সচিনের কথা রাখতে পেরে তৃপ্ত শিখর
দিনের শেষে যাঁর নামের পাশে ১১১ বলে ১৮৫, ৩৩টি বাউন্ডারি, দু’টি ছয়ের পরিসংখ্যান। যাঁর স্ট্রাইক রেট বীরেন্দ্র সহবাগের মতোই ১১০.১১, তিনিই যে দিনের নায়ক হয়ে উঠবেন, এতে আর অবাক হওয়ার কী আছে?
২০১০-এ এই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেই দেশের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ হয়েছিলেন শিখর ধবন। বিশাখাপত্তনমে সেই ওয়ান ডে ম্যাচে মাত্র দু’বল খেলতে পেরেছিলেন শিখর। তার পরই আউট। “এখন মনে পড়ছে। সে দিন ধোনি আর রায়না আমায় বলেছিল, ‘আশা ছাড়িস না। যারা দেশের হয়ে প্রথম ম্যাচেই শূন্য রানে আউট হয়েছে, তারাই পরে বড় খেলোয়াড় হয়েছে।’ আশা করব, ওদের কথাই যেন সত্যি হয়”, বলছিলেন শিখর।
শিখরের এই ইনিংসে বিস্মিত ক্রিকেটমহল। অস্ট্রেলীয় মিডিয়া বলছে, বিশ্ব ক্রিকেটে আছড়ে পড়ল সাইক্লোন শিখর। কিন্তু এক জন সম্ভবত অবাক নন। তিনি সচিন তেন্ডুলকর। যিনি শিখরের হাতে টেস্ট ক্যাপ তুলে দিয়ে বলেছিলেন, “আমি শুনেছি তোর খুব সাহস। ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ খেলেছিস। এ বার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও সাহসটা দেখা দেখি।’’ সেই সাহসটাই মোহালির বাইশ গজে দেখালেন শিখর। আর সাংবাদিকদের সামনে এসে বলে গেলেন, “যে কোনও ক্রিকেটারেরই স্বপ্ন থাকে সচিনের সঙ্গে খেলার। সচিনের কথা রাখতে পেরে আমি তৃপ্ত।”
নায়ক বরণ। শনিবার মোহালিতে। ছবি: উৎপল সরকার
ওয়ান ডে টিম থেকে ছিটকে যাওয়ার পর শিখরের লড়াইটা আরও তীব্র হয়েছে। সেই দিনগুলোর কথা শনিবার তুলে আনছিলেন শিখর, “দল থেকে বাদ পড়ার পর প্রচুর পরিশ্রম করেছি। নিজের খেলায় কিছু পরিবর্তন আনলাম। এই ম্যাচের প্রস্তুতি নিয়েছি সিমেন্টের উইকেটে প্র্যাক্টিস করে। অস্ট্রেলিয়ায় স্টার্ক, প্যাটিনসনদের বিরুদ্ধে ব্যাট করার অভিজ্ঞতা ছিল আমার। ইমার্জিং ট্রফিতে। এখানে আমার পরিকল্পনা ছিল: ওদের বল নজরে রাখো। আর শুধু লুজ বলগুলোতে রান নিয়ে যাও।” নব্বইয়ের ঘরে এসেও যে ভাবে পিটার সিডলকে পেটাচ্ছিলেন, তাতে অনেকেই অবাক। নার্ভাস নাইনটির কথাটা ভুলে গিয়েছিলেন? শিখর বলছিলেন, “নার্ভাস ছিলাম ঠিকই। কিন্তু তা কাউকে বুঝতে দিতে চাইছিলাম না। আসলে বল অনুযায়ী খেলছিলাম। আমার শট বাছাই এ দিন খুব ভাল হয়েছে। তাই বাউন্ডারি পাচ্ছিলাম ঘন ঘন।”
দুই মেয়েকে নিয়ে তাঁর স্ত্রী আবার থাকেন মেলবোর্নেই। খেলার পর ড্রেসিং রুমে ফিরে তাঁকে ফোন করার সময় খুব আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন শিখর। বললেন, “আমার স্ত্রী ও মেয়েরা আমার সাফল্যের জন্য কম প্রার্থনা করেনি। সে জন্যই ওই সময় আবেগে ভেসে যাচ্ছিলাম।”

শিখরে ধবন
অভিষেকে দ্রুততম টেস্ট সেঞ্চুরি (৮৫ বলে)। এর আগে রেকর্ড ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডোয়েন স্মিথের (দক্ষিণ আফ্রিকা, কেপটাউন ২০০৪)।
ভারতের হয়ে টেস্ট অভিষেকে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এর আগে ছিল গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথের (১৩৭, প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, কানপুর ১৯৬৯)। ভারতীয় বংশোদ্ভুত হিসাবে অভিষেকে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ছিল কে এস রঞ্জিৎ সিংহের (১৫৪ ন.আ. ইংল্যান্ডের হয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১৮৯৬ সালে)।
অভিষেক টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। সর্বোচ্চ ইংল্যান্ডের রেজিনাল্ড ফস্টার। ২৮৭, সিডনি ১৯০৩।
ওপেনার হিসাবে প্রথম ভারতীয় যিনি টেস্ট অভিষেকে সেঞ্চুরি পেলেন। এর আগে সর্বোচ্চ রান ছিল কেসি ইব্রাহিমের (৮৫), ’৪৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে।

বীরেন্দ্র সহবাগ: দুর্দান্ত ব্যাটিং শিখিবয়। সর্বকালের সেরা অভিষেক। তোমার জন্য গর্বিত। রবিবার বিশাল রান করেই থামবে।
হরভজন সিংহ: খুব ভাল ইনিংস শিখর জাট জি। টপ টপ টপ ব্যাটিং। কঠোর পরিশ্রম কখনও ব্যর্থ হয় না।
গৌতম গম্ভীর: জাট জি দারুণ খেলেছ। ধরে থাকো, ছেড়ো না। ওরা নুইয়ে পড়েছে, ওদের শেষ করে দাও।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়: ধবনের ব্যাটিংয়ের যা টেকনিক, তাতে ও সব ধরনের ক্রিকেটের সঙ্গেই অনায়াসে মানিয়ে নিতে পারবে।
রাহুল দ্রাবিড়: ধবন যা খেলল, তা বিশ্বাস করা কঠিন।
সুনীল গাওস্কর: এত দিনের অপেক্ষা শিখরের রানের খিদে বাড়িয়ে দিয়েছে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.