বানারহাটে আট বরযাত্রীর মৃত্যু
তীব্র গতিতে ছুটতে থাকা একটি ছোট গাড়ি ও বড় বাসের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষে ৮ জনের মৃতু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৬টা নাগাদ ডুয়ার্সের বানারহাট থানার লক্ষ্মীপাড়া এলাকায় ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাস্থলে ছোট গাড়ির চালক-সহ ৭ জনের মৃত্যু হয়। গুরুতর জখম অপর এক যুবককে বানারহাট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই ছোট গাড়ির দুই জখম যাত্রীকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এক জন সামান্য চোট পান। তাকে বানারহাট হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। ছোট গাড়ির যাত্রীরা বানারহাটের ভুটান সীমান্তের কাঁঠালগুড়ি বাগানের বাসিন্দা। তাঁরা নাগরাকাটা এলাকার কুর্তি চা বাগানে বরযাত্রী হিসেবে যান। বিয়ের অনুষ্ঠান সেরে কাঁঠালগুড়িতে ফিরছিলেন। নিজেদের বাগান থেকে ১০ কিমি আগে উল্টো দিক থেকে আসা শিলং-শিলিগুড়ি রুটের একটি বাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে।
বাসের ধাক্কায় দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া যাড়ি। মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, দুটি গাড়ি অস্বাভাবিক গতিতে ছুটছিল। কোনও কারণে নিয়ন্ত্রণ হারানোয় গাড়ি দুটির সংঘর্ষ হয়। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েক জনের সন্দেহ, ওই সময়ে কাঠ বোঝাই একটি ভ্যান রিকশা সামনে আসায় ছোট গাড়িটি সেটিকে পাশ কাটাতে গিয়ে বড় বাসের সামনে পড়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ধাক্কা লাগার পরে ছোট গাড়িটি দুমড়ে যায়। গাড়িটির ছাদ খুলে বাসের সঙ্গে আটকে পড়ে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। ছোট গাড়ির ৭ যাত্রীর। বাসের দুটি টায়ার খুলে যায়। বাস যাত্রী কয়েক জন অল্প বিস্তর চোট পান। তবে পুলিশ পৌঁছনোর আগেই বাস চালক গা ঢাকা দেন। যাত্রীরা যে যার মত গন্তব্যে চলে যান। জলপাইগুড়ির ডি এস পি দমন কর্মকার বলেন, “চালককে খোঁজা হচ্ছে। দুটি গাড়ির গতি বেশি ছিল বলে প্রাথমিক ভাবে আমাদের মনে হয়।”
মৃতদের বয়স ১৮ থেকে ৩১ বছর। চালক-সহ মৃতরা কাঁঠালগুড়ি বাগানের বাসিন্দা। তাঁরা হলেন, সুরেশ ওরাওঁ (২৩), শঙ্কর ওরাওঁ (২৪), সনলাল ওরাওঁ (২২), রোশন ওরাওঁ (১৮), চলিত রাম ওরাওঁ (৩০), ধনীরাম ওরাওঁ (২৯), পুনম গোয়ালা (৩১) এবং বিনোদ ওঁরাও (২১)।
বাগান সূত্রের খবর, কাঁঠালগুড়ি চা বাগানের শ্রমিক অশোক গোয়ালার বিয়ে উপলক্ষ্যে বাগানে ৭০ জন কুর্তি বাগানে বরযাত্রী গিয়েছিলেন। শেষ হওয়ার পরে গভীর রাতে বর-কনে কাঁঠালগুড়িতে ফেরেন। বরযাত্রীরা রাতের মধ্যে বাড়ি ফেরেন। ১০ জন যুবক কুর্তি বাগানে রয়ে যান। তাঁদের আনতে কাঁঠালগুড়ি বাগানের গাড়ি চালক ধনীরাম ওঁরাও গাড়ি নিয়ে ভোর ৩টে নাগাদ কুর্তি বাগানে রওনা হন। সেখান থেকে ফেরার পথে ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার পরে গোটা কাঁঠালগুড়ি চা বাগান জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত ছোট গাড়ির এক যাত্রী অমিত কুজুরের পিঠে ও মাথায় সামান্য আঘাত লেগেছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে বাড়ি নিয়ে যান পরিবারের লোকজনেরা। অমিত এ দিন বলেন, “আমি পেছনে বসে ছিলাম। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল তা বুঝতে পারছি না। বিকট একটা শব্দ শোনার পর আমি জ্ঞান হারাই।” বাগানের বাসিন্দা মাধো ওরাওঁ এ ই প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা সকলে বিয়েবাড়িতে হইচই করলাম। আমরা সকলে রাতে বাড়ি ফিরে এসে ঘুমিয়েছিলাম। ভোরে ঘুম থেকে উঠে মৃত্যুর কথা শুনি। ওই দুর্ঘটনায় আমার এক ভাইপোও মারা গিয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.