কাজ হারিয়ে কারখানার সামনে অবস্থান শুরু করেছেন ২০ জন অস্থায়ী শ্রমিক। তিন দিন ধরে চলা শ্রমিক অসন্তোষের জেরে কার্যত বন্ধ রয়েছে পাড়া থানার দুবড়ার কাছের একটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানা। কারখানার কমার্সিয়াল ম্যানেজার মুকেশ শর্মার দাবি, ২০ জন অস্থায়ী শ্রমিক কারখানার মধ্যে অন্য কর্মীদের ঢুকতে বাধা দেওয়ায় কারখানা কার্যত বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় ও কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় মহুদা গ্রামের বাসিন্দা ওই ২০ জন শ্রমিক ২০০২ সাল থেকে কারখানায় পণ্য খালাসের কাজ করতেন। তাঁদের অভিযোগ, ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে কারখানা কর্তৃপক্ষ তাঁদের ছাঁটাই করেছে। শ্রমিক ঈশ্বর মাঝি, সুখলাল বেসরাদের দাবি, “আমাদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষ কাজ সংক্রান্ত কোনও চুক্তি করেনি। কিন্তু প্রতি মাসে আড়াই হাজার টাকা মজুরি দেওয়া হত। তবে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ গত দু’মাস ধরে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রেখেছে। কিন্তু অন্য শ্রমিক-সহ কর্মীদের মজুরি ও বেতন দিচ্ছেন।” কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কাঁচামালের অভাব ও আন্তর্জাতিক বাজারে ইস্পাতের চাহিদা কমে যাওয়ায় গত ২-৩ মাস ধরে উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে কাঁচামাল এলে তাঁদের মৌখিকভাবে ডেকে পাঠিয়ে কাজ দেওয়া হত। কারখানার কমার্সিয়াল ম্যানেজার মুকেশ শর্মার দাবি, “উৎপাদন বন্ধ থাকলেও গত কয়েক মাস আমরা মানবিকতার খাতিরে ওই শ্রমিকদের মাসিক আড়াই হাজার টাকা করে দিতাম। কিন্তু বর্তমানে কারখানার অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাওয়ায় ওই টাকা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলেই শ্রমিকদের আপাতত কাজ নেই বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।” মুকেশবাবুর পাল্টা অভিযোগ, “প্রাথমিক আলোচনা করে জানানো হয়েছিল, কারখানার অবস্থা স্বাভাবিক হলে তাঁদের কাজ দেওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক চিন্তাভাবনা করা হবে। কিন্তু ওই শ্রমিকেরা কোনও কথাই শুনতে রাজি নন।” রঘুনাথপুরের দায়িত্বে থাকা সহকারী শ্রম মহাধ্যক্ষ সবুজকুমার ঢালি বলেন, “পাড়ার স্পঞ্জ আয়রন কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিক অসন্তোষের বিষয়ে আমাদের জানিয়েছিল। আমরা শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম। সমস্যা না মিটলে দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসবে শ্রম দফতর।” |