|
|
|
|
অপহরণ-খুনে ধৃত প্রাক্তন জঙ্গি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে নেপালের ব্যবসায়ী অপহরণ-খুনে যুক্ত থাকার অভিযোগে পুলিশ আলফার প্রাক্তন এক জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে দিল্লিগামী অবোধ অসম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম প্রবীণ দাস ওরফে রাজীব রায়। তার বাড়ি অসমের গুয়াহাটির শিলপুখুরি এলাকায়। তিনি বেশ কিছুদিন ধরে ভক্তিনগর থানার নিরঞ্জনগর এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ২০০১ সালে অসম পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন ওই আলফা জঙ্গি। পুলিশের দাবি, নেপালের ব্যবসায়ী গঙ্গাবিষাণ রাঠী (৬৯) এবং নেপাল শিবসেনা দলের প্রধান চন্দ্রপ্রকাশ চৌরেল (৪৫) খুনে সরাসরি যুক্ত ছিলেন প্রবীণ।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার বলেন, “ওই ঘটনায় তিনজনকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রবীণের নাম পাওয়া যায়। এদিন তিনি একটি ট্রেনে অসম থেকে দিল্লি যাচ্ছিলেন। সেই সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়।” পুলিশ জানতে পেরেছে, নেপালের ব্যবসায়ী গঙ্গাবিষাণ রাঠীকে অপহরণ করে সাড়ে তিন কোটি টাকা আদায়ের ছক কষে মাটিগাড়ার উত্তরায়ণের বাসিন্দা সুরেন্দ্রকুমার মিশ্র, প্রধাননগরের অভিজিৎ বসু, প্রবীণ এবং চৌরেল। রাঠী শিবসেনা নেতা এবং সুরেন্দ্রের পূর্ব পরিচিত ছিল। ছক মতোই ৮ জানুয়ারি চৌরেল শিলিগুড়িতে পৌঁছয়। সেই সময় তাঁকে সরিয়ে দেয় পুরো টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে বাকি তিনজন। সেই হিসেবেই একটি জমি দেখানোর নাম করে সুকনার জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে চৌরেলকে খুন করে তারা। পরে ১০ জানুয়ারি রাঠী শিলিগুড়িতে পৌঁছলে গাড়িতেই তাঁকেই শ্বাসরোধ করে খুন করে সুকনার জঙ্গলে ফেলে দেয় অভিযুক্তরা। রাঠীর মোবাইল ফোন থেকেই তাঁর বাড়িতে ফোন করে সাড়ে তিন কোটি টাকা দাবি করে ধৃতরা। ৫০ কোটি টাকায় রফা হয়। ২৫ জানুয়ারি উত্তরায়ণে দুষ্কৃতীদের হাতে ৫০ লক্ষ টাকা তুলে দেয় রাঠীর পরিবারের সদস্যরা। তার পরেও রাঠী না ফেরায় পুলিশকে বিষয়টি জানান অপহৃতের পরিবারের লোকজন। ২৬ জানুয়ারি সকালে বোলপুরে সুরেন্দ্র ও অভিজিৎকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে সুরেন্দ্রের স্ত্রী মণিকা দেবীকে গ্রেফতার করা হয়।
তদন্তকারী পুলিশ অফিসারেরা জানান, দু’জনকে খুন করার যে কাজে একটি ছোট গাড়ি ব্যবহার করা হয়। খুনের সময় দু’টি গাড়িই চালাচ্ছিল প্রবীণ। ঘটনার সুরেন্দ্র ও অভিজিৎ ধরা পড়ে গেলেও অসমে পালিয়ে যায় প্রবীণ। তার মোবাইল ট্র্যাক করছিল পুলিশ। এ দিন তারা জানতে পারে তারা দিল্লি যাচ্ছে। এনজেপি স্টেশনে ট্রেন পৌছতেই তাকে গ্রেফতার করে শিলিগুড়ি কমিশনারেটের গোয়েন্দা শাখার কর্মীরা। এ দিন ধৃতকে আদালতে তোলা হলে ১২ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। |
|
|
|
|
|