ডার্বি ম্যাচ করার জন্য তো নয়ই, যে কোনও ফুটবল ম্যাচ করার পক্ষেই যুবভারতী এখন বিপজ্জনক। ফুটবলারদের কাছে তো বধ্যভূমি।
আজ শুক্রবার যুবভারতীতে বহু প্রতিশ্রুত ফ্লাডলাইট জ্বেলে পরীক্ষা করা হবে। দেখবেন শিল্ডের ম্যাচ কমিশনার। ১৪ মাস আগে কলকাতা লিগের ডার্বি চলাকালীন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে বড় গণ্ডগোল হয়েছিল। সেই ঘটনার পর ফের আলো জ্বলবে আজ। কিন্তু রবিবারের আই এফ এ শিল্ড ডার্বির জন্য যুবভারতী কি আদোও প্রস্তুত?
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, লিওনেল মেসি খেলে যাওয়ার পর গত দেড় বছরে সে ভাবে কোনও পরিচর্যাই হয়নি কৃত্রিম ঘাসের। ফলে ফুটবলারদের কাছে এখন বিভীষিকা এই স্টেডিয়াম। এমনিতেই যে টার্ফ পাতা হয়েছে, তা নিম্নমানের। বহু ব্যবহারে ঘাসগুলি টার্ফের সঙ্গে মিশে গিয়েছে। নীচ থেকে উঠে আসছে কালো রঙের গুড়ো পদার্থ। ফলে বল ঠিকমতো লাফাচ্ছেই না। জড়িয়ে গিয়ে জমাট বেধে গিয়েছে ঘাস। এই শক্ত মাঠে খেলতে গেলে ওডাফা-চিডি-মেহতাব-নবিদের পেশিতে টান ধরতেই পারে।
আর্জেন্তিনা-ভেনেজুয়েলা ম্যাচের আগে মেসিদের তোপের হাত থেকে বাঁচাতে সংগঠকরা গাঁটের কড়ি খরচ করে মেশিন এনে শুয়ে পড়া ঘাসে ‘চিরুনি’ চালিয়ে সোজা করেছিলেন। তার পর আর কিছুই হয়নি। মাঠের তাপ কমাতে এত দিন শুধুই জল ঢেলে ঢেলে ম্যাচ হয়ে গিয়েছে। কৃত্রিম ঘাসের পরিচর্যাই হয়নি। নিট ফল, খেলতে নামলেই চোট পাচ্ছেন ফুটবলাররা। |
মাঠের বাইরের অবস্থাও খুব খারাপ। বৃহস্পতিবার যুবভারতীতে গিয়ে দেখা গেল যুব আবাসের সামনে, তরণী মাঝির ঘাটের আশপাশে, গ্যালারির অন্তত দশটি জায়গায় ভাঙা ইট, কংক্রিটের ভাঙা চাই ডাঁই করে রাখা। বাথরুমগুলিও ভাঙা-চোরা। ডার্বি ম্যাচে প্রায় ৮৩ হাজার টিকিট ছাপিয়েছে আই এফ এ। দুই ক্লাবের সদস্য, ডোনার মেম্বার নিয়ে নব্বই হাজারের কাছাকাছি দর্শক উপস্থিত থাকবেন ওডাফা বনাম ওপারাদের লড়াই দেখতে, আশা আই এফ এ কর্তাদের। ঝামেলা এড়াতে গ্যালারির মাঝে মাঝে চেয়ার ফাঁকা রাখা হচ্ছে। কিন্তু স্টেডিয়ামে বা গ্যালারিতে যে ভাবে ইটের টুকরো ছড়িয়ে আছে তা যে কোনও মুহূর্তে মাঠে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। আই এফ এ কর্তারা অবশ্য ইট-বোতল জমে থাকা জায়গাগুলির একটা তালিকা তৈরি করে জমা দিচ্ছেন স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষের কাছে। স্টেডিয়ামের দায়িত্বে থাকা কর্তাদের যা হাল, তাতে কতটা সুরাহা হবে, সন্দেহ।
আই এফ এ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনার সময় পুলিশ কর্তারা আশ্বাস দিয়েছেন, যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশ থাকবে। আই এফ এ-র পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছিল বিদেশে যেমন হয়, তেমনই মাঠের ভিতরের পুলিশ যেন গ্যালারির দিকে মুখ করে থাকে। এক পুলিশ কর্তা তার উত্তরে বলে দেন, “গ্যালারির দিকে মুখ করে থাকলে কোনও লাভ হয় না! ”
২ এপ্রিল আই পি এলের উদ্বোধন অনুষ্ঠান। তার প্রস্তুতির জন্যই শিল্ডের সেমিফাইনাল ও ফাইনাল রাতে করার অনুমতি দিয়েছে ক্রীড়া দফতর। কিন্তু ট্রেভর মর্গ্যান বনাম করিম বেঞ্চারিফার দলের এই যুদ্ধ বাঁশি মুখে সামলাবেন কে? সম্ভবত কেরলের রেফারি সন্তোষ। ফেডারেশন রেফারিদের যে প্যানেল তৈরি করতে পাঠিয়েছে, তাতে ফিফা প্যানেলের রেফারি একমাত্র সন্তোষই। যিনি আই লিগের শেষ ডার্বি খেলিয়েছিলেন। তার সঙ্গে সহকারীরা অবশ্য কেউই ফিফা প্যানেলের নন। অজিত মিতাই, আর মাসুম, এস এস পন্ডারা নিয়মিত আই লিগে খেলান।
|