দুই পুরসভার বিদ্যুতের বিল বাকি ১২ কোটি
তৃণমূল এবং কংগ্রেসের জোট পরিচালিত দুই পুরসভার কাছে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির আসানসোল ডিভিশনের মোট বকেয়া পাওনা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২ কোটি টাকা। দফতরের অভিযোগ, বারবার আবেদন করা সত্ত্বেও এই পাওনা টাকা মেটাচ্ছে না আসানসোল ও কুলটি পুরসভা। বকেয়ার কথা স্বীকার করেছে দুই পুর কর্তৃপক্ষই। কিন্তু পাওনা মেটানো হবে কীভাবে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত কিছুই জানাতে পারেননি তাঁরা।
রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির আসানসোল ডিভিশনাল কার্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর ধরে এই দুই পুরসভা ওই টাকা বাকি রেখেছে। সম্প্রতি একটি হিসেব প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, আসানসোল পুরসভার কাছে পাওনা হয়েছে প্রায় ৯ কোটি টাকা ও কুলটি পুরসভার কাছে পাওনা হয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকা। এই বিশাল অঙ্কের টাকা বাকি পড়ে থাকায় আর্থিক সংকটে পড়েছে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির আসানসোল ডিভিশনাল কার্যালয়। কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, এর জেরে বিদ্যুতের সরঞ্জাম কিনতে ও খারাপ যন্ত্রাংশ মেরামতি করতে তাঁদের আর্থিক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এলাকার বিদ্যুৎ সংক্রান্ত পরিষেবাও ব্যাহত হচ্ছে। সংস্থার আসানসোলের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়র মিতেশ দাশগুপ্ত বলেন, “দুই পুর কর্তৃপক্ষকে বকেয়া মেটানোর জন্য অনেক বার লিখিত ও মৌখিক আবেদন করেছি। কিন্তু লাভ হচ্ছে না।” তাঁর আক্ষেপ, আর্থিক বছরের শেষে আয় ব্যয়ের হিসেবে এই বকেয়া পড়ে থাকায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি করতে হয় তাঁদের।
আসানসোল পুরসভার মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে না চাইলেও বকেয়ার কথা স্বীকার করেন বিদ্যুৎ দফতরের মেয়র পারিষদ রবিউল ইসলাম। রবিউলবাবুর বক্তব্য, “এই বকেয়া শুধু আমাদের সময়েই হয়নি। বাম পরিচালিত আগের বাম পরিচালিত বোর্ড অনেক টাকা বাকি রেখে গিয়েছে। এখনও আমরা সেই দায় বয়ে চলেছি।” তাঁর দাবি, ক্ষমতায় বসার পরে পুরনো বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের অনেক টাকাই মিটিয়েছেন তাঁরা। বাকিটাও ধীরে ধীরে মিটিয়ে ফেলা হবে। আসানসোল পুরসভার প্রাক্তন মেয়র তথা বিরোধী নেতা সিপিএমের তাপস রায় বলেন, “কিছু টাকা বাকি ছিল। কিন্তু বর্তমান বোর্ড ক্ষমতায় এসে ঋণের পাহাড় জমিয়ে আমাদের উপরে দোষ চাপাচ্ছে।”
কুলটি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বাচ্চু রায়ের অবশ্য বক্তব্য, “আমরা জানি, অনেক টাকা বাকি আছে। নাগরিক পরিষেবা দিতেই এই বিদ্যুৎ খরচ হয়েছে। সরকারের কাছ থেকে অনুদান এলেই আমরা খরচের আনুপাতিক হারে বিদ্যুতের বিল মিটিয়ে দিই। সুযোগ হলে সবটাই মিটিয়ে দেওয়া হবে।”
এ দিকে বিদ্যুৎ কর্তারা অভিযোগ তুলেছেন, অনেক টাকা বিদ্যুৎ বিল বাকি থাকলেও পুরসভাগুলি বিদ্যুৎ খরচের বহর মোটেই কমাচ্ছে না। মিতেশবাবুর অভিযোগ, “রাস্তার ধারে প্রয়োজনের অতিরিক্ত উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন (হাই মার্স) আলো লাগাচ্ছেন দুই পুর কর্তৃপক্ষ। এলাকায় বসতি বৃদ্ধি হয়েছে ঠিকই। কিন্তু রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতায় দুই পুর-কর্তৃপক্ষই অত্যন্ত সাধারণ রাস্তা ও গলিগুলিতেও আলো লাগাচ্ছেন। শহরের বিভিন্ন রাস্তা সাজানোর আলোও লাগানো হচ্ছে। অথচ বিদ্যুৎ দফতর থেকে এসব আলো লাগানোর আগে কোনও অনুমতি নেওয়া হচ্ছে না। বিদ্যুতের খরচও দেওয়া হচ্ছে না।” ওই সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অবস্থায় বিদ্যুতের খরচ যেমন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, তেমনই ক্ষমতার অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার হওয়ায় ট্রান্সফর্মারগুলির উপরে চাপ বাড়ছে, সেগুলি বিকল হয়ে পড়ছে। এলাকায় ব্যাপক ‘লোড শেডিং’ হচ্ছে। দুর্ভোগে পড়ছেন সাধারণ গ্রাহকেরা। কোম্পানির কর্তাদের অভিযোগ, এই বেনিয়ম বন্ধ করতে দুই পুর কর্তৃপক্ষকে অনেক বার আবেদন জানানো হলেও কেউ কথা কানে তুলছেন না।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.