রাজ্যে হেলিকপ্টার, ছোট বিমান
ওড়াতে চুক্তি পবন হংসের
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বিমান ও হেলিকপ্টার চালানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন। সেই পথে এগিয়েই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে কপ্টার, ছোট বিমান চালানোর জন্য সোমবার রাজ্যের সঙ্গে চুক্তি সই করল পবন হংস সংস্থা। টাউন হলে এই চুক্তি সইয়ের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কবে থেকে হেলিকপ্টার বা ছোট বিমান চলবে, তা পবন হংস সংস্থা ঠিক করে রাজ্যকে জানাবে।”
কেন্দ্রের অধীনস্থ পবন হংস সংস্থার হাতে এখন ৪৭টি কপ্টার রয়েছে। রাজ্যে সঙ্গে তাদের চুক্তি অনুযায়ী, কলকাতা থেকে বিভিন্ন শহরে তারা যেমন কপ্টার চালাবে, তেমনই সমুদ্র-তীরবর্তী পর্যটন কেন্দ্রে চালাবে সি-প্লেন। এই বিমান জলে যেমন চলতে পারে, তেমনই ছুটতে পারে ডাঙাতেও। এ ছাড়াও মালদহ-কোচবিহার-বালুরঘাটের মতো জায়গায় চালানো হবে ছোট বিমান। পবন হংসের হাতে এখনও কোনও ছোট বিমান বা সি-প্লেন নেই। সেই বিমান কেনা বা ভাড়া নেওয়ার তোড়জোড় চলছে বলে সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই রাজ্যে শিল্প এবং পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠছে। তাই অনায়াসে যাত্রী পাবে পবন হংস। সংস্থার সিএমডি অনিল শ্রীবাস্তবের দাবি, ছোট রুটে হেলিকপ্টার ও ছোট বিমান চালানোর মতো পরিস্থিতি রয়েছে। এ নিয়ে তাঁরা সমীক্ষাও চালিয়েছেন। সেই সমীক্ষাই জানাচ্ছে, কলকাতা থেকে দিঘার সমুদ্রে বিমানে করে যাওয়ার মতো যথেষ্ট যাত্রী রয়েছে। হলদিয়া, তাজপুর, দুর্গাপুর, আসানসোল-সহ রাজ্যের বহু শহরে ওই সমীক্ষা চালানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন অনিলবাবু।
গত দেড় বছরের মধ্যে দু’বার বাইরে থেকে হেলিকপ্টার এনে রাজ্যে চালানোর চেষ্টা করেছিল দু’টি সংস্থা। পর্যাপ্ত যাত্রী না পাওয়ায় সেই সংস্থা দু’টি ফিরে গিয়েছে। কলকাতা-কোচবিহার রুটে বিমান চালিয়েও তা বন্ধ করে দেয় একটি সংস্থা। হেলিকপ্টার যে সংস্থা চালাচ্ছিল, তার কর্তা জানান, কলকাতা-হলদিয়া যাতায়াত করতে খরচ পড়ে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা। দিঘাতেও প্রায় একই খরচ হয়। ওই সংস্থা-কর্তার কথায়, “পবন হংস যদি ১৫ আসনের হেলিকপ্টার চালায়, তা হলে দিঘা যাতায়াত করতে এক-একজনের খরচ পড়বে পাঁচ হাজার টাকা।” প্রশ্ন উঠেছে, যাঁরা সাধারণত দিঘা-তাজপুর যাতায়াত করেন, তাঁরা কি শুধু যাতায়াতের জন্য পাঁচ হাজার টাকা খরচ করবেন? দিঘায় যে সি-প্লেন চালানোর কথা উঠেছে, তার টিকিটের দামও নেহাত কম হবে না বলেই জানা গিয়েছে। অনেকেরই বক্তব্য, কেবল মাত্র বিদেশি পর্যটকদের পক্ষেই এই সব কারণে অত টাকা খরচ করা সম্ভব। কিন্তু, তাদের থাকার মতো উচ্চমানের হোটেল নেই দিঘা-তাজপুর-সুন্দরবনে। হলদিয়া-দুর্গাপুর-আসানসোলেও নিয়মিত অত টাকা খরচ করে যাতায়াত করার মতো শিল্পপতি বা শিল্পসংস্থার কর্তা পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়েও সংশয়ে বণিক মহলের একাংশ।
কোচবিহারের উড়ানের ক্ষেত্রে আগে যেমন হয়েছে, এ বারেও রাজ্য সরকার তেমন ভাবে বিমানের অর্ধেক আসন কিনে নেবে। কলকাতা থেকে নিয়মিত বাগডোগরায় উড়ান চালায় এমন এক বিমানসংস্থার কর্তা বলেন, “এই রুটে ৫০ আসনের কোনও বিমান চালানো হলে, যাতায়াতে ১০০ আসনের জন্য খরচ হবে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা। সে ক্ষেত্রে এক পিঠের ভাড়া আড়াই হাজার টাকার বেশি হলে তবেই লাভ হবে বিমানসংস্থার।” বিমান যত ছোট হবে, ততই তার ভাড়া বাড়বে বলেও তিনি জানান। পবন হংস যে বিমান চালানোর কথা জানিয়েছে, তার আসন সংখ্যা ২০-র কাছাকাছি।
আরও দু’টি প্রশ্ন উঠেছে। এক, এখনও একটিও ছোট বিমান হাতে পায়নি পবন হংস। কবে সেই বিমান পাওয়া যাবে, সে নিয়ে নিশ্চিত নন সংস্থার কর্তারা। সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার সঞ্জয় কুমারের কথায়, “কম পক্ষে তিন-চার মাস তো লাগবেই।” কলকাতা-কোচবিহার-বাগডোগরা ছাড়া রাজ্যের কোথাও ছোট বিমান চালানোর কোনও পরিকাঠামো নেই বলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। সঞ্জয় কুমারের দাবি, আপাতত কয়েক দিনের মধ্যে একটি হেলিকপ্টার কলকাতায় আনা হবে। ১০ মিনিটের জন্য ‘মজার উড়ান’, বিপর্যয় এবং অসুস্থকে স্থানান্তরিত করার ক্ষেত্রে তা আপাতত কাজে লাগানো হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.