হাজারিবাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলায় এমএ-র দাবি, জোটবদ্ধ বাঙালিরা
স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য-র অন্তর্ভূক্তি নিয়ে কার্যত কানামাছি খেলা চলছে হাজারিবাগের বিনোবা ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, সরকারি অনুমোদন ছাড়া স্নাতকোত্তর স্তরে সেখানে বাংলা পড়ানো সম্ভব নয়। কর্তৃপক্ষের সেই যুক্তির বিরোধিতা শুরু করে সেখানকার বাঙালি শিক্ষকদের দাবি, সরকারি অনুমোদন ছাড়া পনেরোটি বিষয় যদি স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়ানো যায় তবে সেখানে বাংলা বাদ থাকবে কেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বাংলা পঠনপাঠনের দাবি জানিয়ে কর্তৃপক্ষের ওপরে নিয়মিতভাবে চাপ তৈরি করছে ঝাড়খণ্ড বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাঙালি শিক্ষকদের একাংশ জানান, অনার্স এবং সাবসিডিয়ারি মিলিয়ে ছ’শো একাশি জন ছাত্রছাত্রী এই বছরে পরীক্ষা দিয়েছেন। এক শিক্ষকের কথায়, “একাশি জন ছাত্রছাত্রী বাংলা অনার্স পরীক্ষা দিয়েছেন। আমরা সেই পরিসংখ্যান বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে পাঠিয়েছি। যাতে কেউ না বলতে পারেন যে বাংলায় লেখাপড়ার কোনও চাহিদা নেই।” বাংলায় স্নাতকোত্তর করতে চেয়ে তেতাল্লিশ জন ছাত্রছাত্রী কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন পত্র জমা দিয়েছেন ফেব্রুয়ারি মাসে।
উল্লেখ্য ২০০৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল ওই অধীনস্থ বারোটি কলেজে বাংলায় স্নাতক স্তরে লেখাপড়া করার অনুমোদন দেন। শিক্ষকরা জানান, তৎকালীন সহ-উপাচার্য সলিল রায়ের উদ্যোগে ২০০৬ সালে বিনোবা ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলায় এমএ পড়ানোর জন্য সেনেটের অনুমোদন মেলে। তিনি বর্তমানে কোলহান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। এখন অবশ্য তিনি এই বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
এতটা কাজ এগিয়ে যাওয়ার পরেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাংলায় স্নাতকোত্তর লেখাপড়া চালু করতে পারেননি সেখানে। কেন? উপাচার্য রবীন্দ্রনাথ ভগত বলেন, “এটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। এর জন্য সরকার এবং রাজ্যপালের অনুমোদন লাগবে। পরিকাঠামোর প্রয়োজন রয়েছে। আমরাও চাই বাংলা চালু করতে।” উপাচাযের্র এই যুক্তিই মানতে রাজি নন ঝাড়খণ্ডের বাঙালিরা। বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্যস্তরের সহ-সভাপতি নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা যুক্তি, “বিশ্ববিদ্যালয় যখন তৈরি হয়েছিল তখন ছ’টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে লেখাপড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। আজও সেই নিয়মই রয়েছে। তা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বর্তমানে একুশটি বিষয়ে এমএ পড়ানো হয়। ষোলটি অন্যান্য বিষয় যদি পড়ানো হতে পারে, তবে বাংলা পড়াতে অসুবিধা কোথায়?” তাঁর দাবি, এটা বাংলা শিক্ষার প্রসারকে আটকানোর ফিকির ছাড়া আর কিছু নয়।
ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলায় এমএ পড়ানো চালু করতে বিকল্প প্রস্তাবও কর্তৃপক্ষের কাছে রেখেছেন বাঙালি শিক্ষকরা। তাঁরা জানান, স্নাতক পর্যায়ে বাংলা পড়ানো হয় এমন কলেজে এমএ পড়ানো চালু হলে নতুন করে পরিকাঠামো তৈরির দরকার নেই। কলেজের বাংলার শিক্ষকরাই পড়াবেন। আর কলেজে তার জন্য পর্যাপ্ত বইও রয়েছে। তবে সেই প্রস্তাব শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মেনে নেবেন কিনা সেটাই এখন দেখার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.