বিপন্ন শিক্ষার অধিকার
৯২টি স্কুলে সম্বল এক জনই শিক্ষক
শিক্ষকের সংখ্যা কম নয়। প্রাথমিক স্কুলগুলির জন্য রয়েছেন পর্যাপ্ত শিক্ষক। তবু পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ৯২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে কেবল একজন শিক্ষকের ভরসায়। অথচ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ৪ হাজার ৬৩২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য শিক্ষক রয়েছেন ১৪,৩৪৯। ছাত্র সংখ্যা চার লক্ষের মতো। অর্থাৎ আইন-নির্দিষ্ট ৩০:১ অনুপাতের কাছাকাছিই রয়েছে জেলায় ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত।
কিন্তু, যে সব স্কুলের সঙ্গে পাকা রাস্তার যোগ নেই, গ্রামের ভেতরে সেই স্কুলগুলোতে শিক্ষকের সংখ্যা কম। মূলত শিক্ষক বণ্টনে এই অসামঞ্জস্যের জন্যই মেদিনীপুর শহরের অলিগঞ্জ কসাইপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৪ জন ছাত্রের জন্য চারজন শিক্ষক, ঘাটালের গোয়ালপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাত্র নয় জন ছাত্রের জন্য দু’জন শিক্ষক রয়েছেন। একই ভাবে ঘাটাল শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কৃতার্থময়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়েও ৩ জন শিক্ষক আছেন, যেখানে ছাত্র সংখ্যা ৬০।
জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে খবর, এর প্রধান কারণ স্বজনপোষণ। এ জন্য কখনই নিয়োগ প্রক্রিয়া বা বদলি নীতি সুষ্ঠ ভাবে হয় না বলে অভিযোগ। স্বজনপোষণের জেরে, শহরের স্কুলগুলিতে ছাত্রের তুলনায় আছেন অতিরিক্ত শিক্ষক। আর প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলে ছাত্র থাকলেও আছেন প্রয়োজনের চেয়ে কম শিক্ষক।
একাই কুম্ভ। ঘাটালের কোন্নগর গোয়ালপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান স্বপন মুর্মুও স্বীকার করেন যে, সুষ্ঠ বদলি নীতির অভাবেই এই সমস্যা। তাঁর কথায়, “দীর্ঘ দিন ধরে নিয়োগ ও বদলি প্রক্রিয়াতে স্বচ্ছ নীতি বজার রাখা হয়নি। তাই কোনও স্কুলে একজন শিক্ষক, কোথাও প্রয়োজনের অতিরিক্ত শিক্ষক থেকে গিয়েছেন।” তাঁর দাবি, “চলতি মাসেই আমরা বদলির মাধ্যমে ছাত্র শিক্ষকের অনুপাত ঠিক করে দেব।”
উচ্চ প্রাথমিকে অবশ্য রয়ে গিয়েছে শিক্ষকের ঘাটতি। ছাত্র-শিক্ষকের আনুপাতিক হার ঠিক করতে এখনই আরও বেশ কিছু শিক্ষক প্রয়োজন। শিক্ষার অধিকার আইনের আওতায় প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত আসছে। জেলায় এমন স্কুলের সংখ্যা ১০৪৩টি। উচ্চ প্রাথমিকে ছাত্র শিক্ষকের আনুপাতিক হার ঠিক করতে আরও ৩৯৩১ জন শিক্ষক প্রয়োজন। পাশাপাশি, ২০৫টি স্কুলে প্রধান শিক্ষকের পদ খালি। সেখানে ভরসা টিচার-ইন-চার্জ। উচ্চ প্রাথমিকে অঙ্কন, শারীর শিক্ষার মতো বিভাগেও শিক্ষক প্রয়োজন। এই শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া অথৈ জলে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শিক্ষক কী ভাবে নিয়োগ হবে, তা ঠিক করবে রাজ্য সরকার। তা নিয়ে জেলাতে কোনও নির্দেশিকা আসেনি। ফলে মার্চ মাসের মধ্যে আইনের নির্দেশ মেনে যথাযথ সংখ্যায় শিক্ষক নিয়োগ করা যে বাস্তবে অসম্ভব, তা মানছেন প্রশাসনের একাংশই।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.