খুনের মামলা তুলে নিতে চায় রাজ্য
বিচার চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকেই আর্জি নিহতের স্ত্রীর
বীরভূমের একটি রাজনৈতিক খুনের মামলা প্রত্যাহারের সরকারি আবেদনকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে।
সম্প্রতি বীরভূম জেলা আদালতের মুখ্য পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রণজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জেলাশাসকের মাধ্যমে মুরারই থানায় রুজু হওয়া চারটি মামলা প্রত্যাহার করার সুপারিশ করেন রাজ্য আইন দফতরের কাছে। আইন দফতর গত ১২ মার্চ সেই আবেদনে সম্মতি জানিয়ে জেলাশাসককে চিঠি দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিচারকের কাছে সেই আর্জি প্রস্তাব আকারে জমাও পড়েছে। ওই চারটি মামলার একটি হল ২০১০ সালে এক ফরওয়ার্ড ব্লক কর্মী খুনের ঘটনা। এই ঘটনায় অভিযুক্তেরা তৃণমূলের লোক বলেই নিহতের পরিবারের দাবি।
মিয়াঁ শেখের স্ত্রী রেক্সনা বিবি। —নিজস্ব চিত্র
নিহতের স্ত্রী রেক্সনা বিবির ক্ষোভ, “দিনের আলোয় বোমা মেরে খুন করা হয়েছিল আমার স্বামীকে। কেন আমি বিচার পাব না!” ন্যায়বিচার চেয়ে এ দিনই বিকেলে রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে ফ্যাক্স মারফত আবেদন করেছেন ওই মহিলা। আইনমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য অবশ্য বলেছেন, “পাবলিক প্রসিকিউটার হলেন ‘অফিসার অফ দ্য কোর্ট’। তাঁর মনে হয়েছে, ওই মামলা চালিয়ে যাওয়ার যৌক্তিকতা নেই। তাই তাঁর সুপারিশে আইন দফতর সম্মতি দিয়েছে। তবে, সেটাই তো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়। তা নেবে আদালত।”
২০১০-এর ১০ এপ্রিল মুরারইয়ের পঞ্চহর গ্রামে খুন হন ফব কর্মী মিয়াঁ শেখ। তাঁর স্ত্রী রেক্সনা মুরারই থানায় ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তেরা এখন জামিনে ছাড়া। মামলাটি রামপুরহাটের ফাস্ট ট্র্যাক ফার্স্ট কোর্টের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের এজলাসে বিচারাধীন। রেক্সনা সোমবার বিচারকের কাছে আবেদন করেন, বিচারপর্ব শেষ না হওয়ার আগেই ওই মামলা যেন প্রত্যাহার না করা হয়। ওই রাজনৈতিক সংঘর্ষে আহত ছ’জনও বিচারকের কাছে একই আর্জি জানিয়েছেন। রেক্সনার আইনজীবী মিল্টন রশিদ বলেন, “অভিযোগকারিণী তাঁর স্বামীর খুনের আসামিদের বিচার চেয়ে দিন গুনছেন। অথচ তাঁর অগোচরে মামলাই প্রত্যাহার হয়ে যাচ্ছে! বাদী পক্ষকে এ কথা অবশ্যই জানানো উচিত ছিল রাজ্যের তরফে।”
আইন দফতরের এক শীর্ষ কর্তা জানান, নিয়ম অনুযায়ী পিপি কোনও মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ জেলাশাসকের কাছে পাঠান। জেলাশাসক নিজের মতামত-সহ তা পাঠান আইন দফতরকে। সংশ্লিষ্ট দফতর তার পরে তাতে সম্মতি দেয়।
ঘটনাচক্রে বীরভূম জেলা আদালতের বর্তমান পিপি রণজিৎবাবু তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। নানুরের সুচপুর গণহত্যা মামলায় তিনিই ছিলেন তৃণমূলের তরফের আইনজীবী। ১১ জন তৃণমূল সমর্থক খেতমজুর খুনের ওই মামলায় ৪৪ জন সিপিএম নেতা-কর্মীর যাবজ্জীবন হয়েছে। ফব-র জেলা সম্পাদক দীপক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “নিহত ব্যক্তি আমাদের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তাই তৃণমূল তাঁকে খুন করেছিল। ক্ষমতায় এসে তৃণমূলই চক্রান্ত করে দোষীদের আড়াল করছে।” পিপি রণজিৎবাবুর অবশ্য বক্তব্য, “কেস ডায়েরি পড়ে মনে হয়েছে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নির্দোষ ব্যক্তিদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তাই জেলাশাসকের মাধ্যমে মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ আইন দফতরে পাঠাই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.