|
|
|
|
|
আমি চাই শিখর আজ ট্রিপল সেঞ্চুরি করুক ভিভিএস লক্ষ্মণ |
|
সিরিজে এই প্রথম চারশো রানের গণ্ডি পেরলো মাইকেল ক্লার্কের অস্ট্রেলিয়া। তবে ওরা যদি ভেবে থাকে যে ব্যাটিংয়ের ছন্দটা বোলিংয়েও ধরে থাকবে, তা হলে নিশ্চয়ই খুব বড় ধাক্কা খেয়েছে।
ক্রিকেট খেলাটা আমি মোটামুটি ভালই দেখেছি। খেলেওছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিখর ধবনের মহাকাব্যিক ইনিংস ব্যাখ্যা করতে হলে একটা কথাই বলতে হয়। খুব সহজ করেই বলছিঅসাধারণ।
তরুণ এই ব্যাটসম্যান নিজের অভিষেক টেস্টে নেমেছিল ভারতীয় ক্রিকেটের এক অন্যতম কিংবদন্তি ব্যাটসম্যানের বদলি হিসেবে। প্রচণ্ড চাপের মুখে। কিন্তু ওর ব্যাটিং দেখে মনে হল, এ যেন নেটে ব্যাট করছে। অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণ ও যে ভাবে দুমড়ে-মুচড়ে দিল, দেখতে দেখতে সত্যিই দারুণ লাগছিল।
শিখরের যে জিনিসটা আমাকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করেছে সেটা হল, ওর ব্যাটিংয়ে ক্রিকেটীয় ব্যাকরণের বাইরে কিছু ছিল না। তিন অঙ্কে না পৌঁছনো পর্যন্ত একটা বলও তুলে খেলেনি। সেঞ্চুরিতে পৌঁছেও কিন্তু ও অযথা ঝুঁকির রাস্তায় যায়নি বা অল্পে সন্তুষ্ট থাকেনি। এই ব্যাপারটা থাকাও কিন্তু ভীষণ জরুরি।
ধবন এখন ডাবল সেঞ্চুরির খুব কাছে দাঁড়িয়ে। আশা করছি শনিবার যে রকম খেলল, রবিবারও একই ভাবে খেলে ও অভিষেক টেস্টে ট্রিপল সেঞ্চুরি করবে। শিখর যে ভাবে ব্যাট করছে, তাতে এটা না করতে পারার কোনও কারণ আমি দেখছি না। এর মধ্যেই বেশ কয়েকটা রেকর্ড ও ভেঙে ফেলেছে। যার মধ্যে রয়েছে টেস্ট অভিষেকে দ্রুততম সেঞ্চুরি করার রেকর্ড মাত্র ৮৫ বলে। এই ইনিংসে ধবন আরও কয়েকটা রেকর্ড ভাঙলেও আশ্চর্য হব না। |
|
বিজয়ের ইনিংসও আমার খুব ভাল লেগেছে। তবে একেবারে অন্য কারণে। ওর সঙ্গী ব্যাটসম্যান বিপক্ষ বোলারদের ও ভাবে মারছে দেখেও কিন্তু বিজয় নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারায়নি। হায়দরাবাদে ও যেটা করেছিল, এখানেও দলের স্বার্থ ভুলে না গিয়ে নিজের গেমপ্ল্যান অনুযায়ী খেলল। ধবনের আগ্রাসনের সঙ্গে নিজের পরিকল্পিত ইনিংসটা দারুণ ভাবে খাপ খাইয়ে নিল। নিজের দ্বিতীয় টেস্টেই দু’নম্বর টেস্ট সেঞ্চুরির সামনে বিজয়। আগের টেস্টে ওপেনিং জুটিতে ৩৭০ তুলে ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের মুখে হাসি ফুটিয়েছিল পূজারা আর বিজয়। আর এই টেস্টে বিজয়ের সঙ্গে আরও এক তরুণ ব্যাটসম্যান ধবন দেখিয়ে দিল, ভারতীয় ব্যাটিংয়ের ভবিষ্যৎ খুব নিরাপদ হাতেই যাচ্ছে।
সিরিজের তৃতীয় টেস্ট এখন যেখানে দাঁড়িয়ে আছে, তাতে এখান থেকে একটা টিমই জিততে পারে। বৃষ্টির জন্য গোটা প্রথম দিনের খেলা ভেস্তে গেলেও ভারত এখন মাত্র ১২৫ রানে পিছিয়ে। এখনও ম্যাচের প্রায় দুশো ওভার বাকি। ভারত নিশ্চয়ই দুশো রান মতো লিড নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে একশো ওভার ব্যাট করতে দেবে। মোহালির পিচ এখনও ভাল আছে। তবে মনে হয় পঞ্চম দিন পিচ এত ভাল থাকবে না। আর ভেবে দেখুন, একটা ম্যাচ ড্র করার লক্ষ্য নিয়ে গোটা দিন ক্রিজে টিকে থাকাটা কী চাপের ব্যাপার!
প্রথম ইনিংসে চারশোর উপর রান তোলাটা অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে অবশ্যই কৃতিত্বের। তবে দ্বিতীয় দিন কিন্তু ভারতও দুর্দান্ত পাল্টা লড়াই দিয়েছিল। ওয়ার্নার-কাওয়ানের রেকর্ড ওপেনিং জুটির পরে দারুণ ভাবে অস্ট্রেলীয় মিডল অর্ডারকে ভেঙে দিয়েছিল ভারতীয় বোলিং আক্রমণ। কিন্তু স্টিভ স্মিথ-মিচেল স্টার্কের জুটি আর ভাঙা গেল না। ওদের ৯৮ রানের গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ অন্তত এটা নিশ্চিত করে ফেলেছিল যে, অস্ট্রেলীয় বোলাররা ডিফেন্ড করার মতো একটা স্কোর পাবে।
পায়ের ইতিবাচক ব্যবহারে যে ভাবে মাটি ঘেঁষা শট খেলছিল স্মিথ, সেটা দেখে খুব ভাল লাগল। স্টার্কও কিন্তু ন’নম্বরে নামা ক্রিকেটারের মতো ব্যাট করেনি। ওদের দু’জনেরই টেস্টে প্রথম সেঞ্চুরিটা প্রাপ্য ছিল। দুর্ভাগ্য যে সেটা হল না। তবে ব্যক্তিগত রেকর্ড হাতছাড়া হলেও দলগত ভাবে দেখতে গেলে ওরা যে ভাবে খেলল, সেটা নিয়ে ওদের গর্ব করা উচিত। আমি তো সব সময়ই বলি, নিজের আগে নিশ্চিত ভাবে আসবে তোমার টিম। |
|
|
|
|
|