সকালে ওই দুর্ঘটনার খবর পৌঁছতে বাড়ির লোকজন ও আত্মীয়রা কান্নায় ভেঙে পড়েন। মৃত্যুর খবর পেয়ে অশোক ও তার স্ত্রী হয়ে সদ্য কাঁঠালগুড়িতে পা রাখা লক্ষ্মী দেবী জ্ঞান হারাচ্ছেন। বিয়ের সব আনন্দ মাটি হয়ে গিয়েছে। অশোকের মা বুধাইন দেবী বলেন, “বুধবার বউভাতের দিন ঠিক হয়। কয়েক দিন সকলে কত আনন্দ করেছিল। এত জনের মৃত্যুর খবরে ছেলে-পুত্রবধূ ঘন ঘন জ্ঞান হারাচ্ছে। দুর্ঘটনার বিষয়টি মানতে পারছি না।”
অশোকের পড়শিরা জানাচ্ছেন, বাগান চালুর পর ধুমধাম করে বিয়ে করবে বলে অশোক টাকা জমাতে শুরু করেন। কুর্তি বাগানের লক্ষ্মীর সঙ্গে বিয়ে হওয়ার দু তিন দিন আগে থেকে অশোকের বাড়ির সামনে ধামসা মাদল বাজিয়ে চলছিল নাচ গান বাড়ি সাজা। বরযাত্রীর যাতায়াতে জন্য ভাড়া করা হয় ৬টি ছোট গাড়ি। তার মধ্যে বাগানের গাড়ি চালক ধনীরাম যে গাড়ি চালায় সেটিও ভাড়া করা হয়। দুর্ঘটনার পর ধনীরামের ধড় থেকে গলা প্রায় আলাদা হয়ে যায়।
বছর তিনেক আগে ২১ বছরের বিনোদ ওঁরাও ভিন রাজ্যে দর্জির কাজ করে ফি মাসে ভাল উপার্জন করতেন। তাঁর বাবা বোলো চা শ্রমিক। তাঁর দুই বোন এক ভাই স্কুল পড়ুয়া। প্রতি মাসে ভিন রাজ্য থেকে ছেলে যে টাকা দিত, তাতে সংসার চলত। আগের মাসে বিনোদ ফেরেন। প্রতিবেশীর বিয়ে থেকে ফেরার সময় দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। বোলো বলেন, “৩ বছর ধরে সুখের মুখ দেখেছিলাম। আগের গাড়িতে ফিরলে ও মরত না।” ওই চা বাগানেরই বাসিন্দা এক যুবক পুকার থাপা বলেন, “আমি আগের গাড়িতে ফিরে আসি। বাকিদের কাঁঠালগুড়ি চা বাগানে ফেরানোর জন্য ফোন আসার পরে ধনীরাম তাদের আনতে যায়।” |