শরিকি টানাপোড়েন পঞ্চায়েতে আসন বণ্টন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা বামফ্রন্টে। পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে জেলার বেশিরভাগ ব্লকেই বাম শরিকদের মধ্যে বোঝাপড়া সম্ভব হয়েছে বলে জেলা বামফ্রন্ট সূত্রে দাবি করা হলেও অস্বস্তি তৈরি হয়েছে জেলা পরিষদের আসন রফা নিয়ে। জেলা পরিষদে আসন সমঝোতা না হলে গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতেও বামফ্রন্টগতভাবে লড়াই করা সম্ভব নয় তা শরিকদলগুলি ফ্রন্ট বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছে। পূর্ব নির্ধারিত ১৭ মার্চের মধ্যে চূড়ান্ত রফা সম্ভব হয়নি। রফাসূত্র বার করতে আগামী ২০ মার্চ ফের বৈঠকে বসছে জলপাইগুড়ি জেলা বামফ্রন্ট।
২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জলপাইগুড়িতে জেলা পরিষদের আসন ছিল ৩৪টি। এবারে আসন বেড়ে হয়েছে ৩৭। জেলা বামফ্রন্টের বৈঠকে শরিক আরএসপি জেলা পরিষদের ১৫টি আসন দাবি করেছে। সিপিএমের অন্দরের খবর আরএসপিকে ১৫টি আসন ছেড়ে দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, গতবারে ৩৪টি আসনের মধ্যে সিপিএম আরএসপির জন্য ৩টি এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের জন্য ১টি আসন ছেড়ে বাকি ৩০টি আসনে প্রার্থী দেয়। জোট ভেস্তে গেলেও সিপিএম সেই আসনগুলিতে প্রার্থী দেয়নি। ৩০টি আসনে লড়াই করে সিপিএম জেতে ২৮টি আসনে।
সিপিএমের যুক্তি, আরএসপিকে ১০টি আসন ছাড়লেও দলের গতবারের জেতা আসন ছেড়ে দিতে হবে। সংগঠনের নিরিখে যা অসম্ভব বলে সিপিএমের একটি সূত্রে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আরএসপি ১৫টি আসনের প্রস্তাব দিয়েছে। আলোচনা হবে।”
গতবার ২২টি আসনে আরএসপি প্রার্থী দিয়ে ৩টিতে জিতেছিল এবং ফরওয়ার্ড ব্লক ১টি আসেন জেতে। আরএসপি-র জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য প্রকাশ রায় বলেন, “গত বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএম ৯টি আসন ছাড়তে চেয়েছিল, আমরা রাজি হইনি। হিসেব করে দেখেছি অন্তত ১৫টি আসনে জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।”
ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক প্রবাল রাহা বলেন, “আমরা ৩টি আসনের কথা বলেছি। গতবার কে কোথায় জিতেছে সেই অঙ্ক তো এবার পরিবর্তিত পরিস্থিতে পাল্টে গিয়েছে।”
প্রকাশবাবু বা প্রবালবাবুরা স্পষ্ট করে দিয়েছেন জেলা পরিষদে সমঝোতা না হলে গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতিতেও আসন রফা সম্ভব নয়। প্রকাশবাবুর কথায়, “এবার বামফ্রন্টগত ভাবে না লড়লে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ ধরে রাখা সম্ভব নয়, এটা সকলকেই মাথায় রাখতে হবে।” উল্লেখ্য। ১৯৭৭ সাল থেকে জলপাইগুড়িতে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বামফ্রন্টের শরিকদের মধ্যে আসন সমঝোতা হয়নি। |