|
|
|
|
শিক্ষাই আলো সুশান্তর জীবনে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • এগরা |
|
‘চোখের আলোয় দেখেছিলেম চোখের বাহিরে...’
গুনগুন করেন সুশান্ত। জন্মান্ধ হওয়া সত্ত্বেও প্রবল ইচ্ছাশক্তির বশে প্রাথমিক-মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে এ বার উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা দিচ্ছেন এগরার হামিরপুর গ্রামের বাসিন্দা সুশান্ত মণ্ডল। বাসুদেবপুর হরিপ্রিয়া ইনসস্টিটিউশনের এই ছাত্রকে নিয়ে বড় আশা স্কুলের শিক্ষকদেরও।
তফসিলি-দুঃস্থ পরিবার। বাবা গোপীনাথ চাষবাস ও দিনমজুরি করেন। কলকাতা এক কাপড়ের দোকানে নাম মাত্র মজুরিতে কাজ করে ভাই কেশব। তিন ভাই-বোন-সহ পাঁচ জনের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরনোর দশা। এমন অবস্থাতেও হার মানেননি সুশান্ত। অর্জিত সাফল্যে আত্মবিশ্বাসী সুশান্তর কথায়, “বাবা-মা পাশে না থাকলে পড়াশুনোর শুরুটাই হত না।”
চৈতন্যপুর বিবেকানন্দ মিশন আশ্রম আবাসিক দৃষ্টিহীন শিক্ষায়তনে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়লেও হাত অতিরিক্ত কাঁপায় ব্রেইল পদ্ধতির পরীক্ষায় আশানুরূপ সাফল্য আসছিল না সুশান্তর। |
|
রাইটার নিয়ে পরীক্ষা সুশান্তর। ছবি: কৌশিক মিশ্র। |
নবম ও দশম শ্রেণিতে ও কলকাতার বৈদ্যপাড়া স্কুলে ভর্তি হয়। দৃষ্টিহীনদের ছাত্রাবাসে থেকে পড়াশুনো করে মাধ্যমিকে ৬৬ শতাংশ নম্বর পান। কিন্তু, ওই স্কুলে রিডার ও টেপ রেকর্ডার-এর তেমন সুযোগ না থাকায় উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হয় বাসুদেবপুর স্কুলে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক তরুণ মাইতি বলেন, “সুশান্ত খুব মেধাবী। পড়াশুনার প্রতি ওর আগ্রহও প্রবল।” সুশান্তর প্রিয় বিষয় ইতিহাস। রবীন্দ্রসঙ্গীত ও বাউল গাইতে, শুনতে ভলোবাসেন। এমনকী ‘রাইটার’ পেলে গল্প-কবিতা লেখারও ইচ্ছা আছে সুশান্তর। মা রেনুবালাদেবী বলে, “ছোটবেলায় ওকে নিয়ে আমাদের খুব দুশ্চিন্তা ছিল। কিন্তু, ধাপে ধাপে ও নিজেকে অনেক উন্নত করেছে।”
প্রথম দিনের পরীক্ষা দিয়ে আত্মবিশ্বাসী সুশান্ত বলেন, “আশা করি অন্য পরীক্ষাগুলোও ভালই হবে।” |
|
|
|
|
|