তলানিতে ভারত-ইতালি সম্পর্ক
মেরিন কাণ্ডে রক্ষাকবচ নেই রাষ্ট্রদূতের, জানাল আদালত
তালীয় মেরিনদের হাতে ভারতীয় মৎস্যজীবী খুনের ঘটনার জেরে নয়াদিল্লি ও রোমের কূটনৈতিক সম্পর্ক কার্যত ছিন্ন হওয়ার মুখে। সুপ্রিম কোর্ট আজ ইতালীয় রাষ্ট্রদূত ড্যানিয়েল মানচিনির ভারত ছেড়ে যাওয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানোয় সঙ্কট গভীরতর হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ, এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২ এপ্রিল। তত দিন পর্যন্ত মানচিনির গতিবিধির উপরে নিয়ন্ত্রণ বলবৎ থাকবে।
প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবীর আজ বলেন, ইতালীয় রাষ্ট্রদূতকে তাঁরা আর বিশ্বাস করেন না। তা ছাড়া, এ ক্ষেত্রে তাঁর কূটনৈতিক রক্ষাকবচ আছে বলেও মনে করেন না।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে একটি নোট পাঠিয়েছে ইতালি। তাতে দাবি করা হয়েছে, কূটনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক ভিয়েনা কনভেনশনে বলা হয়েছে, কোনও কূটনীতিককে গ্রেফতার বা আটক করা যাবে না। এ প্রসঙ্গে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র আকবরুদ্দিন বলেন, “আমরা ভিয়েনা কনভেনশন নির্দেশিত রাষ্ট্রদূতের কূটনৈতিক রক্ষাকবচ সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবহিত। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশও মান্য করে চলা হচ্ছে।” বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, মানচিনির রক্ষাকবচ আপাতত সুপ্রিম কোর্টের কাছে জমা রয়েছে এবং গোটা বিষয়টি আন্তর্জাতিক আইন মেনেই করা হয়েছে।
আইনজীবী মহলের অনেকের মতে, ভিয়েনা কনভেনশনে কূটনীতিকদের রক্ষাকবচের ব্যবস্থা রয়েছে ঠিকই। কিন্তু এক জন কূটনীতিক আবেদনকারী হিসেবে আদালতে যাওয়ার পরে তাঁর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ উঠলে তিনি আর কূটনৈতিক রক্ষাকবচ চাইতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত মেরিনদের ইতালির ভোটে অংশ নিতে দেওয়ার জন্য দেশে ফেরত পাঠানোর আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মানচিনি। তিনি আদালতে মুচলেকা দিয়েছিলেন যে, মেরিনরা ফের ভারতে ফিরে আসবেন। কিন্তু ইতালি এখন ওই মেরিনদের ফেরত পাঠাতে অস্বীকার করছে। প্রধান বিচারপতিও আজ মানচিনির আইনজীবী মুকুল রোহতগির সওয়াল খারিজ করে বলেন, “কেউ আদালতে এসে মুচলেকা দেওয়ার পরে রক্ষাকবচ দাবি করতে পারেন না।”
বস্তুত, ইতালির রাষ্ট্রদূত সম্পর্কে আজ নজিরবিহীন কঠোর অবস্থান নিয়েছে শীর্ষ আদালত। রোহতগি এ দিন বলেন, “ইতালীয় রাষ্ট্রদূতের ভারত ছেড়ে যাওয়ার বিরুদ্ধে কোনও নির্দেশ না দিলেও চলবে। কারণ তিনি কোথাও যাবেন না।” তার উত্তরে প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, মানচিনিকে তাঁরা আর বিশ্বাস করতে রাজি নন। কারণ, মুচলেকা দিয়েও তিনি যে আচরণ করেছেন তা আমরা প্রত্যাশা করিনি।
মেরিনদের নিয়ে এই টানাপোড়েনের জেরে ভারত-ইতালি সম্পর্ক আপাতত তলানিতে এসে ঠেকেছে। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ইতিমধ্যেই সংসদে বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, “সুপ্রিম কোর্টকে ইতালি যে কথা দিয়েছে, তা যদি তারা না রাখে, তা হলে তার ফল ভুগতে হবে।” সরকার এবং আদালত, দু’জনেই কড়া অবস্থান নেওয়ার পরেও ইতালি যদি মেরিনদের না-ফেরানোর ব্যাপারে অনড় থাকে, তা হলে দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কই ছিন্ন হয়ে যেতে পারে বলে অনেকের আশঙ্কা।
দুই মেরিনকে ফেরাতে ভারত যত দূর যেতে হয় যাবে বলে আজ কেরল বিধানসভায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী উমেন চান্ডি। গত ফেব্রুয়ারিতে কেরল উপকূলেই দুই মৎস্যজীবীকে গুলি করে মারে ট্যাঙ্কার প্রহরারত মেরিনরা। আজ বিরোধী বামেদের আনা মুলতুবি প্রস্তাবের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রাজ্য ও কেন্দ্র যে এই বিষয়ে আদালতে কড়া অবস্থান নিয়েছে, তা আপনাদের মনে থাকা উচিত।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.