|
|
|
|
|
|
স্বপ্নময় চক্রবর্তী |
|
ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য |
আমি প্রথম আই-ব্রাও স্টিক দেখেছিলাম কোনও মহিলার ড্রেসিং টেবিলে নয়, সিগারেটের প্যাকেটে। লাল্টুদার চারমিনারের প্যাকেটে কালো সিগারেট দেখে অবাক হই। উনি বুঝিয়ে বলেন ওটা কী বস্তু। উনি ফাংশনের ঘোষক ছিলেন। স্টেজে ওঠার আগে একটা মেক-আপ নিতে হত।
তখন জলসা হত। মানবেন্দ্র, শ্যামল মিত্র, বেচু দত্ত, পিন্টু ভট্টাচার্য, উৎপলা, প্রতিমা। মিন্টু দাশগুপ্ত, দীপেন মুখোপাধ্যায় প্যারডি গাইতেন। ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা জহর রায়ের কমিক মানে ভলান্টিয়ারদের দফারফা। যন্ত্রসংগীতও থাকত। ইলেকট্রিক গিটারে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় খুব নাম করেছিলেন। ভি বালসারার বাজনাও শুনেছি। এই সব জলসায় ঘোষকদের একটা বড় ভূমিকা ছিল। অজয় বিশ্বাস, সুশান্ত ঘোষ-রা রেডিয়োর ঘোষণার ছকের বাইরে অন্য ধারা শুরু করেছিলেন পরে ওই ধারা ফুলে-ফলে পল্লবিত হতে থাকে।
আমাদের পাড়ার লাল্টুদা পল্লবিত ঘরানার ঘোষক। বেশ নামডাক হয়েছিল। নামডাক হলেই ডাকনামেই বিখ্যাত হন ওঁরা। যেমন বুড়ো রায়, তোচন ঘোষ...। লাল্টুদাও লাল্টু মিত্র নামেই বিখ্যাত ছিলেন এবং আমাদের পরম সৌভাগ্য যে মাঝে মাঝে মুখার্জিপাড়ার রোয়াকে আমাদের মধ্যে বিরাজিত হতেন।
বায়না করতাম, লাল্টুদা, একটু ঘোষণা শোনাও না...। উনি গলা খাঁকারি দিয়ে বলতেন নে, এটা হল মান্না দে-র ঘোষণা।
বন্ধুগণ, আকাশ নীল। সমুদ্রও নীল। নীলে নীলে নীলাকার। সমুদ্রের আছে ঢেউ, গানের আছে সুর। সুরে সুরে সুরাকার। আস্তে, আস্তে, আস্তে। আজ সুরের সাগরে ময়ূরপঙ্খি বেয়ে আসছেন আমাদের...
হঠাৎ ‘আস্তে আস্তে আস্তে’ বললেন কেন, জিজ্ঞাসা করায় লাল্টুদা বলেছিলেন, আরে, ওটা তো স্ক্রিপ্টের মধ্যেই থাকে। সুরে সুরে সুরাকার বললেই পাবলিক খুব হাততালি মারে কিনা, তখন আমায় বলতে হয় ‘আস্তে আস্তে আস্তে’। হাততালি থেমে গেলে বাকিটা বলি।আসছেন আমাদের পরম প্রার্থিত, পরম কাঙ্ক্ষিত এক শিল্পী যাঁর নাম আমাদের হৃদয়ে। কাগজে নয়, কারণ, কাগজ ছিঁড়ে যায়। পাথরে নয়, কারণ, পাথর ক্ষয়ে যায়। হৃদয়ে লেখা নাম থেকে যায়। পথের কাঁটায় রক্ত ঝরিয়ে এই মায়াবী সন্ধ্যায়, এই ময়ূরকণ্ঠী রাতের নীলে, আমাদের সামনে আসছেন...
হাত তুলে কয়েক সেকেন্ড স্ট্যাচু। তার পর লাল্টুুদা বললেন, মা-ন্-ন্-না দে-এ-এ-এ। আস্তে আস্তে আস্তে।
লাল্টুুুদা বলতেন, আরে, ঘোষণা একটা আর্ট। রেডিয়ো মার্কা ঘোষণা কি মাচায় চলে? পাবলিককে এমন দোবো যে গান না শুনে শুধু ঘোষণাই শুনবে। এক বার একটা ফাংশনের অ্যারেঞ্জাররা আমাকে বলল, বাঁচান। শ্যামল মিত্র আসতে পারবেন না। পাবলিক শ্যামল মিত্রের নামেই সব এসেছে। বাকিরা তো সব কিশোরকণ্ঠী, হেমন্তকণ্ঠী। শুধু শ্যামল মিত্রই অরিজিনাল ছিল। বললাম, ম্যানেজ করে দেব।
পাড়ার চম্পা-টেঁপি-বুঁচিদের গান হয়ে যাওয়ার পর দু-একটা কণ্ঠী ধরিয়ে দিলাম। মাঝখানে বলতে থাকলাম: সবার শেষে থাকছে ‘যা গেছে তা যাক’-খ্যাত, ‘নাম রেখেছি বনলতা’-খ্যাত, ‘জীবন খাতার প্রতি পাতায় যতই লেখো হিসাব-নিকাশ’-খ্যাত শ্যামল মিত্র।
একটা করে টেঁপি-বুঁচিদের গান হচ্ছে আর আমি ওই লাইনটা রিপিট করছি জীবন খাতার প্রতি পাতায় যতই লেখো হিসাব-নিকাশ, কিছুই রবে না। লাস্টের দিকে চলে এলাম। আমি মাইকের সামনে গিয়ে গেয়ে দিলাম
সে তো এল না।/ এল না/ কেন এল না/ জানি না।
হারাল কী আঁধারেতে/ নিভে গেল দীপ যে/ কেন জানি না।
অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, শ্যামল মিত্র আসতে পারলেন না। সে এল না। কিন্তু কেন এল না, সেটা জানি। গাড়িটা খারাপ হয়ে গেছে মাঝপথে। আমাদের লোক ট্যাক্সি নিয়ে ছুটল, কিন্তু তত ক্ষণে তিনি অন্য একটা ট্যাক্সি নিয়ে বাড়ি চলে গেলেন। কেন গেলেন? এত জানা, তবু আজও মন তাঁর জানা গেল না। কিন্তু ভাই, জীবনে কি সব চাওয়া পাওয়া মেলে? জীবন খাতার প্রতি পাতায় যতই লেখো হিসাব-নিকাশ, কিছুই রবে না। তার পরে শ্যামলদার ‘যা গেছে তা যাক’ গানটার লিরিক বলে দিলাম। হাততালি। আর তখনই ‘আস্তে-আস্তে-আস্তে।’
লাল্টুদা ক্রমশ বিখ্যাত হয়ে উঠতে লাগলেন। ক্রমশ কবিও হতে লাগলেন। অটোগ্রাফে পদ্য লিখতে শুরু করলেন। তোমার নাম? সুমিতা? হও আমার মিতা। তার পর কায়দা করে সই। তুমি কে? হৈমন্তী? হও আমার পয়মন্তি। সুলেখা? হয় যেন আবার দেখা। এক বালিকা বলেছিল, আমার মাসির জন্য একটা দিন। অটোগ্রাফ-ব্যস্ত লাল্টুুুদা লিখে দিয়েছিলেন মাসি, কী সুন্দর তোমার হাসি!
এক বার দেখি, বাঁ গালটা এবং উপরের ঠোঁটটা খুব ফোলা।
কী হয়েছে লাল্টুদা?
অটোগ্রাফের বিপদ। একটা অটোগ্রাফ দিতে হল। নাম বলল মিনতি দত্ত। যা-তা ব্যাপার। পেন-কিলার খাচ্ছি এখন।
কেন? পেন-কিলার কেন? দত্তর সঙ্গে মেলানোর জন্য গর্ত ছাড়া আর কিছু মনে পড়েনি যে তখন...।
|
|
সুমিত্র বসাক |
|
• ওয়াটার ফিল্টার-টা একদম বিগড়ে গেছে, রেগে কোম্পানিকে ফোন করে যাচ্ছেতাই
বললেন।
মেকানিক এসে সুইচ টিপতেই, অপূর্ব স্রোত, আপনার প্রেস্টিজ জলে। |
|
|
• অপেক্ষা করছেন, ল্যান্ডলাইনে একটা ফোন আসবে,
নতুন চাকরির অফার। সারা দিন ফোনটাকে জড়িয়ে
রইলেন, ফক্কা। শেষে ধুত্তোর বলে বিকেল নাগাদ
কমোডে বসে যেই মধ্যপথে, ক্রিরিরিং! |
• কম্পিউটার-টা আবার খারাপ হল? যত বার ক্লিক করেন
কিস্যুটি হয় না। হঠাৎ দেখেন, সেলফোন-টা কি-বোর্ডের
সামনে ছিল। এত ক্ষণ মাউস ভেবে সেটাকেই অত্যাচার
করছেন। শত্রুর কাছে ১৭টা মিস্ড কল চলে গেছে। |
|
|
|
|
• সদ্য অস্কারজয়ী ছবি ‘লিঙ্কন’-এর সাফল্য উদ্যাপন করতে হলিউডি পরিচালক স্টিভন স্পিলবাগর্ ভারতে এলেন, দেখলেন, আর জয় করলেন বলিউডের ৬১ জন বাছাই নির্দেশকদের মন। ‘মাস্টারক্লাস’-এ হেভিওয়েট ডিরেক্টর-সান্নিধ্যে সকলেই শ্রদ্ধায় উত্তেজনায় থরোথরো, কেউ ‘ওরে স্পিলবার্গ আমা পানে চেয়ে উত্তর দিয়েছেন’ আবেগে হতভম্ব, কেউ সাহেবি আস্তিন লেপ্টে দাঁড়িয়ে বাহাত্তরটা ছবি তোলালেন, ফেসবুক-টুইটারে কমেন্ট-লাইকের সুনামি। অবশ্য ব্যাকবেঞ্চাররা কিঞ্চিৎ বোর হয়েছেন, হাই তুলেছেন, তা বলে ‘স্পিলবার্গের সঙ্গে কাটিয়ে এলুুম’, এই কলারতোলা গর্ব পায়ে ঠেলা? প্রশ্ন এই হাত-কচলানো তোষামুদে মানসিকতা নিয়েই। স্বনামধন্য অস্কারজয়ী মাত্রেই শরণ্য রোল মডেল, কে বললে? আর স্পিলবার্গের ছবির সঙ্গে এ দেশের ছবির বিষয়-আঙ্গিকগত ফারাকও বিস্তর। এক জন ডেভিড ধাওয়ান বা ফারহা খান তাঁর ক্লাস করে উঠেই নিজেদের ছবিকে যেমন বৈপ্লবিক শুধরোবেন না, তেমনই শ্যাম বেনেগাল-অনুরাগ কাশ্যপ ‘ই.টি.’, ‘জুরাসিক পার্ক’ বা ‘টিনটিন’ বানাবেন, এ ধারণা অমূলক। আলেকজান্ডারের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত হয়েও ভারতের রাজা পুরু ‘রাজার কাছে রাজোচিত সম্মান’ দাবি করেছিলেন। এখন মাথা লুটিয়ে পেজ থ্রি-উল্লেখটুকু পেলেই সার্থক জনম।
• ইংল্যান্ডের বাসিন্দা স্টিভন গফ প্রকাশ্যে নগ্ন হয়ে ঘুরে বেড়িয়ে এলাকার শান্তিভঙ্গের অপরাধে জেলে গেলেন। ব্যাপার নতুন কিছু নয়, গত ক’বছরে বার কুড়ি তাঁকে পুলিশ ধরেছে গায়ে সুতোটি না থাকা অবস্থায় ঘোরাফেরার জন্য, কোর্টে মামলা অগুনতি, ফি-বার জরিমানা, জেল। পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষটির বিশ্বাস, নগ্নতা মানুষের জন্মগত অধিকার, মানুষ এই পৃথিবীতে আসে নগ্ন হয়ে, মৃত্যুর পরেও ফেরে নিরাবরণ, মাঝের সময়টুকুতে পোশাক না পরায় আদৌ দোষের কিছু নেই। তাই গত এক দশক গায়ে কোনও কাপড় তোলেননি, গোটা ইংল্যান্ড-স্কটল্যান্ড ঘুরেছেন নগ্ন হয়ে, শুধু জুতো-মোজা পায়ে, মাথায় টুপি। লোকে পাগল ঠাউরেছে, বেড়ালডাক ডেকেছে, নাম দিয়েছে ‘নেকেড র্যাম্বলার’। পুলিশি গুঁতো, বিচারকের আদেশ, আদালত অবমাননার ভয়ও টলাতে পারেনি, কারারক্ষীদের জোর করে পরানো পোশাক কোর্টে খুলে ফেলেছেন জনসমক্ষে। বাছাই গালাগালি জুটেছে, পাবলিক ন্যুডিটি সমর্থক সংস্থা ‘দ্য ফ্রিডম টু বি ইয়োরসেল্ফ’-এর শংসাও। নিন্দিত, ঘৃণিত হয়েও স্ব-পথে চলতে বদ্ধপরিকর, রক্তচক্ষু সমাজের কাছে মাথা না নোয়ানো এই স্পিরিটকে কুর্নিশ। |
|
|
|
১৬২
ইংল্যান্ডের বাসিন্দা নেহা
রামু-র আই.কিউ. স্কোর, যা আইনস্টাইন আর স্টিফেন
হকিংয়ের থেকেও বেশি |
৭১০০০০০০০০০
যত মার্কিন ডলারের
মালিক বিশ্বের সবচেয়ে
ধনী মানুষ কার্লোস স্লিম |
৫৭০০০০০
লন্ডনে নিলামে ভারতীয় মুদ্রায়
যত টাকায় বিক্রি হল থার্মোমিটারের
জনক ড্যানিয়েল গ্যাব্রিয়েল
ফারেনহাইটের বানানো
একটি থার্মোমিটার |
৮০
যত বছরের দীর্ঘ দাম্পত্যজীবন
(মার্কিন ইতিহাসে দীর্ঘতম)
পূর্ণ
করলেন আমেরিকান
দম্পতি অ্যান ও জন বেটার |
|
৬.০৭
রেকর্ড-ব্রেকিং যত মিটার
লাফিয়েও নিদিষ্ট জায়গা থেকে
বার সরে যাওয়ায় বাতিল ঘোষণা
হল ফ্রান্সের তারকা পোল
ভল্টার রেনো লাভিলেনির কীর্তি
|
৫২৫০০০০০০
যত ডলার মূল্য জাপানের স্বর্ণ প্রস্তুতকারক সংস্থা জিঞ্জা তানাকা-র তৈরি লিয়োনেল মেসির বাঁ পায়ের নিরেট সোনার রেপ্লিকার (ওজন ২৫ কেজি)
|
৫৮৮৩
দেশের মোট যতগুলো
রেল সেতু কত পুরনো
তার কোনও প্রমাণ নেই |
২৮১২৫০
যত কেজি অক্সিজেন
দেয়
৫০ টন
ওজনের একটি
পূর্ণবয়স্ক গাছ |
|
|
|
|
|
|
অ
সী
ম
চৌ
ধু
রী |
|
|
যত গালাগালি আছে ঘাসফুল
ফান্ডে
সবেরই যোগ্য তুমি
‘কমিশন পাণ্ডে’।
আমি যে সংবিধান, তা না
মেনে ছোড়ো তির!
চাকরিটা কার
করো? আমার... না বিরোধীর? |
যদিও উপনির্বাচনে দুই কেন্দ্রেই থার্ড,
ধর্ম বুঝি... জিরাফ বুঝি... বুঝি ভোটার কার্ড
এনডিএ আর ইউপিএ-তে করছি বাছাবাছি
দু’মাস পরেই দেখবে আবার রেল কামরায় আছি।
কারণ আমিই ভারতসেরা মাইগ্রেটরি বার্ড। |
|
|
|
লেটারিং বেটারিং |
|
ভার্চুয়াল হাত বাড়ালেই ভার্চুয়াল বন্ধু |
|
|
|
|
এই ছবির সংলাপ লিখেছেন সোমা বিশ্বাস, বাগুইআটি
|
|
পাশের ছবির দু’জন কী বলছে? সাদা পাতায়
লিখে পাঠান।
প্রতি ডায়লগ ২০ শব্দের মধ্যে।
ঠিকানা:
নয়া সংলাপ,
রবিবাসরীয়,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০০০১ |
|
|
|
|
|
|
আপনিও লিখে পাঠাতে চান ভবিষ্যতের একটা রিপোর্ট? ঠিকানা:
টাইম মেশিন,
রবিবাসরীয়,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০ ০০১ |
|
|
|
|
|
|
|