর্ণ সুযোগ পাচ্ছে এই প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান। দেখা যাক এই সুযোগটাকে রাহানে কাজে লাগাতে পারে কি না। সে রকম হলে কিন্তু নির্বাচকদের, বিশেষ করে টিম ম্যানেজমেন্টও বেশ ঝামেলায় পড়ে যাবে। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে কাকে রাখবে, কাকে ছাঁটবে, এই নিয়ে। ভারতীয় ক্রিকেটের পক্ষে অবশ্য এটা দারুণ ব্যাপার।
ওপেনার ছাড়া ভারতীয় ব্যাটিংয়ে আর কোনও পরিবর্তন আসবে বলে মনে হয় না। তবে গত দুটো টেস্টে ভারতের মিডল অর্ডারের তেমন গুরুত্বপূর্ণ অবদান নেই, এটা চিন্তার বিষয়। মোহালিতেই কিন্তু বোঝা গিয়েছে, দেরিতে হলেও অস্ট্রেলিয়ার ঘুম ভাঙছে। ০-৩-এ পিছিয়ে থাকা একটা দলের মোটিভেশন বলে কিছু থাকে না ঠিকই। কিন্তু মোহালিতে শেষ দিকে ওরা যে ভাবে ভারতকে চাপে ফেলে দিয়েছিল, তাতে একটা অশনি সঙ্কেতের ইঙ্গিত রয়েছে বই কী। ওদের টপ অর্ডারের কোনও এক বা দু’জন একটু রান করুক। অস্ট্রেলিয়ার এই অদ্ভূত আত্মসমর্পণ আর দেখতে ভাল লাগছে না।
কিন্তু লড়াইয়ে ফিরবে কী করে ওরা? ক্লার্ক এই টেস্টে অনিশ্চিত, স্টার্কও খেলতে পারবে না। এই অবস্থায় ওদের লড়াইয়ে ফেরা বেশ কঠিন। আর এখানেই শেন ওয়াটসনের বড় পরীক্ষা। নেতৃত্বের দায়িত্ব পেলে নিজেকে প্রমাণ করার একটা তাগিদ অবশ্যই থাকবে ওর। জবাব দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে যখন, তখন তা কাজে লাগাক। |