|
|
|
|
সহবাসে সম্মতির বয়স কমানো ভুল, মত বিজেপি-সপার
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ বিল নিয়ে ঘরোয়া মতবিরোধ কাটাতে পারলেও এ বার বাইরে সমস্যায় পড়তে চলেছে ইউপিএ সরকার।
প্রধান বিরোধী দল বিজেপি তো বটেই, ইউপিএকে বাইরে থেকে সমর্থনকারী মুলায়ম সিংহ যাদব ও মায়াবতীর দলও এ নিয়ে আপত্তি তুলতে চলেছে। এই দলগুলির মূল আপত্তি যৌন সম্পর্কে সম্মতির বয়ঃসীমা ১৮ বছর থেকে কমিয়ে ১৬ বছরে নিয়ে আসার বিষয়ে। সমাজের যে রক্ষণশীল, গোঁড়া অংশে আইনের অপব্যবহারের কথা ভেবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় সহবাসে সম্মতির বয়ঃসীমা কমিয়ে আনা হয়েছে, সেই ভোটব্যাঙ্কের কথা ভেবেই এ নিয়ে আপত্তি তুলছে বিজেপি। দুই বিজেপি-মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ এবং শিবরাজ সিংহ চৌহানও এ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন।
বিজেপি, সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টির নেতারা বলছেন, মহিলাদের লুকিয়ে দেখা বা অনুসরণ করার মতো অপরাধে যে ভাবে কড়া শাস্তির বিধান করা হয়েছে, তার অপব্যবহারের আশঙ্কা রয়েছে। আগামী সোমবার এই বিল নিয়ে সরকারের তরফে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানেই এ বিষয়ে আপত্তি জানাবে এই দলগুলি। বিজেপির তরফে এই বিলটি ফের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানোরও দাবি জানানো হবে। বিজেপি এবং অন্য দলগুলি নিজেদের দাবিতে অনড় থাকলে মনমোহন সিংহ সরকারেরই সমস্যা। কারণ যৌন নির্যাতনের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করে অর্ডিন্যান্স জারি করেছে কেন্দ্র। এই অর্ডিন্যান্সের মেয়াদ ৪ এপ্রিল পর্যন্ত। তার আগেই নতুন আইন পাশ করাতে হবে। বিরোধীদের বাধায় তা সম্ভব না হলে ফের অর্ডিন্যান্স জারি করতে হবে সরকারকে।
বিজেপি অবশ্য বলছে, যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ আইনকে তারা সমর্থন করতে চায়। কিন্তু বিলের আশঙ্কার দিকগুলি নিয়ে সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। এক বিজেপি নেতার বক্তব্য, “এই বিল দেখে মনে হচ্ছে, সরকার আইন করে বিয়ের আগে ১৮ বছরের কম বয়সীদের যৌন সম্পর্কে উৎসাহ দিচ্ছে।”
সরকারি সূত্রের বক্তব্য, আজকের দিনে ছেলেমেয়েদের মধ্যে মেলামেশা আগের থেকে অনেক বেশি। কোনও কিশোরী নিজের ইচ্ছায় তাঁর পুরুষ-বন্ধুর সঙ্গে মিশলেও রক্ষণশীল অভিভাবকরা ওই ছেলেটির বিরুদ্ধে ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তুলতে পারে। সহবাসে সম্মতির বয়ঃসীমা কমিয়ে না আনলে এর অপব্যবহার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই যুক্তি খারিজ করে দিয়েছেন মুলায়ম। সমাজবাদী পার্টির নেতা রামগোপাল যাদব কড়া ভাষায় জানিয়েছেন, “দেখে মনে হচ্ছে মানসিক প্রতিবন্ধীরা এই বিল তৈরি করেছেন। সংসদে আমরা এই বিলের বিরুদ্ধে ভোট দেব।”
সমাজবাদী নেতাদের ব্যাখ্যা, এই বিল এলে কেউ মহিলাদের চাকরি দিতেই ভয় পাবেন। কোনও মহিলার দিকেই তাকালেই শাস্তির বিধান অবাস্তব। তা হলে রাস্তাঘাটে, হাটে-বাজারে সর্বত্র মহিলাদের জন্য পৃথক জায়গায় বন্দোবস্ত করতে হবে। শুধু পুরুষদের জন্য নয়, মহিলাদেরই এতে অসুবিধা হবে। বিল নিয়ে আপত্তি থাকলেও সংসদে তার পাশ হওয়ায় বাধা দেবে না বসপা। দলের নেত্রী মায়াবতী বলেন, “আমাদের আপত্তির কথা জানাব। কিন্তু এই আইনের প্রয়োজন রয়েছে।” রাজ্যসভার সাংসদ জাভেদ আখতারও মানছেন, “ভয়্যারিজম বা স্টকিং-এর সংজ্ঞা সঠিক ভাবে নির্ধারিত না হলে এই আইনের অপব্যবহার হতে পারে। কেউ ব্যক্তিগত শত্রুতা চরিতার্থ করতেও মিথ্যে অভিযোগ করতে পারেন।”
|
পুরনো খবর: সহবাসে সম্মতির বয়স ১৬, রাতারাতি একমত মন্ত্রিগোষ্ঠী |
|
|
|
|
|