মিলছে না ব্যাঙ্কের পরিষেবা, থমকে প্রকল্প রূপায়ণ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
নানা পরিকাঠামোগত সমস্যায় জেরবার আরামবাগের মলয়পুরের পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ ব্যাঙ্কের শাখা। এই অবস্থায় মলয়পুর-১ ও ২ পঞ্চায়েত এলাকায় ওই ব্যাঙ্কের মাধ্যমে সরকারি প্রকল্প রূপায়ণ করতে গিয়ে নাজেহাল হয়ে পড়ছেন প্রশাসনের কর্তারা। বেশ কিছু প্রকল্পের রূপায়ণ চার মাস ধরে থমকে গিয়েছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে হুগলির জেলাশাসক মনমীত নন্দার দ্বারস্থ হয়েছেন আরামবাগের বিডিও প্রণব সাঙ্গুই।
বিডিও বলেন, “গত ২০ ফেব্রুয়ারি আমি চিঠি পাঠিয়ে সরকারি প্রকল্পগুলির সুষ্ঠু রূপায়ণের জন্য ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতার অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনও সাড়া মেলেনি।” পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ ব্যাঙ্কের আঞ্চলিক ম্যানেজার তাপসকুমার সেন বলেন, “আমাদের অভ্যন্তরীণ কিছু সমস্যা রয়েছে। ব্যাঙ্কে কাজের চাপ বেশি। কিন্তু সেই তুলনায় কর্মী বা পরিকাঠামো নেই। মলয়পুর শাখার সমস্যা শীঘ্রই মিটবে। গ্রাহক পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চলছে।”
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মূল সমস্যা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে না পারা। এ জন্য চার মাস ধরে তফসিলি জাতি-উপজাতিভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের বই কেনার জন্য প্রাপ্ত সরকারি টাকা তাদের হাতে তুলে দেওয়া যাচ্ছে না। একই অবস্থা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিরও। সর্বোপরি ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের শ্রমিকদের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পঞ্চায়েত থেকে ব্যাঙ্কে পাঠিয়ে দেওয়ার দেড়-দু’মাস পরে তাঁরা মজুরি হাতে পাচ্ছেন। থমকে গিয়েছে ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পের কাজ।
ওই ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস চারেক আগে সেখানে সাটার কেটে চুরি হয়েছিল। তার পরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ম্যানেজার ছুটি নিয়ে নেন দীর্ঘদিনের জন্য। তখন ওই ব্যাঙ্কের বিভিন্ন শাখা থেকে দু’এক দিনের জন্য অভিজ্ঞ কর্মীদের ম্যানেজারের দায়িত্ব দিয়ে এনে কাজ চালানো হচ্ছিল। দিন দুয়েক আগে সেখানে স্থায়ী ম্যানেজার নিয়োগ করা হয়েছে। কর্মী রয়েছেন চার জন। তাঁরা জানান, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পেই প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিকের অ্যাকাউন্ট আছে। এ ছাড়াও, দু’টি পঞ্চায়েত এলাকার অন্য প্রকল্পের উপভোক্তাদের কয়েক হাজার অ্যাকাউন্ট আছে। সে সবই সামলানো যাচ্ছে না। নতুন অ্যাকাউন্ট খোলার কাজ তড়িঘড়ি কোনও মতেই সম্ভব নয়।
ব্যাঙ্কের পরিষেবা নিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যেও বিস্তর ক্ষোভ জমেছে। দু’টি পঞ্চায়েত এলাকার কাছের ব্যাঙ্ক ওই একটিই। অন্য কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক প্রায় পাঁচ-সাত কিলোমিটার দূরে। ফলে, সাধারণ গ্রাহকদের চাপ যেমন মলয়পুরের ওই শাখায় রয়েছে, তেমনই রয়েছে সরকারি প্রকল্প সংক্রান্ত কাজের চাপও। কিন্তু পরিষেবা না মেলায় পঞ্চায়েতগুলিতে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। মলয়পুর-১ পঞ্চায়েতের প্রধান ইন্দ্রনাথ ধাড়ার অভিযোগ, অ্যাকাউন্ট খুলতে গিয়ে জেরবার হচ্ছেন গ্রামবাসী। দীর্ঘদিন ঘুরতে হচ্ছে। একই বক্তব্য মলয়পুর-২ পঞ্চায়েত প্রধান সহদেব সামন্তেরও।
|