আগামী তিন মাস জিমে কী করবেন চড়চড়ে রোদ, তেতে ওঠা গরম। কিন্তু তাই বলে ওয়ার্কআউট কেন থেমে থাকবে!
গ্রীষ্মকালীন ওয়ার্কআউটের রেসিপি দিলেন ফিটনেস বিশেষজ্ঞ চিন্ময় রায়
‘উফ্ কী গরম’ বলার দিন হাজির। কী ভাবছেন ওয়ার্কআউট-করিয়েরা? গরমে রোজ ওয়ার্কআউট মানে তো বেশ চাপের ব্যাপার! আপনার ওয়ার্কআউট রেজিমে সামান্য কিছু বদল এনেই দেখুন না। চনমনে লাগবেই লাগবে।
ব্যায়াম সারুন আধঘণ্টায়
লম্বা সময়ের ওয়ার্কআউটকে রোজের রুটিন থেকে ছুটি দিয়ে দিন। এতে শরীর দ্রুত এনার্জি হারিয়ে ফেলে। কারণটা অবশ্যই গরমের মাত্রাতিরিক্ত আর্দ্রতা। কিছু দিন আগেও যে ওয়ার্কআউট করতে ঘণ্টাখানেক সময় নিয়েছেন, এখন সেটা সেরে ফেলুন ৩৫-৪০ মিনিটের মধ্যে।
দৌড় শেষ সকাল সাতটায়
অনেকেই একটু বেশিই দৌড়তে পছন্দ করেন। এঁদের উদ্দেশ্যে বলা যে দৌড় শেষ করার চেষ্টা করুন সকাল সাতটার ভিতর। চড়া রোদের হাত থেকে বাঁচবেন। তেমনই এনার্জির মাত্রাও থাকবে অনেক বেশি। তবে দৌড়োনোর ওয়ার্কআউটের মধ্যে কিছু বৈচিত্র আনতে পারলে লাভ আপনারই।
খেলতে খেলতে ড্রিল
মাঠে বা বাড়ির লনের দু’প্রান্তে কুড়ি মিটার ব্যবধানে দু’টো জলের বোতল রাখুন। যে প্রান্ত থেকে দৌড়বেন ঠিক করেছেন, তার ঠিক বিপরীত প্রান্তে রাখুন একটা ক্রিকেট বল। দৌড়ে অন্য প্রান্তে গিয়ে বল সংগ্রহ করে আবার অন্য প্রান্তে বলটা নিয়ে রাখুন। এটা খেলার মাধ্যমে করা যায় এমন একটা ড্রিল। করতে হবে এক মিনিট। এবং মোট দশ বার দৌড়তে হবে। মাঝে দু’মিনিট বিশ্রাম নিন। আরও পাঁচ বার একই ভাবে রিপিট করুন।
একই ব্যবধানে বাস্কেট বল ব্যবহার করেও করা যায় ওয়ার্কআউটটা।
বাস্কেট বলটাকে ড্রপ খাইয়ে এক প্রান্ত থেকে নিয়ে যান আরেক প্রান্তে। আবার ফেরত আনুন। পাঁচ বার রিপিট করুন।
ফুটবল নিয়েও করা যায় এই ওয়ার্কআউট। সেক্ষেত্রে বলটা পায়ে করে নিয়ে এক প্রান্ত থেকে যেতে হবে অন্য প্রান্তে।
এই ওয়ার্কআউটে প্রচুর ক্যালোরি ঝরিয়ে ফেলতে পারেন।
বিপাশা বসু
নতুন যে সব
বাড়ির লনে মোটাসোটা গাছ থাকলে, তার ডালের সঙ্গে শক্ত করে দড়ি বেঁধে করতে পারেন ‘রোপ ক্লাইম্বিং’। তবে এই ওয়ার্কআউটটা করতে গেলে শরীর হতে হবে অসম্ভব ফিট। এতটা এক্সপেরিমেন্ট করতে না চাইলে ৩০ সেকেন্ড সময় দিয়ে করে নিতে পারেন ‘জাম্পিং জ্যাক’-এর মতো ওয়ার্কআউট।
দৌড়ের ক্লান্তি রিকভারিতে শান্তি
গরমের সময় দৌড়তে গিয়ে শরীর প্রচুর এনার্জি খুইয়ে ফেলে।
রিকভারির মাধ্যমেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। দৌড়তে গিয়ে পায়ের পেশি (যেমন হ্যামস্ট্রিং) থাই এবং হিপের পেশি যথেষ্ট ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তাই কুল ডাউন স্ট্রেচ তো করতেই হবে। দেখবেন মুহূতের্র মধ্যে কেমন ঝরঝরে হয়ে উঠেছেন।
শক্তি বাড়াতে জলের বোতল
বাইরে গিয়ে দৌড়োনোর পাশাপাশি শক্তি বাড়ানোর ওয়ার্কআউটও করুন। খালি হাতে পার্কে গিয়ে করে ফেলতে পারেন শরীরের ওপরের অংশের পুশ আপ এবং রোটেশন, জলের বোতল হাতে শোল্ডারপ্রেস বা উডচপের মতো ওয়ার্কআউট। সপ্তাহে একদিন ১০-১২ বার করুন।
সপ্তাহের অন্য আর এক দিন শরীরের নীচের অংশের জন্য করুন জলের বোতল নিয়ে স্কোয়াট, এক পায়ে ডেডলিফট বা জলের বোতল নিয়ে লাঞ্জ। আগের মতোই এগুলো করুন ১০-১২ বার। তিন বার করে রিপিটও করতে হবে।
বরফ দাওয়াই
গরমে শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা অনেকটাই বেড়ে যায়। হতে পারে নানা বিপত্তি। আউটডোরে বেশি তাপমাত্রায় ওয়ার্কআউট করলে হতে পারে ‘হিট ক্র্যাম্প’ বা ‘হিট এক্সহশন’।
ক্লান্ত হয়ে পেশিতে (কাফ মাসলের পেশি, পেটের পেশি বা হ্যামস্ট্রিংয়ের পেশি) ব্যথা হয় আর টান পড়ে। পোশাকি ভাষায় ‘হিট ক্র্যাম্প’ বলেই তা পরিচিত। আর ‘হিট এক্সহশন’ হলে শরীরের তাপমাত্রা ১০১-১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট অবধি উঠে যেতে পারে। পেটে, ঘাড়ে বা বগলে আইসব্যাগ দিলে সমস্যা কমে যাবে অনেকটাই।
তাই ওয়ার্কআউট করার সময় পনেরো মিনিট অন্তর জল খান। এতে শরীরে জলের পরিমাণ যেমন ঠিক থাকবে, ক্লান্তিও আসবে কম। বাড়িতে ফিরে ঠান্ডা জলে স্নান করাটাও আর এক মোক্ষম দাওয়াই।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website
may be copied or reproduced without permission.