স্কুলের মধ্যে ঢুকে এক শিক্ষিকার শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। অন্ডালের সিঁদুলিতে অম্বিকা মাজি নামে ওই যুবককে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয় বাসিন্দারাই। যুবকটি তাঁকে মাঝে-মধ্যেই উত্ত্যক্ত করত বলে পুলিশে অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষিকা।
সিঁদুলি বাউরিপাড়া অবৈতনিক বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষিকার বাড়ি দুর্গাপুরে। তিনি জানান, বাড়ি থেকে বাস বা ট্রেনে চেপে আসার পরে সিঁদুলি রেলগেট থেকে রিকশায় স্কুলে পৌঁছন তিনি। তাঁর অভিযোগ, প্রায় দিনই ওই যুবক রেলগেটের কাছে তাঁকে উদ্দেশ্য করে খারাপ কথাবার্তা বলে। এ দিন সকালে তাঁর সঙ্গে সঙ্গে এসে একেবারে স্কুলে ঢুকে পড়ে। শিক্ষিকার অভিযোগ, “ভিতরে ঢুকে আমাকে অশ্লীল কথাবার্তা বলে ওই যুবক। আমি প্রতিবাদ করি। চেঁচামেচি শুনে আমার সহকর্মীরা ও কয়েক জন বাসিন্দা ছুটে এসে তাকে ধরে ফেলে।” তিনি জানান, এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন তিনি। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সত্যজিৎ মিশ্র বলেন, “বহিরাগত কেউ যাতে স্কুল চলাকালীন ভিতরে ঢুকতে না পারে, তার জন্য স্কুলের গেট লাগিয়ে রাখি। কিছু দিন আগেই অম্বিকা স্কুলের গেটে ধাক্কা দিয়ে চেঁচেমেচি করে বলতে থাকে, ওর স্কুলে ঢোকার অধিকার আছে। আমরা তাতে পাত্তা দিইনি।” তাঁরও অভিযোগ, “ওই শিক্ষিকাকে এর আগেও রেলগেটের কাছে অম্বিকা নানা ভাবে উত্ত্যক্ত করেছে বলে শুনেছি। এ দিন যে আচরণ সে করেছে, তাতে সবাই ক্ষুব্ধ হন। অম্বিকাকে একটি ঘরে ঢুকিয়ে তালা লাগিয়ে রাখা হয়। পুলিশ এসে তাকে ধরে নিয়ে যায়।”
অম্বিকাকে নিয়ে বিরক্ত সিঁদুলি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মীরাও। তাঁদের অভিযোগ, নানা সময়ে কেন্দ্রে এসে কাজকর্মের হিসেব চায় ওই যুবক। নিজেকে তৃণমূলের নেতা বলেও দাবি করে। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য তুফান মণ্ডলের অভিযোগ, “রাজ্য জুড়ে মহিলারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অন্ডালও যে তার বাইরে নয়, এ দিনের ঘটনায় তা পরিষ্কার।” সিপিআইয়ের অন্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা স্থানীয় বাসিন্দা প্রভাত রায়ের মন্তব্য, “নিন্দনীয় ঘটনা। আশা করি, পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।” তৃণমূলের সিঁদুলি অঞ্চল কমিটির সভাপতি শ্যামলেন্দু অধিকারীর দাবি, “অম্বিকার কিছু মানসিক সমস্যা রয়েছে বলেই আমরা জানি। এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিক।” |