এটিএম কার্ড না থাকা সত্ত্বেও গ্রাহকের মোবাইলে এসএমএস এসেছিল, তাঁর কার্ড ব্যবহার করেই অ্যাকাউন্ট থেকে পরপর তুলে নেওয়া হয়েছে প্রায় ৭৩ হাজার টাকা। এমনই অভিযোগে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সেন্ট জেভিয়ার্স শাখার ম্যানেজারের বিরুদ্ধে বর্ধমান থানায় অভিযোগ করলেন বড়নীলপুরের বাসিন্দা শুভ্রা দত্ত। ঘটনাটির তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে শুক্রবার জানান আইসি দিলীপকুমার গঙ্গোপাধ্যায়।
গত ১২ মার্চ বড়নীলপুরের সুকান্তপল্লির বাসিন্দা শুভ্রাদেবী পুলিশকে জানান, ওই ব্যাঙ্কে তাঁর একটি সেভিংস অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তিনি কোনও দিনই এটিএম কার্ড চেয়ে আবেদন জানাননি। গত ২৮ ডিসেম্বর তাঁর মোবাইলে এসএমএস আসে। তাতেই তিনি জানতে পারেন, ২২ থেকে ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এটিএম কার্ড ব্যবহার করে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে বারবার টাকা তোলা হয়েছে। বিধবার অভিযোগ, গত ৩১ ডিসেম্বর বিষয়টি জানিয়ে তিনি ব্যাঙ্কের শাখা ম্যানেজারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। তাঁর দাবি, ম্যানেজার তখন তাঁকে জানিয়েছিলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ৯ জানুয়ারি ফের তিনি লিখিত ভাবে ম্যানেজারের কাছে তদন্তের দাবি জানান। এর পরে তিন মাস কেটে গেলেও সুরাহা হয়নি।
শুভ্রাদেবীর বক্তব্য, ব্যাঙ্ক থেকে কিছুই জানতে না পেরে গত ১১ মার্চ তিনি বর্ধমান জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, টাকা তোলার বিষয়টি বর্ধমান থানায় জানিয়ে তিনি এফআইআর করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ওই ম্যানেজার তাঁকে বাধা দেন। বিষয়টি ‘আপসে মিটিয়ে নেওয়ার’ কথাও বলেন। এর পরেই তিনি ব্যাঙ্কের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। কিন্তু তার পরেও ম্যানেজার তাঁকে এটিএম স্লিপ দেখাতে চাননি। শুভ্রাদেবীর দাবি, ‘‘ম্যানেজার বলেন, আমার চাকরি বাঁচাতে আপনার টাকা দিয়ে দেব। কিন্তু তা-ও তিনি দেননি। শেষ পর্যন্ত জানান, তাঁর পক্ষে টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব নয়।” তবে ম্যানেজারের বক্তব্য, “২০০৯ সালে ওই মহিলা এটিএম কার্ড চেয়ে দরখাস্ত করেছিলেন। তবে তাঁর হাতে এটিএম কার্ড পৌঁছেছিল কি না, তা আমরা জানি না। মহিলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। সেখান থেকে ব্যাঙ্কের ওমবাডসমেন তদন্তের ভার নিয়েছেন। ওই মহিলার হাতে এটিএম কার্ড না থাকা সত্ত্বেও কী করে টাকা উঠছে, জানি না।” এটিএম কার্ডটি আপাতত সিল করে দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
গত ১২ মার্চ বর্ধমান থানায় শুভ্রাদেবী ওই ম্যানেজারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানিয়েছেন, বর্ধমান ও দুর্গাপুরের বিভিন্ন এটিএম থেকে সব মিলিয়ে ৭৩,৬০০ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। ম্যানেজার নিজের উদ্যোগে টাকা মিটিয়ে দেওয়ার কথা বললেও পরে অক্ষমতা প্রকাশ করেছেন। দিলীপবাবু বলেন, “শুক্রবার সকালে ওই ম্যানেজারকে একপ্রস্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।” |