কেপমারির নয়া কায়দা
রদুপুরে উল্টোডাঙা-হাডকো মোড়। রাস্তার ধারে একটি গাড়ি থামতেই এক মোটরবাইক আরোহী যুবক গাড়ির কাছে এসে ধমকের সুরে বলল, “একটা লোকের পায়ে চাপা দিয়ে এলেন!” সে কথা শুনে চালকের পাশে বসা গাড়ির মালিক নেমে পিছনের দিকে যেতেই গাড়ির ভিতরে রাখা ব্যাগ তুলে নিয়ে চম্পট দিল যুবকটি। ঘটনাটি ঘটেছে দিন চার-পাঁচ আগে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যাগের মধ্যে নগদ ৭৮ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ছিল বলে গাড়ির মালিক রঘুপতি সাউয়ের অভিযোগ। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ দুষ্কৃতীর ছবি আঁকালেও তা পুরনো কোনও অপরাধীর সঙ্গে মেলেনি। গত শনিবার অনেকটা একই রকম ঘটনা ঘটেছে বড়তলা এলাকায়। পুলিশ সূত্রের খবর, পোস্ট অফিসের দুই মহিলা এজেন্ট একটি ব্যাগে নগদ ষাট হাজার টাকা নিয়ে জমা দিতে এসেছিলেন। তাঁরা কাগজপত্র লেখার সময়ে পাশে দাঁড়ানো এক যুবক মহিলাদের অন্যমনস্কতার সুযোগে ব্যাগটি তুলে নিয়ে চম্পট দেয়। এই ঘটনায় এখনও কাউকে ধরা যায়নি।
শহরে কয়েক দিনের ব্যবধানে এমন দু’টি ঘটনায় তদন্তকারীদের অনুমান, কলকাতা শহরে নতুন কোনও কেপমারি চক্র সক্রিয় হয়েছে। কিন্তু সেই চক্র সম্পর্কে সোমবার পর্যন্ত অন্ধকারেই রয়েছেন গোয়েন্দারা।
ওই দিন ঠিক কী হয়েছিল হাডকো মোড়ে? পুলিশ সূত্রের খবর, পেশায় ব্যবসায়ী রঘুপতি সাউ উল্টোডাঙার আরিফ রোডের বাসিন্দা। ঘটনার দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে রঘুপতিবাবু গাড়ি নিয়ে রাজারহাটের দিকে যাচ্ছিলেন। গাড়ির চালকের পাশের সিটেই ছিলেন তিনি। সামনের ড্যাশবোর্ডে রাখা ছিল টাকা ও মোবাইলের ব্যাগ। তিনি পুলিশকে জানান, গাড়িটি উল্টোডাঙা স্টেশন পার করার পরে হাডকো মোড়ের কাছাকাছি এসে থামতেই মোটরবাইক আরোহী ওই যুবক এসে দুর্ঘটনার কথা বলে। রঘুপতিবাবু সাত-পাঁচ না ভেবে গাড়ি থেকে নেমে পিছন দিকে যেতেই ড্যাশবোর্ডে রাখা ব্যাগটি নিয়ে চম্পট দেয় ওই দুষ্কৃতী। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, দুর্ঘটনার কথা শুনে গাড়ির চালকও কিছুটা অমনোযোগী হয়ে পড়েছিলেন। সেই সুযোগেই ব্যাগ হাতিয়ে নেয় দুষ্কৃতী। মিনিট খানেকের মধ্যেই গাড়ির চালক ব্যাগ খোয়া যাওয়ার কথা বুঝতে পারেন।
এই ঘটনার পরে রঘুপতিবাবু রাস্তায় কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশকে বিষয়টি জানান। পরে মানিকতলা থানায় অভিযোগও দায়ের করেন। পুলিশ জানায়, রঘুপতিবাবুর বয়ানের ভিত্তিতে একটি স্কেচ আঁকানো হয়েছে। বিষয়টি জানানো হয়েছে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগকেও। লালবাজার সূত্রের খবর, ওই ধরনের দুষ্কৃতীর কোনও হদিস এখনও মেলেনি। কলকাতা পুলিশের এক কর্তার কথায়, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, এটা নতুন কোনও কেপমারি দলের কাজ। তাদের খোঁজ শুরু হয়েছে।” তদন্তকারীদের অনুমান, টাকার ব্যাগ সম্পর্কে আগেই খবর ছিল দুষ্কৃতীর কাছে। এই ঘটনায় গাড়ি চালকের সঙ্গে কথা বলেছে পুলিশ। রঘুপতিবাবুর কোনও ব্যবসায়িক গোলমাল রয়েছে কি না, তা নিয়েও খোঁজ করা হচ্ছে। বড়তলার ঘটনাতেও কেপমারের কাছে নির্দিষ্ট খবর ছিল বলে পুলিশের সন্দেহ।
ঘটনাচক্রে, গত কয়েক মাস ধরে কলকাতা ও সল্টলেকে পরপর ছিনতাই ও কেপমারির ঘটনা ঘটেছে। অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশ সেজে মহিলাদের গয়না হাতিয়ে পালাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। তার মধ্যেই এই ‘অভিনব’ কায়দার কেপমারির আমদানিতে কিছুটা আশঙ্কায় পুলিশও।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.