একটি বরফ কারখানার পাইপ ফেটে বেরিয়ে আসা গ্যাসে মঙ্গলবার রাতে মন্দিরবাজারের পোলেরহাট গ্রামে অসুস্থ হয়ে পড়েন এক শিশু ও তিন মহিলা-সহ ১২ জন। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন ওই কারখানার শ্রমিক। অসুস্থদের স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশই পাইপটি মেরামতিতে উদ্যোগী হয়। ওই কারখানার বৈধ কাগজপত্র রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। কারখানার মালিক বা ম্যানেজার বুধবার ছিলেন না। কর্মীরা এ ব্যাপারে কোনও কথা বলতে রাজি হননি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পাঁচেক আগেও ওই কারখানায় পাইপ ফেটে গ্যাস বেরিয়ে আসায় কয়েক জন গ্রামবাসী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ কারখানায় কাজ হচ্ছিল। তখনই একটি পাইপ বিকট শব্দে ফাটে। অল্প আগুনও ধরে যায়। বেরিয়ে আসা গ্যাসে অসুস্থ হয়ে পড়েন পাঁচ শ্রমিক। খবর যায় পুলিশ এবং ডায়মন্ড হারবার ও বারুইপুর দমকল কেন্দ্রে। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসে। তার আগেই ঝাঁঝালো গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেকে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন রাস্তায়। দমকল এসে আগুন নেভায়। পুলিশ মিস্ত্রি নিয়ে এসে ফাটা পাইপটি মেরামত করে। ওই রাতেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে অসুস্থেরা বাড়ি ফিরে যান।
বুধবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, কারখানার কাজ বন্ধ রয়েছে। দেওয়ালের কয়েক জায়গায় ফাটল ধরেছে। গ্যাসের গন্ধ তখনও রয়েছে। কারখানার মালিক বা ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁরা কারখানায় ছিলেন না। গ্যাসে অসুস্থ হয়ে পড়া ওই গ্রামের তানজিলা বিবি বলেন, “আমার শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। গলা-বুক জ্বালা করছিল।” পল্লব হালদার নামে আর এক গ্রামবাসী বলেন, “সবেমাত্র ঘুমোতে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ কারখানায় বিকট শব্দ। গ্যাসের গন্ধ পেয়েই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ি।”
পুলিশ ও দমকলের অনুমান, পাইপ ফেটে বেরিয়ে এসেছিল অ্যামোনিয়া গ্যাস। কারখানাটি অবৈধ ভাবে চলছি বলে অভিযোগ তুলেছেন মন্দিরবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের দিলীপ জাটুয়া। তিনি বলেন, “ওই কারখানাটির ব্যাপারে তদন্তের জন্য প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছি। ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, “কারখানাটির কাগজপত্র যথাযথ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |