প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, দুটি গাড়ি অস্বাভাবিক গতিতে ছুটছিল। কোনও কারণে নিয়ন্ত্রণ হারানোয় গাড়ি দুটির সংঘর্ষ হয়। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েক জনের সন্দেহ, ওই সময়ে কাঠ বোঝাই একটি ভ্যান রিকশা সামনে আসায় ছোট গাড়িটি সেটিকে পাশ কাটাতে গিয়ে বড় বাসের সামনে পড়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ধাক্কা লাগার পরে ছোট গাড়িটি দুমড়ে যায়। গাড়িটির ছাদ খুলে বাসের সঙ্গে আটকে পড়ে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। ছোট গাড়ির ৭ যাত্রীর। বাসের দুটি টায়ার খুলে যায়। বাস যাত্রী কয়েক জন অল্প বিস্তর চোট পান। তবে পুলিশ পৌঁছনোর আগেই বাস চালক গা ঢাকা দেন। যাত্রীরা যে যার মত গন্তব্যে চলে যান। জলপাইগুড়ির ডি এস পি দমন কর্মকার বলেন, “চালককে খোঁজা হচ্ছে। দুটি গাড়ির গতি বেশি ছিল বলে প্রাথমিক ভাবে আমাদের মনে হয়।”
মৃতদের বয়স ১৮ থেকে ৩১ বছর। চালক-সহ মৃতরা কাঁঠালগুড়ি বাগানের বাসিন্দা। তাঁরা হলেন, সুরেশ ওরাওঁ (২৩), শঙ্কর ওরাওঁ (২৪), সনলাল ওরাওঁ (২২), রোশন ওরাওঁ (১৮), চলিত রাম ওরাওঁ (৩০), ধনীরাম ওরাওঁ (২৯), পুনম গোয়ালা (৩১) এবং বিনোদ ওঁরাও (২১)।
বাগান সূত্রের খবর, কাঁঠালগুড়ি চা বাগানের শ্রমিক অশোক গোয়ালার বিয়ে উপলক্ষ্যে বাগানে ৭০ জন কুর্তি বাগানে বরযাত্রী গিয়েছিলেন। শেষ হওয়ার পরে গভীর রাতে বর-কনে কাঁঠালগুড়িতে ফেরেন। বরযাত্রীরা রাতের মধ্যে বাড়ি ফেরেন। ১০ জন যুবক কুর্তি বাগানে রয়ে যান। তাঁদের আনতে কাঁঠালগুড়ি বাগানের গাড়ি চালক ধনীরাম ওঁরাও গাড়ি নিয়ে ভোর ৩টে নাগাদ কুর্তি বাগানে রওনা হন। সেখান থেকে ফেরার পথে ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার পরে গোটা কাঁঠালগুড়ি চা বাগান জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত ছোট গাড়ির এক যাত্রী অমিত কুজুরের পিঠে ও মাথায় সামান্য আঘাত লেগেছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে বাড়ি নিয়ে যান পরিবারের লোকজনেরা। অমিত এ দিন বলেন, “আমি পেছনে বসে ছিলাম। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল তা বুঝতে পারছি না। বিকট একটা শব্দ শোনার পর আমি জ্ঞান হারাই।” বাগানের বাসিন্দা মাধো ওরাওঁ এ ই প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা সকলে বিয়েবাড়িতে হইচই করলাম। আমরা সকলে রাতে বাড়ি ফিরে এসে ঘুমিয়েছিলাম। ভোরে ঘুম থেকে উঠে মৃত্যুর কথা শুনি। ওই দুর্ঘটনায় আমার এক ভাইপোও মারা গিয়েছে।” |