|
|
|
|
সিপিএমে দোটানা সিপিএমে দোটানা |
জমি বাড়ানোর চেষ্টাতেও মিশছে ভোট কমার চিন্তা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
সকালে গোটা দেশে বিকল্প নীতি তুলে ধরে লড়াইয়ের ডাক। বিকেলে পশ্চিমবঙ্গে সিপিএমের ভোট কমে যাওয়ার ভাবনা।
লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে জাতীয় রাজনীতিতে বাম-বিকল্প তুলে ধরতে আগামিকাল রামলীলা ময়দানে ‘সংঘর্ষ সন্দেশ জনসভা’-য় যাচ্ছেন প্রকাশ কারাট-বিমান বসুরা। যাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বামেদের ভোট কমে যাওয়ার চিন্তা নিয়েই। এবং ভোট কেন কমছে, তার কারণ খুঁজতে সে দিন বিকেলেই বসছে পলিটব্যুরো। উপনির্বাচনের ফল নিয়ে রিপোর্ট দেবেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সম্পাদক।
তিন বাম-দুর্গের বাইরের রাজ্যের মানুষের সামনে সিপিএমের বিকল্প নীতি তুলে ধরতে সিপিএমের নেতারা কলকাতা, কন্যাকুমারিকা, অমৃতসর ও মুম্বই থেকে ‘রথযাত্রা’ শুরু করেছিলেন। নেতৃত্বে ছিলেন প্রকাশ কারাট, সীতারাম ইয়েচুরি, বৃন্দা কারাট এবং এস আর পিল্লাই। চারটি জাঠা দিল্লিতে পৌঁছনোর পর কাল রামলীলার জনসভা। এই জনসভা থেকেই দেশ জুড়ে নতুন আন্দোলনের ডাক দেবেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু যে বিকল্প নীতি-র সাফল্য হিসেবে সিপিএম এত দিন পশ্চিমবঙ্গে ৩৪ বছরের শাসনের কথা বলত, সেখানেই তো আর ক্ষমতায় নেই দল। তার থেকেও চিন্তার বিষয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কে মানুষের মোহভঙ্গ হয়েছে বলে সিপিএম দাবি করলেও ভোটবাক্সে তার ছাপ পড়ছে না!
দলের নেতারা বলছেন, কালকের জনসভায় বিমানবাবু রাজ্যে বামেদের উপর হামলার কথা বলবেন। এমন দাবিও করবেন যে, পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বুঝতে পারছেন সিপিএমকে সরিয়ে তৃণমূলকে আনাটা ভুল হয়েছে। কিন্তু তা-ও বামেদের ভোট কেন কমছে, সেই প্রশ্ন থেকেই যাবে। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, “মমতার বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ এখনও রাজনৈতিক চেহারা নেয়নি। সেটা এক দিন না এক দিন হবেই। হলে সিপিএম-ই লাভবান হবে।”
দলের সকলেই অবশ্য এতটা নিশ্চিত নন। তাঁদের বক্তব্য, পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে গত লোকসভা নির্বাচন, ধাপে ধাপে ভোট কমেছে সিপিএমের। পঞ্চায়েতের পরে বলা হয়েছিল, পরিস্থিতি শুধরে যাবে। তা হয়নি। তৃণমূল সরকারে আসার পরেও প্রতিষ্ঠান-বিরোধী ভোট ঘরে তুলতে পারছে না দল। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে গোটা দেশে সিপিএমের বিকল্প নীতি তুলে ধরা, দলীয় সংগঠন মজবুত করা বা দলীয় কর্মী-সমর্থকদের চাঙ্গা করার চেষ্টা কতটা সফল হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েচে দলে। কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, “গত তিন দশক ধরে দল পশ্চিমবঙ্গের দিকে তাকিয়ে থেকেছে। এখন যদি আমরা বলি পশ্চিমবঙ্গে দলের অবস্থা করুণ বলে মধ্যপ্রদেশে গিয়ে সংগঠন তৈরি করব, তাতে কি মানুষের আস্থা বাড়বে? কাজেই পশ্চিমবঙ্গে ঘুরে দাঁড়ানোটাই এখন আসল কাজ।” রামলীলা ময়দানে জনসভা সেরেই দল তাই ময়নাতদন্তে বসবে উপনির্বাচনের ফল নিয়ে। বোঝার চেষ্টা করবে, কেন নলহাটি, রেজিনগর ও ইংরেজবাজার এই তিনটি আসনেই সিপিএম তথা বামেরা আগের মতো সাংগঠনিক শক্তির পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয়েছে। নলহাটিতে বামেরা জিতলেও কেন ভোটের শতাংশ ২০১১-র ৩৯ থেকে কমে ৩৩-এ নেমে গেল শতাংশে পৌঁছে গেল। পলিটব্যুরোয় এই প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে বিমানবাবুকে। এই অবস্থায় ভরসা কেবল ত্রিপুরার মানিক সরকার। দল এক বাক্যে মানছে, ফের নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় ফেরা মাণিকবাবুই এখন সিপিএমের বিকল্প নীতির পক্ষে সওয়াল করার যোগ্যতম ব্যক্তি। অতীতে জ্যোতি বসু যে কাজটা করতেন। |
|
|
|
|
|