কুকুরের ছাপে চিতাবাঘের আতঙ্ক
কুকুরের পায়ের ছাপকে ঘিরে চিতাবাঘের আতঙ্ক ছড়াল। একটি পশুপ্রেমী সংগঠনের তরফে প্রাথমিক পীরক্ষার পরে ওই পায়ের ছাপ চিতাবাঘের বলে দাবি করায় পরিস্থিতি এলাকার বাসিন্দারা শঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি শুরু করেন। বন দফতরের প্রশিক্ষিত কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাপগুলি পরীক্ষার পর তা কুকুরের বলে জানিয়ে দেওয়ায় বাসিন্দারা আশ্বস্ত হন। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির হায়দারপাড়া বাজার এলাকার দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় রোডে ঘটনাটি ঘটেছে। তবে ওই পশুপ্রেমী সংগঠনের ভূমিকা নিয়ে বন দফতরের অফিসারদের একাংশ তো বটেই, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, স্থানীয় কাউন্সিলরও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তাঁদের সকলেই জানান, প্রথমত পুরোদস্তুর প্রশিক্ষণ, অভিজ্ঞতা ছাড়া কারও ওইভাবে হুটহাট করে কোনটা বাঘ, কোনটা কুকুর বা বন বেড়াল তা বলাটা ঠিক নয়। সন্দেহ হলেও বন দফতরের প্রশিক্ষিত কর্মীরা না আসার আগে তা কী প্রাণী বলে দেওয়াটা ঠিক নয়। এতে সাধারণ বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। এ দিন তাই হয়েছে। গত ২৮ জানুয়ারি হাকিমপাড়ায় চিতাবাঘের হানার ঘটনার পর শহরের বাসিন্দাদের মন থেকে আতঙ্ক পুরোপুরি কাটেনি। দুটি এলাকার দূরত্ব বড় জোর ১ কিলোমিটার। তাতেই বাসিন্দারা শঙ্কিত হয়ে পড়েন।
স্থানীয় কংগ্রেস কাউন্সিলর তথা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র পারিষদ দেবশঙ্কর সাহা বলেন, “বন দফতরের কর্মীরা পরীক্ষার পর ছাপগুলি কুকুরের বলে জানিয়েছেন। কিন্তু একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের এক প্রতিনিধি যেভাবে পায়ের ছাপ চিতাবাঘের বলে দাবি করেছেন তা মানা যায় না। ঠিকঠাক না বুঝে শুনে ঘন বসতিপূর্ণ এলাকায় ওই ভাবে চিতাবাঘের আতঙ্ক ছড়ানো ঠিক নয়। বন দফতর ও প্রশাসনের বিষয়টি দেখা দরকার।”
বন দফতর সূত্রের খবর, এলাকায় বাসিন্দা অসিত দেব গত বুধবার সকালে বাড়ির বাগানে জল দিতে গিয়ে দুটি ছাপ দেখেন। তিনি পরিবার এবং কয়েকজন বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। তার পরে হায়দরাবাদে এক বিশেষজ্ঞের কাছে ওই ছাপ দুটির ছবি পাঠানো হয়। সেই সূত্র ধরেই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য অরূপ ঘোষ এদিন সকালে এলাকায় যান। তিনি গিয়ে স্কেল দিয়ে ছাপগুলি পরীক্ষা করেন। তার পরে ৮ সেন্টিমিটার বাই ১০ সেন্টিমিটার ছাপগুলি পূর্ণবয়স্ক মহিলা চিতাবাঘের বলে দাবি করেন। এমনকি, চিতাবাঘটি গর্ভবতী হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এলাকায় কিছুক্ষণের মধ্যে ছড়িয়ে আতঙ্ক পড়ে। ফ্ল্যাট এবং বড়বড় আবাসন সম্বলিত এলাকাটি মহিলা, শিশুরা বাড়ির ছাদ, ব্যালকনিতে ভিড় করতে থাকেন। ওই বাড়ির মালিক অসিতবাবু ও তাঁর প্রতিবেশী দুর্জয় পাল মজুমদার বলেন, “এলাকায় ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়ে যায়। বিশেষ করে মহিলা ও শিশুরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বনকর্মীরা এসে তা কুকুরের বলে জানিয়েছেন।” সুকনা ওয়াইল্ড লাইফ স্কোয়াডের রেঞ্জার কাঞ্চন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কাদায় যে কোনও প্রাণী বা মানুষে পায়ের ছাপ আকারে বড় দেখায়। এই ক্ষেত্রে বাগানের ভেজা মাটিতে কুকুরেরটাও তাই হয়েছে। আমাদের প্রশিক্ষিত কর্মীরা তা পরীক্ষা করে এসেছেন। ভয়ের কোনও কারণ নেই।”
নিজের দাবিতে অবশ্য অনড় ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধি অরূপবাবু। তাঁর দাবি, “আমার জঙ্গলের অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। বাঘ সুমারিতেও গিয়েছি। ওগুলি চিতাবাঘের ছাপ মনে হয়ে হয়েছে। আর বন দফতরের অফিসারের অনেক সময় দায়িত্ব, নিরাপত্তার বিষয়টি এড়ানোর জন্য আসল ঘটনা এড়িয়ে যান। এই ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.