মেয়ের জন্য অঙ্গনওয়াড়ি থেকে খিচুড়ি আনতে গিয়েছিলেন মা। ফিরে দেখেন মেঝেতে পড়ে দু’বছরের মেয়ের নিথর দেহ। নাকের কোণে রক্ত। পাশে দাঁড়িয়ে ব্যাগ গুছোচ্ছেন বাবা। হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে মা জানলেন, শ্বাসরোধ কিংবা বুকে আঘাত করে মেয়েকে খুন করা হয়েছে। ততক্ষণে বাড়ি থেকে চম্পট দিয়েছে বাবা। বৃহস্পতিবার হাওড়ার নাজিরগঞ্জের ঘটনা। পরে মেয়েকে খুনের অভিযোগে বাবাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
হাওড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সুখেন্দু হীরা জানান, জেরায় বাবা স্বীকার করে, মেয়ের বুকে ঘুষি মেরে খুন করেছে সে।
পুলিশ জানায়, মোল্লাপাড়ার বাসিন্দা শেখ ইমতিয়াজ স্ত্রী রিজিয়া বেগম ও মেয়ে মমতাকে নিয়ে ভাড়াবাড়িতে থাকে। মাঝেমধ্যে রাজমিস্ত্রীর জোগাড়ের কাজ করে ইমতিয়াজ। অভাবের সংসারে রোজ মেয়ের জন্য অঙ্গনওয়াড়ি থেকে খিচুড়ি আনতেন মা। ফিরে দেখেন খাটের নীচে পড়ে মেয়ে। রিজিয়ার অভিযোগ, মেয়ের ওই অবস্থা কেন, তা এড়িয়ে যায় ইমতিয়াজ।
মেয়েকে কোলে তুলে রিজিয়া দেখেন, তার গা নীল হয়ে গিয়েছে। মেয়েকে নিয়ে রিজিয়া ছুটে যান স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে। চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে পাঠানো হয় হাওড়া জেলা হাসপাতালে। সেখানেই তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। পুলিশ রিজিয়াকে থানায় নিয়ে এসে ঘটনাটি শোনে। স্বামীর বিরুদ্ধে মেয়েকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন রিজিয়া।
শেখ মইদুল নামে স্থানীয় এক বাসিন্দার অভিযোগ, রিজিয়া বেরোনোর পরে মমতা বাড়ির সামনে বসে কাঁদছিল। ইমতিয়াজ তাকে ‘চল খাবার দেব’ বলে ঘরে নিয়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। তার পরে আর সাড়াশব্দ মেলেনি।
পুলিশ জানায়, বিকেলে রিজিয়া যখন থানায় বসে, তখন তাঁর মোবাইলে ফোন করে ইমতিয়াজ। পুলিশের পরামর্শ মতো ইমতিয়াজের সঙ্গে দেখা করতে চান রিজিয়া। জানা যায়, মৌড়িগ্রামে একটি দোকানে বসে আছে সে। সেখানে থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। |