চলন্ত লেডিজ স্পেশ্যাল থেকে পড়ে জখম হলেন বাগুইআটির এক যুবক। আর রীতেশ জয়সওয়াল নামে ওই যুবককে ট্রেনের কামরা থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে তিন মহিলা যাত্রীকে বেধড়ক মারধর করল তাঁদের কয়েক জন মহিলা সহযাত্রী ও কয়েক জন যুবক। ঘটনার সময় তাঁরাও ওই কামরাতেই ছিলেন বলে দাবি করেছে রেল পুলিশ। যদিও রীতেশ জানিয়েছেন, তাঁকে কেউই ঠেলে ফেলেনি। শনিবারের এই ঘটনায় অবশ্য অন্য প্রশ্ন তুলেছেন নিত্য যাত্রীদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, লেডিজ স্পেশ্যালে ওই যুবকেরাই বা কী করছিলেন?
পুলিশ অবশ্য এ প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি।
রেল পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার সন্ধ্যায় ঘটনার সূত্রপাত বিধাননগর স্টেশনে। পরে তা গড়ায় খড়দহ পর্যন্ত। এ দিন সন্ধে ছ’টা নাগাদ আপ শিয়ালদহ-রানাঘাট লেডিজ স্প্যেশাল ‘মাতৃভূমি লোকাল’ বিধাননগর স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঢুকছিল। সেই সময় ওই চলন্ত ট্রেন থেকে রীতেশ প্ল্যাটফর্মে পড়ে যান। রেল পুলিশ জানায়, মাথায়, পায়ে চোট লাগায় তাঁকে আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, রীতেশের বাঁ হাতের অনামিকা ও কড়ে আঙুল কাটা গিয়েছে। |
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রীতেশ রেল পুলিশকে জানিয়েছেন, এ দিন তিনি ভুল করে লেডিজ স্পেশ্যালে উঠে পড়েন। তখন কয়েক জন মহিলা তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার ভয় দেখালে তিনি চলন্ত ট্রেন থেকে নামতে যান। তখনই তিনি প্ল্যাটফর্মে ছিটকে পড়েন। তবে কোনও মহিলা যাত্রী তাঁকে ঠেলে ফেলেননি বলেই দাবি করেছেন ওই যুবক। এ দিন রাতে রেল পুলিশের এডিজি অমরকান্তি সরকার বলেন, “রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ পাইনি। তবে কেউ যদি অভিযোগ করেন তবে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”
রেল পুলিশ জানিয়েছে, রীতেশ পড়ে যেতেই ওই কামরায় থাকা তিন মহিলা যাত্রীর সঙ্গে বচসা বেধে যায় অন্য মহিলা যাত্রীদের। তাঁদের সঙ্গে তাল মেলায় ওই কামরায় থাকা কয়েক জন যুবকও। অভিযোগ, প্রথমে কথা কাটাকাটির পরে ওই তিন মহিলা যাত্রীকে মারধর করা শুরু হয়। এর পরে খড়দহ স্টেশনে ট্রেন দাঁড়ালে ওই তিন মহিলা যাত্রীকে টেনে প্ল্যাটফর্মে নামান ওই মহিলা ও যুবক যাত্রীরা। সেখানেও চলে মারধর। স্টেশন মাস্টার ও কর্তব্যরত রেল পুলিশ কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছলে অবশ্য যুবকেরা চম্পট দেন। পরে ওই তিন মহিলাকে উদ্ধার করে স্টেশন মাস্টারের অফিসে নিয়ে আসা হয়। খবর দেওয়া হয় খড়দহ থানায়। পুলিশ এসে জাহেদা খাতুন, সালেমা বিবি, ও পুতুল খান নামে ওই তিন মহিলাকে স্থানীয় বলরাম বসু হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে জগদ্দলের বাসিন্দা জাহেদা ও টিটাগড়ের বাসিন্দা সালেমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে জগদ্দলের আর এক বাসিন্দা পুতুলকে অবশ্য আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার (বেলঘরিয়া) বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “খবর পেয়ে তিন জনকে উদ্ধার করেছি। তবে রাত পর্যন্ত কেউ কোনও অভিযোগ করেননি।” |