সামনেই আরও একটি নির্বাচন। সেই নির্বাচনে কোনও না কোনও রাজনৈতিক দল জয়ী হবে। তবে সব সমস্যা মিটবে এমনটা আশা করেন না ভেড়াডাঙাল ও ছামুডাঙালের বাসিন্দারা। দুবরাজপুরের পারুলিয়া পঞ্চায়েত এলাকার এই দু’টি আদিবাসী গ্রামের বাসিন্দাদের কথায়, দুই গ্রামের দু’দিকে রয়েছে দু’টি কাঁদর। বর্ষায় সেখান দিয়ে পারাপার করতে তাঁদের সমস্যা হয়। এ ছাড়াও, পানীয় জলের সমস্যা তো রয়েছে, তার টানা থাকলেও বিদ্যুৎ আসেনি। আর বিদ্যুৎ সংযোগ হলেও মাত্র কয়েক ঘর বিপিএল তালিকাভুক্ত আদিবাসী পরিবারেই সেই সংযোগ দেওয়া হবে রাজীব গাঁধী বিদ্যুদয়ন প্রকল্পে। ফলে সমস্যা যে জিইয়ে থাকবে ধরেই নিচ্ছেন বাসিন্দারা।
পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পারুলিয়ার বরুল সংসদের মধ্যে দু’টি গ্রাম পড়লেও মূল সংসদের থেকে বিচ্ছিন্ন। ভেড়াডাঙাল গ্রামে বাস ৩৫টি আদিবাসী পরিবারের এবং ছামুডাঙালে ১০টি পরিবার রয়েছে। বরুল থেকে ছামুডাঙালে যেতে পড়ে একটি কাঁদর। আর ভেড়াডাঙাল থেকে বরুল আসার সমস্যা না থকলেও গ্রামটির সবচেয়ে কাছের শহর সিউড়ি যাওয়ার সময় পড়ে চন্দ্রভাগা নদীর একটি শাখা।
|
নলকূপ আছে, জল নেই। —নিজস্ব চিত্র। |
লালবাহাদুর বাস্কে, সুখলাল মাড্ডি, ঠাকরুণ মুর্মু, সোমলাল হাঁসদার ক্ষোভ, “সমস্যার কথা জানানো হয়েছিল পঞ্চায়েতে। কাজ কিছু হয়নি। গ্রীষ্ম কালের আগেই আশপাশের পুকুর সব শুকিয়ে যাওয়ায় জলের জন্য গ্রামের মানুষের ভরসা দু’টি নলকূপ। ছামুডাঙালের অবস্থা আরও খারাপ। কারণ, গাছের পাতা পড়ে নোংরা হয়ে যাওয়া একটি সরকারি কুয়োর জলই ব্যবহার করেন কয়েক ঘর বাসিন্দা।” জীতেন সরেন, বড় বাস্কেদের আভিযোগ, “বছর খানেক আগে একটি নলকূপ করে দিয়েছিল পঞ্চায়েত। এক দিন পর থেকেই সেটা বিকল হয়ে রয়েছে। কাজ হয়নি পঞ্চায়েতে জানিয়েও। আর বর্ষায় কাঁদরে জল জমলেই গ্রাম থেকে বাইরে যাওয়ার পথ বন্ধ।”
বর্ষায় কাঁদর পারাপারে ওই দুই গ্রামের যে সমস্যা হয়, সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন পারুলিয়া পঞ্চায়তের প্রধান রবিলাল অঙ্কুর। তিনি বলেন, “এত বড় প্রকল্প পঞ্চায়েতের পক্ষ করানো সম্ভব নয়। একবার পঞ্চায়েত সমিতিতে জানানো হয়েছিল। তার পরে কী হয়েছে বলতে পারব না।” তাঁর আশ্বাস, “ছামুডাঙাল গ্রামের নলকূপটি অবিলম্বে সারিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।” দুবরাজপুরের বিডিও কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নদী বা কাঁদরের উপর সেতু তৈরি অবশ্যই বড় প্রকল্প। তবে এ ব্যাপারে কোনও প্রস্তাব আমরা পাইনি। প্রস্তাব পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
সেতু তৈরি বা পানীয় জলের সু-ব্যবস্থা করা নিয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের মধ্যে চাপানউতোর চললেও আশার কথা একটাই, এ বার থেকে মোবাইল ফোন চার্জ দিতে আর পাশের গ্রামে যেতে হবে না। এমনটাই জানালেন দুই গ্রামের বাসিন্দারা। |