রাজনৈতিক কারণে ‘ঘরছাড়া’দের ঘিরে বিতর্ক দানা বাঁধছে উত্তর ২৪ পরগনায়।
রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল পর্যবেক্ষক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দাবি করেছিলেন, জেলায় এক জনও বাম কর্মী ঘরছাড়া নেই, থাকলে তিনি পদত্যাগ করবেন। সেই বক্তব্যকেই কার্যত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সোমবার উত্তর ২৪ পরগনায় ঘরছাড়া বাম কর্মীদের তালিকা প্রকাশ করল জেলা বামফ্রন্ট। ঘরছাড়াদের ফেরানোর দাবিতে একগুচ্ছ কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়েছে। যার মধ্যে শাসন এলাকায় ঘরছাড়াদের নিয়ে মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে। জ্যোতিপ্রিয়বাবু এ দিন বলেন, “ওরা (বামফ্রন্ট) যদি জোর করে মজিদকে (শাসনের দোর্দন্ডপ্রতাপ সিপিএম নেতা মজিদ মাস্টার) শাসনে ঢোকাতে চায়, তা হলে আমরা ওঁর কেশাগ্রও স্পর্শ করব না। কিন্তু যাঁরা এত দিন সিপিএমের হাতে অত্যাচারিত ছিলেন, তাঁরাই আঁশবটি নিয়ে আক্রমণ করবেন।”
জেলা বামফ্রন্টের তরফে এ দিন যে ১৪২১ জন ঘরছাড়ার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে মজিদের নাম নেই। সিপিএম নেতাদের দাবি, মজিদ এখন ব্যক্তিগত কারণে শাসনে যাচ্ছেন না। প্রয়োজন হলে যাবেন।
সোমবার ঘরছাড়াদের ফেরানোর দাবিতে জেলা বামফ্রন্টের তরফে বারাসতে জেলাশাসকের দফতরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। স্মারকলিপিও দেওয়া হয় জেলাশাসককে। পরে বারাসতে সিপিএমের জেলা পার্টি অফিসে সাংবাদিক সম্মেলনে ঘরছাড়াদের তালিকা পেশ করা হয়। দলের নেতা অমিতাভ নন্দী ও তড়িৎবরণ তোপদার দাবি করেন, ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে জেলায় ১৮ জন বাম কর্মী খুন হয়েছেন। তড়িৎবাবু বলেন, “জ্যোতিপ্রিয়বাবু এক জন ঘরছাড়ার নাম বলতে পারলে পদত্যাগ করবেন বলেছিলেন। পদত্যাগ করার দরকার নেই। তবে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বসলেই ঘরছাড়াদের তালিকা দেখতে পাবেন।” জ্যোতিপ্রিয়বাবুর পাল্টা বক্তব্য, সিপিএম নেতারা যাদের হয়ে সওয়াল করছেন, তাঁরা মজিদ মাস্টার, হাতকাটা দিলীপ, বুল্টনদের মতো সমাজবিরোধী। সাধারণ বামকর্মী নয়।
বাম নেতারা এ দিন জানিয়েছেন, ঘরছাড়াদের ফেরানোর দাবিতে ২৪ মার্চ রাজারহাটের নিউটাউনে মিছিল করা হবে। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারকে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। একই দাবিতে ২৯ মার্চ হাড়োয়ার শালিপুরে সমাবেশ হবে। ৩১ মার্চ বেলিয়াঘাটা থেকে খড়িবাড়ি হয়ে ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরানোর দাবি নিয়ে একটি মিছিল ঢুকবে শাসনে।
সব মিলিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ফের অশান্তির মেঘ দানা বাঁধছে শাসনে। |