চাকরির জাল নথি দিয়ে লোপাট ৭৫ হাজার টাকা
গ্রামেরই পরিচিত এক যুবককে কয়েক দফায় টাকা দিয়েও প্রতিশ্রুতি মতো মিলছিল না চাকরি। পুলিশের কাছে যাওয়ার হুমকি দিলে ঘাবড়ে যায় সেই যুবক। বুধবার সেই যুবক-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে মেয়েকে অপহরণ করার অভিযোগ দায়ের করলেন তাঁর মা। আর সেই অভিযোগ থেকেই বেরলো কেঁচো খুঁড়তে সাপ। প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার একটি জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়ল পুলিশের কাছে। অভিযুক্ত যুবক মাড়গ্রাম থানার প্রতাপপুর গ্রামের মইদুল ইসলাম রীতি মতো বীরভূম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ ও রামপুরহাট উত্তর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের জাল প্যাড বানিয়ে, সই নকল করে তারই গ্রামের ওজিফা বিবিকে প্রাথমিক স্কুলের চুক্তি শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেয় বলে অভিযোগ। জেলার পুলিশ সুপার মুরলীধর শর্মা বলেন, “ওই ঘটনায় অপহরণ ও জালিয়াতির মামলা শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত মইদুল ইসলাম, তার ভাই সাইদুল ইসলাম ও হিরা শেখ পলাতক।”
ওজিফা বিবির মা আনজারা বিবির অভিযোগ, “মেয়েকে প্রতাপপুর ২ নম্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি দেবে বলে মইদুল আমাদের থেকে অগ্রিম ৭৫ হাজার টাকা নিয়েছিল। কিন্তু অনেক দিন কেটে গেলেও মেয়ে কাজে যোগ দিতে পারছিল না। তাই এ নিয়ে আমরা পুলিশের কাছে যাব বলেছিলাম। তারপরই মইদুলরা আমার মেয়েকে অপহরণ করে।” ওজিফা বিবির স্বামী ইকবাল হোসেন জানিয়েছেন, গত রবিবার বিকালে অসুস্থ ভাগ্নিকে দেখার জন্য স্ত্রীকে নিয়ে রামপুরহাটের একটি নাসিংহোমে যাচ্ছিলেন। তাঁর দাবি, “বাসস্ট্যান্ডে নামার পর মইদুলের ভাই সাইদুলের দেখা হয়। স্ত্রী তখন সইদুলের সঙ্গে কথা বলতে যায়। আমি চলে যাই ভাগ্নিকে দেখতে। ফিরে এসে আর কাউকে দেখতে পাইনি। মইদুলরাই আমার স্ত্রীকে অপহরণ করেছে।” ঘটনার পরে রামপুরহাট থানায় স্ত্রীর নামে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করলেও এ দিন ওজিফা বিবির মা তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অপহরণ ও জালিয়াতির অভিযোগ দায়ের করেন।
এ দিন বিকালে প্রতাপপুর গ্রামে অভিযুক্তদের বাড়িতে গিয়ে তাদের দেখা মেলেনি। মইদুল ও সাইদুলের বাবা গোলাম রসুল বলেন, “দুই ছেলে গত চারদিন থেকে বাড়ি ফেরেনি। পুলিশ এসেছিল। দশ দিনের মধ্যে ওজিফার সন্ধান দিতে বলেছে।” ছেলেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া, “ছেলেরা কোথায় কী করে তা আমার জানা নেই। তবে মাঝে মধ্যেই টাকা পাব বলে অনেকেই বাড়িতে চলে আসেন। তাঁদের ছেলের সঙ্গেই কথা বলতে বলি।” এ দিকে, পুলিশ সূত্রের খবর, মোটর বাইক চুরির কারবারে যুক্ত থাকার অভিযোগ মইদুল আগেই মাস দু’য়েক জেল খেটেছে।
প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার খবর শুনে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান রাজা ঘোষের প্রতিক্রিয়া, “পুরোটাই জালিয়াতি। চুক্তির ভিত্তিতে প্রাথমিকে কোনও শিক্ষক নিয়োগ হয় না। সরকারি দফতরের প্যাড, সিল, সই নকল করে মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে প্রতারণা করা হয়েছে।” তাঁর সতর্কতা, “প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে দালাল বা অন্য কাউকে টাকা দিলে নিজের দায়িত্বে দিন। পুরো বিষয়টাই আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনব।” অন্য দিকে, রামপুরহাট উত্তর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক কিশোর মণ্ডলের দাবি, “গত দেড় বছর ধরে এলাকায় এ ধরনের একটি চক্র কাজ করছে। বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানানো হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.