চিলাপাতার জঙ্গল থেকে লাগোয়া লোকালয়ে ঢুকে পড়েছিল তারা। তারপর আশপাশের গাঁ-গঞ্জকে শিঙের ডগায় টানা ঘণ্টা সাতেক ত্রস্ত করে রাখল দুটি বাইসন বা গৌর। দুপুরে বন দফতরের কর্মীরা তাদের ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করে। তবে পূর্ণ বয়স্ক দুটি বাইসনের একটির সে ঘুম আর ভাঙেনি । বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্যটির অবস্থাও ভাল নয়।
ডুয়ার্সের বিভিন্ন জঙ্গল লাগোয়া গ্রামে বাইসনের হানা অবশ্য নতুন নয়। বন দফতর নথিই বলছে, এ বছরেই সাতটি এমন ঘটনার নজির রয়েছে। এবং তিনটি ক্ষেত্রে ঘুমপাড়ানি গুলিতে শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে বাইসনের। কেন? বিশেষজ্ঞদের জবাব: এক ঝলক দেখেই পশুটির ওজন, বয়স, লিঙ্গ নির্ধারণ করে ঘুমপাড়ানি গুলির ‘ডোজ’ নির্ধারণ করতে হয়। ওষুধের হেরফের হলেই মৃত্যু প্রায় অনিবার্য। এ ক্ষেত্রেও সম্ভবত ‘ডোজ’ বেশি হয়ে যাওয়ায় বাইসনটির মৃত্যু হয়েছে। |
বৃহস্পতিবার ভোরে কোচবিহারের মাথাভাঙা মহকুমার নিশিগঞ্জ এলাকায় সংলগ্ন চিলাপাতা অভয়ারণ্য থেকে ঢুকে পড়ে বাইসন দু’টি। তারপরে আঙ্গারকাটা, পারাডুবি ছুঁয়ে লাগোয়া গ্রামগুলিতে শুরু হয় তাদের তাণ্ডব। পাঁচটি গ্রামে এক মহিলা-সহ তিন গ্রামবাসীকে গুরুতর জখম করে তারা। আহতদের দু-জনকে কোচবিহার জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অবশেষে দুপুরে বক্সা ও জলদাপাড়ার জাতীয় উদ্যান থেকে বন দফতরের দু’টি ঘুমপাড়ানি দল আসে। গুলিতে কাবুও করা হয় তাদের। তারপর একটিকে কুঞ্জনগরের জঙ্গলে ও অন্যটিকে চিলাপাতা অভয়ারণ্যে ছেড়ে দেওয়া হয়।
তবে কুঞ্জনগরে ছেড়ে দেওয়া বাইসনটি কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যায়। উত্তরবঙ্গের বনপাল বিপিন সুদ বলেন, “ঘুমপাড়ানি গুলি ছুঁড়ে বাইসন দুটিকে কাবু করা হয়। কুঞ্জনগরে ছেড়ে দেওয়ার পরে একটি বাইসনের মৃত্যু হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।” |