দিল্লি বিমানবন্দরের তিন নম্বর টার্মিনাল চালু করার সময় সমস্যা দেখা গিয়েছিল। কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা সত্যি করে প্রায় একই সমস্যা দেখা গেল কলকাতা বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনালেও।
বুধ ও বৃহস্পতিবার, পরপর দু’দিন নতুন টার্মিনালে নাকাল হলেন যাত্রীরা। বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে দিল্লি যাওয়ার পথে দুর্ভোগে পড়েন রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায়, ডিভিসি-র চেয়ারম্যান আর এন সেনের মতো অনেকেই। সওয়া ৮টার বিমান সাড়ে ১০টাতেও ছাড়েনি। অভিযোগ, এত দেরি হওয়া সত্ত্বেও যাত্রীদের জন্য কোনও পরিষেবার ব্যবস্থা ছিল না। অশোকবাবু বলেন, “নতুন টার্মিনালে আমাদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। খাবার তো দূরের কথা, একটু জলও ছিল না। অসুস্থ যাত্রী এবং বাচ্চারা অসহায় হয়ে পড়েন।” সন্ধ্যায় মুম্বই থেকে এসে এয়ার ইন্ডিয়ার শতাধিক যাত্রী আটকে পড়েন এরোব্রিজে। |
বুধবার রাতের সমস্যাটা এর থেকে কম ভয়াবহ ছিল না। ওই রাতে নিউ ইয়র্ক থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার কলকাতার বিমান (ভায়া দিল্লি) ৩০ মিনিট দেরিতে আসে। তার পরেও ২০ মিনিটের বেশি যাত্রীদের আটকে থাকতে হয় নয়া টার্মিনালে। বিমানটিতে ১৩৮ জন যাত্রী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে কয়েক জন জাপানিও ছিলেন বলে জানান অন্যতম যাত্রী ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষক অরূপ সরকার।
দিল্লি থেকে বিমানটির ছাড়ার কথা ছিল রাত ৮টা ২০ মিনিটে। কিন্তু ছাড়ে রাত ৮টা ৫০ মিনিটে। বিমানটি রাত ১০টা ৪০ মিনিটে কলকাতায় নামে বলে অরূপবাবু জানান। বিমানটি নেমে এরোব্রিজে এসে দাঁড়ায়। সেখান থেকে নতুন টার্মিনাল হয়ে দোতলার র্যাম্প দিয়ে বেরোনোর জন্য দরজার কাছে গিয়ে তাঁরা দেখেন, দরজাটি ভিতর থেকে তালাবন্ধ। তখন তাঁরা তেতলার দরজা দিয়ে বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। দেখা যায়, সেই দরজাও বাইরে থেকে তালা দেওয়া। কাচের দরজা দিয়ে তাঁরা বাইরে তাকিয়ে দেখেন, কেউ কোথাও নেই। এ ভাবে প্রায় ২০ মিনিট কাটার পরে এক সিআইএসএফ জওয়ান দরজার কাছে আসেন। তিনি কাচের দরজার ও-পারে যাত্রীদের দেখে অবাক হয়ে যান। যাত্রীরা তাঁকে সব জানান। তিনি একগোছা চাবি এনে তিন-চার বারের চেষ্টায় তালা খোলেন। দরজা খোলা গেলেও সেখান দিয়ে বাইরে যাওয়া যাবে না বলে জানান ওই জওয়ান। তিনি যাত্রীদের নিয়ে দোতলায় গিয়ে দরজার তালা খোলার পরে তাঁরা বেরোতে পেরেছেন বলে জানান অরূপবাবু।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, মূলত সমন্বয়ের অভাবেই এই হয়রানি হয়েছে। গত ১১ মার্চ বিভিন্ন বিমান সংস্থা নতুন টার্মিনালে উড়ান শুরু করেছে। এ দিন এয়ার ইন্ডিয়া নতুন টার্মিনালে তাদের উড়ান শুরু করে। রাতে দিল্লি থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিমানটি ১৪ নম্বর এয়ারোব্রিজে আসছে বলে বিমানবন্দরে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু বিমানটিকে ১৬ নম্বর এয়ারোব্রিজে এনে দাঁড় করানো হয় এবং তার ফলেই এই সমস্যা হয়।
কেন এত সমস্যা?
বিমানবন্দরের অধিকর্তা বিপি শর্মা রাতে জানান, “একসঙ্গে তিনটি টার্মিনাল চালু রাখতে গিয়ে সমস্যা হচ্ছে কর্মীর অভাবে। লোকাভাবেই এই ধরনের অসুবিধা দেখা দিচ্ছে। আশা করছি, শুক্রবার নতুন টার্মিনাল থেকে সব বিমান সংস্থার উড়ান চালু হয়ে যাওয়ার পরে দু’তিন দিনের মধ্যে সমস্যা মিটে যাবে।” |