কাজের ফাঁকেই সদর দরজার নকল চাবি তৈরি করেছিল পরিচারক। ২২ দিন কাজ করার পরে কাজ চলে গেলেও নকল চাবিটি রেখে দিয়েছিল। গৃহকর্তার অনুপস্থিতিতে সেটি দিয়ে লক্ষাধিক টাকার গয়না চুরি করে ঝাড়খণ্ড পালিয়েছিল সেই পরিচারক। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। কাজে যোগ দেওয়ার সময়ে মালিকের কাছে দেওয়া ঠিকানার সূত্র ধরেই তাকে পাকড়াও করলেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দা প্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ সোমবার জানান, উমেশ দাস নামে ওই পরিচারককে গিরিডি থেকে শনিবার ধরা হয়। উদ্ধার হয়েছে সোনা-রূপো, হিরে মিলিয়ে আনুমানিক তিরিশ লক্ষ টাকার গয়না। |
বাড়ি থেকে চুরি যাওয়া গয়না উদ্ধার। ধৃত পরিচারক। |
পুলিশ জানায়, শেক্সপিয়র থানা এলাকার একটি আবাসনের তিন তলায় থাকেন জগদীশপ্রসাদ আর্য ও তাঁর স্ত্রী। তাঁরা আদতে হরিয়ানার বাসিন্দা। গত জানুয়ারিতে উমেশ তাঁদের বাড়িতে কাজে আসে। ১৭ ফেব্রুয়ারি দেশের বাড়িতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যান সস্ত্রীক জগদীশবাবু। পুলিশ জেনেছে, উমেশকেও তাঁদের সঙ্গে যেতে বলেন জগদীশবাবু। কিন্তু উমেশ জানায়, তার দেশের বাড়ির লোক অসুস্থ। তাই তাকে গিরিডি যেতে হবে। এর পরেই উমেশকে ছাড়িয়ে দেন জগদীশবাবু। ততদিনে ওই পরিচারকের পকেটে পেশায় কাপড়ের ব্যবসায়ী জগদীশবাবুর ফ্ল্যাটের দরজার নকল চাবি চলে এসেছিল বলে জেনেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, জগদীশবাবুর মেয়ে সুরভি বর্মা ৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাপের বাড়ি আসেন। দরজা খুলে ঢুকে তিনি দেখেন, আলমারি ভাঙা। সব গয়না উধাও। ১১ তারিখ পুলিশে লিখিত অভিযোগ করেন। বাবা-মাকেও বিষয়টি জানান। এর পরেই তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের চুরি দমন শাখা।
তদন্তে বোঝা যায়, উমেশই এই চুরিতে যুক্ত। তারই দেওয়া ঠিকানার সূত্র ধরে গত ১৩ মার্চ চুরি দমন শাখার অফিসার দেবব্রত বিশ্বাসের নেতৃত্বে ছ’জনের একটি দল গিরিডি রওনা দেয়। এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ধরা পড়ে উমেশ। পুলিশের দাবি, জেরায় উমেশ জানিয়েছে, ১৭ ফেব্রুয়ারি সে-ও গিরিডি চলে গিয়েছিল। ৪ মার্চ ফের কলকাতায় ফিরে আসে চুরির মতলবে। ৮ মার্চ সকালে গয়না চুরি করে ১১ মার্চ ফের গিরিডি চলে যায়। |