ট্রেন অসমে ঢোকার পরই শিলিগুড়ির দুই ব্যবসায়ীকে অপহরণ করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র মেল বেলা ৩টা নাগাদ গোঁসাইগাঁও স্টেশনে পৌঁছয়। তার পরেই অপহরণের ঘটনা ঘটে বলে তদন্তকারী অফিসারদের ধারণা। কারণ, তাঁর পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ৪টার পর থেকে বিনোদ মিত্তল ও সুরেশ অগ্রবালের মোবাইল ফোন ‘আউট অফ রিচ’ হয়ে যায়। ওই দিন বেলা ২টা নাগাদ কোচবিহারে থাকার সময় বিনোদবাবুর সঙ্গে তাঁর পরিবারের যোগাযোগ হয়েছে। তার পরেও বেশ কিছুক্ষণ ফোন সচল ছিল বলে তদন্তকারী অফিসাররা জানতে পেরেছে। পুলিশ জানায়, দুই ব্যবসায়ী কোন ট্রেনে আসছেন তা আগে থেকেই জানতেন জঙ্গিরা। সে হিসেবেই তারা গোঁসাইগাঁও স্টেশনে অপেক্ষা করছিলেন।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার বলেন, “অসম থেকেই ওই দু’জনকে অপহরণ করা হয়েছে বলে আমরা মনে করছি। সে জন্য অসম পুলিশকে সমস্ত কথা জানানো হয়েছে। তারা দুই ব্যবসায়ীর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছেন।” কোকরাঝাড় পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুক্রবার রাতে সেনা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে কোকরাঝাড় পুলিশ সুপার সুনীল কুমার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি করেন। কোকরাঝাড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুরোজিৎ সিংহ পানেশ্বর বলেন, “বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েও ওই ব্যবসায়ীদের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। আমরা সেনাবাহিনীকেও বিষয়টি জানিয়েছি। সমস্ত থানাগুলিকেও ওই তথ্য জানিয়ে খোঁজ চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
এদিকে, এখনও দুই ব্যবসায়ীর পরিবারের কাছে মুক্তিপণ চেয়ে কোনও ফোন যায়নি। তা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন তাঁরা। বিনোদবাবুর ভাই বিমলবাবু বলেন, “কেউ মুক্তিপণ চেয়ে এখনও ফোন করেনি। বহু জায়গায় খোঁজ করেছি কিন্তু কোনও হদিশ পাইনি। এখন পুলিশের উপর ভরসা করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।” বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ও দুই ব্যবসায়ী ব্রহ্মপুত্র মেল ধরে অসমের গোঁসাইগাঁওয়ের উদ্দেশে রওনা হন। তার আগে এক সপ্তাহ ধরে গোঁসাইগাঁওয়ের সচিবের পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি একাধিক বার বিনোদবাবুর মোবাইলে ফোন করেন। শিক্ষাসামগ্রী সরবরাহের ব্যবসা রয়েছে বিনোদবাবুদের। সে ব্যপারেই বিধায়ক বড় বরাত দিতে চান বলে তিনি জানিয়েছিলেন। বিধায়ক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি কাউকে ডেকে পাঠাননি। তাঁর সচিবও কাউকে ফোন করেনি। এ জায়গা থেকেই পুলিশ অফিসারদের ধারণা, বরাতের টোপ দিয়ে অসমে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁদের অপহরণ করা হয়েছে। কলরেকর্ড ঘেঁটে ওই ব্যক্তির পরিচয় জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। |