|
|
|
|
অভিযোগ তৃণমূলের |
দীপক সরকারের নেতৃত্বেই অস্ত্র মজুত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
অস্ত্র উদ্ধারের মামলায় নাম জড়াল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের। বুধবার মেদিনীপুর সদর ব্লকের এনায়েতপুর থেকে মাটি খুঁড়ে বেশ কিছু পুরনো অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল। সেই ঘটনাতেই দীপকবাবু-সহ ১২ জন সিপিএম নেতা-কর্মীর নামে অভিযোগ দায়ের করেছে তৃণমূল। এঁদের মধ্যে দু’জন সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য।
রাজ্যে পালাবদলের পর দুই মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গা থেকেই মাটি খুঁড়ে অস্ত্র ও দেহাবশেষ উদ্ধার হয়। নাম
|
দীপক সরকার।
—নিজস্ব চিত্র |
জড়ায় একের পর এক সিপিএম নেতার। দাসেরবাঁধ কঙ্কাল-কাণ্ডে গ্রেফতার হন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা গড়বেতার সিপিএম বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ। নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলায় গ্রেফতার করা হয় প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠকেও। দু’জনেই এখন জামিনে মুক্ত। তবে এই ধরনের ঘটনায় দীপকবাবুর নাম জড়াল এই প্রথম। জেলা পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরীর বক্তব্য, “অভিযোগ প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।”
যদিও গত বছর মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষক-চিকিৎসক বিক্রম সাহার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল দীপকবাবুর। বিক্রমবাবুর স্ত্রীর অভিযোগ ছিল, দীপকবাবু তাঁর স্বামীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছেন। সেই জল অবশ্য বেশি দূর গড়ায়নি। এ বার দীপকবাবুর বিরুদ্ধে উঠল অস্ত্র মজুতের অভিযোগ। বুধবার রাতে যিনি দীপকবাবুদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেছেন, সেই অঞ্জনকুমার বেরা তৃণমূলের মণিদহ অঞ্চল সভাপতি। তিনি বলেন, “এক সময় এনায়েতপুর ও তার আশপাশের এলাকায় সশস্ত্র শিবির তৈরি করে জঙ্গলমহল ‘পুনর্দখল অভিযান’ শুরু করেছিল সিপিএম। তখন দীপকবাবুর নেতৃত্বে এখানে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র মজুত করা হয়। মাটি খুঁড়ে ওই সব অস্ত্রই উদ্ধার হয়েছে।” সিপিএমের অবশ্য বক্তব্য, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে চক্রান্ত করে দলের নেতাদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। দীপকবাবু অবশ্য সোজা কথা, “বিষয়টি শুনেছি। এটি মিথ্যে মামলা।” সিপিএম সূত্রে খবর, এই ঘটনায় নাম জড়ানোর পর আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন দীপকবাবু। অভিযোগপত্রে দীপকবাবু ছাড়াও নাম রয়েছে সত্যেন মাইতি, বিজয় পাল, বলরাম পান, পবন দোলুই, অজিত সেনাপতি, রেণুপদ সিংহ প্রমুখের। সত্যেন মাইতি এবং বিজয় পাল সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। অভিযুক্তদের কয়েকজন আবার ঘরছাড়া। একটি সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে বুধবার সকালে এনায়েতপুর হাট সংলগ্ন এলাকায় তল্লাশি চালায় যৌথ বাহিনী। মাটি খুঁড়ে উদ্ধার হয় ৭০টি বন্দুক। তার মধ্যে ৬১টি দেশি একনলা বন্দুক। বাকি ৯টি রাইফেল। সবই পুরনো এবং অচল।
রাজ্যে পালাবদলের পরে এনায়েতপুর থেকে আগেও অস্ত্রশস্ত্র মিলেছিল। সিপিএমের মণিদহ লোকাল কমিটির অফিসের অদূরে মাটি খুঁড়ে এ কে ৫৬-ও উদ্ধার হয়। ২০০৯-এর সেপ্টেম্বরে সিপিএমের এই দলীয় কার্যালয়েই হামলা চালায় মাওবাদীরা। ওই পর্বে সদর ব্লকের ধেড়ুয়া, চাঁদড়া ও তার আশপাশে প্রভাব বাড়ায় জনগণের কমিটি ও মাওবাদীরা। এখন অবশ্য এলাকায় মাওবাদী বা সিপিএম, কারও প্রভাব নেই। স্থানীয় মণিদহ গ্রাম পঞ্চায়েত খাতায়কলমে সিপিএমের দখলে থাকলেও গোটা এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে তৃণমূল। |
|
|
|
|
|