কারণ টাকার অভাব
কেআইটি ট্রাইব্যুনালের ১৫ কর্মীর পেনশন নিয়ে জট
টাকার অভাবের কারণ দেখিয়ে কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (কেআইটি)-এর নিজস্ব ট্রাইব্যুনালের প্রায় ১৫ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মীকে পেনশন দিচ্ছে না রাজ্য সরকার। তাঁদের পেনশনের দাবিটি দ্রুত বিবেচনা করার জন্য আদালত নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘ দিন ধরে রাজ্য সরকারের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ওই সব কর্মীর পেনশেনর ব্যাপারে কেন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল না, সে ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে রাজ্য নগর উন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, বিষয়টি তাঁর আদৌ জানা নেই। পাশাপাশি, রাজ্য সরকারের অর্থ সচিবের কাছে এর কারণ জানতে চেয়ে ই-মেল করলেও তার কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।
যেখানে বিভিন্ন ক্লাবকে টাকা দেওয়ার জন্যই বছরে ৬০ কোটি টাকা খরচের সিদ্ধান্ত চটজলদি নিয়ে নিয়েছে রাজ্য সরকার, সেখানে ওই ১৫ জন কর্মীর পেনশন বাবদ বছরে ৩০ লক্ষ টাকা খরচের প্রশ্নে টাকার অভাবের অছিলা কোন যুক্তিতে দেখানো হচ্ছে, সেই প্রশ্নই তুলেছে সংশ্লিষ্ট মহল।
কেআইটি পেনশনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত রায় বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে বঞ্চিত হচ্ছেন ট্রাইব্যুনালের ওই জনা ১৫ কর্মী। আমরা বহুবার কর্তৃপক্ষকে বলেছি। ওই কর্মীদের পেনশন দেওয়া হবে না, এমন কথা কখনও তাঁরা বলেননি। কিন্ত অনেক দরবার করেও এখনও পর্যন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি। টাকার অভাব দেখানোর কোনও যুক্তি আছে বলে আমি মনে করি না।”
রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতরের আওতায় ৫টি সংস্থা রয়েছে। এগুলি হল: কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট, হাওড়া ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট, কলকাতা মেট্রোপলিটল ওয়াটার স্যানিটেশন অথরিটি এবং কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট ট্রাইব্যুনাল।
সবকটি সংস্থার কর্মীরাই এক সময়ে কনট্রিবিউটারি প্রভিডেন্ট ফান্ডের আওতায় ছিলেন। পরে একমাত্র কেআইটি ট্রাইব্যুনাল ছাড়া বাকি ৪টি সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী-সহ সমস্ত কর্মীকে পেনশন প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হয়। পড়ে থাকেন শুধু ট্রাইবুনালের কর্মীরা।
দীর্ঘ দিন ধরে রাজ্য সরকারের কাছে হত্যে দিয়েও কোনও সুরাহা না হওয়ার পর আদালতের দ্বারস্থ হন ট্রাইব্যুনালের ওই সব অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। কলকাতা হাইকোর্ট তাঁদের পেনশনের আবেদনের ব্যাপারে অবিলম্বে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয়। রাজ্যের তৎকালীন অর্থসচিব সিএম বাচোয়াত আদালতকে জানান যে, টাকার অভাবে ওই আবেদন বিবেচনা করা সম্ভব নয়।
কিন্তু কলকাতা হাইকোর্ট অর্থ সচিবের ওই উত্তরে সন্তুষ্ট না-হয়ে ফের নির্দেশ দেয় যে, এ ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ হল রাজ্য সরকার।
তাই বিষয়টি রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানোর জন্য বর্তমান অর্থ সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে নির্দেশ দেয় আদালত। এবং পরিষ্কার করে বলে দেয় যে, ওই নির্দেশ পাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে যেন অর্থ সচিব বিষয়টি রাজ্য সরকারের কাছে পাঠান। পাশাপাশি এই নির্দেশও দেওয়া হয় যে, আবেদনকারীরা যেহেতু অবসরপ্রাপ্ত কর্মী, তাই সেই কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকার যেন যত দ্রুত সম্ভব এ ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
এই নির্দেশ অর্থ সচিবের কাছে পৌঁছয় ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। কিন্তু দীর্ঘ এক বছর সময় কেটে যাওয়ার পরেও ওই সব অবসরপ্রাপ্ত কর্মী জানেন না, তাঁদের ব্যাপারে ঠিক কী ব্যবস্থা নিল রাজ্য সরকার।
এই ব্যাপারে ফিরহাদ হাকিমকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে ওই সব কর্মীর আবেদনের সঙ্গে টাকা পয়সা দেওয়ার বিষয়টিও জড়িত। তাই তা নিয়ে রাজ্য সরকারের কিছু সমস্যা রয়েছে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.