আনন্দবাজারে অসি-যুদ্ধে এ দেশের পোড়খাওয়া সেনাপতি
অস্ট্রেলিয়ার চরিত্র সত্যিই ইস্পাত কঠিন
না মিথ্যে বড়াই, এ বার বোঝা যাবে
ত কয়েক দিনে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটে যা যা ঘটল, তাতে অবাক হয়েছি বললেও কম বলা হয়। তবে ও সব বাদ দিয়ে আগে বরং মাঠের মধ্যের আলোচনাটা সেরে ফেলা যাক।
গত কয়েক দিন ধরে যে তুমুল ঝড়-ঝাপটা গেল, সে সব সামলে মাইকেল ক্লার্করা মোহালিতে ভারতকে আদৌ পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারবে কি না, এটাই এখন কোটি টাকার প্রশ্ন। তা করতে হলে অস্ট্রেলীয়দের শুধু নিজেদের সেরাটা দিলেই চলবে না, তার চেয়েও বেশি কিছু দিতে হবে।
২০০২ হেডিংলে টেস্টের আগের সপ্তাহ, অনিল কুম্বলের নেতৃত্বে পারথ টেস্টের আগের সাত দিন এবং ২০০৩ বিশ্বকাপের ঠিক আগের সময়টার কথা মনে পড়ছে। প্রতিবারেই মনে হয়েছিল সব কিছু ভেঙে চুরে যাবে। কিন্তু মাত্র দু’দিন, মাত্র দু’দিনের মধ্যেই আবার সব ঠিক হয়ে গিয়েছে। মাঠে নেমে দুর্দান্ত খেলেছে গোটা দল। এই অবস্থায় দেখেছি খেলোয়াড়দের মধ্যে হঠাৎ প্রচুর মনোবল চলে আসে। নিজেদের উজাড় করে দিতে মরিয়া হয়ে ওঠে সবাই। দুনিয়াকে জবাব দেওয়ার একটা সাঙ্ঘাতিক প্রবণতা তৈরি হয়ে যায়।
জানি না অস্ট্রেলীয় শিবিরে এমন প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে কি না। তবে দক্ষতার বিশ্লেষণ করে বলছি, শেষ দুটো টেস্টে ওদের লড়াইয়ে ফেরার ক্ষমতা আছে বলে মনে হয় না। ঘূর্ণি বলের বিরুদ্ধে ওদের হাবুডুবু খাওয়া তো গোটা দুনিয়া দেখেছে। বাকি দুই টেস্টেও যে ওদের এই অভাব পূরণ হবে, এমনটা ভাবা বেশ কঠিন। এখন পর্যন্ত ওদের টপ অর্ডার তেমন রান পায়নি। একই সেশনে ৬-৭টা উইকেট খুইয়েছে। দু-এক জন নয়, গোটা দলটাই বেশ চাপে।
অনেকে বলছেন এটাই ভারতে আসা সবচেয়ে জঘন্য অস্ট্রেলিয়া দল। আমি এতটা কট্টর হতে পারছি না।
বিতর্কিত জুটি। মোহালিতে আর্থার-ক্লার্ক। বুধবার। ছবি: উৎপল সরকার
আমার মতে, এটা গত ১৩ বছরে ভারতে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স। ব্যাটিং নিয়ে সমস্যার সঙ্গে রয়েছে স্পিনার-সমস্যাও। ভারতে আসা কোনও দলের স্পিনাররা যদি ঠিকঠাক বল ঘোরাতে না পারে, তা হলে তো সেই দলের ক্যাপ্টেনের চরম দুঃসময় আসবেই। কাউকে অশ্রদ্ধা না করেই বলছি, এই অস্ট্রেলিয়া দলের তিন স্পিনারের একটা টেস্টে কুড়ি উইকেট নেওয়ার ক্ষমতা নেই। তা হলে আর ওরা ফিরে আসবে কী করে?
দলের প্রশাসনও এত দুর্বল কেন, কে জানে। ক্রিকেটারদের শাস্তি দেওয়া নতুন নয়। শাস্তিও যেমন দেওয়া হয়েছে, তেমন কোচ-ক্যাপ্টেন তাদের সঙ্গে কথা বলে ঝামেলা মিটিয়েও নিয়েছে। কিন্তু দলের উন্নতির রাস্তা বাতলানো কিছু কাগজ কোচের হাতে তুলে দিতে না পারার জন্য দল থেকে বাদ দিয়ে দেওয়ার এমন ঘটনা কোনও দিন শুনিনি। নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝেছি, এই সব পরিস্থিতিতে মুখোমুখি আলোচনা অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যা মিটিয়ে দেয়। এক জন বিগড়ে যাওয়া খেলোয়াড়কে ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনার জন্য এর চেয়ে ভাল রাস্তা আর কিছুই নেই। কোচ-অধিনায়কের সম্পর্ক ঠিক রাখার জন্যও এটা খুব জরুরি।
কোনও প্লেয়ারের সেরাটা পাওয়ার জন্য তাকে সতর্ক ভাবে সামলানোটাই কোচের আসল কাজ। মাঠে একটা মানুষকে দরকার হয়, যন্ত্রকে নয়। তাই তাকে মানুষের মতো করেই ব্যবহার করতে হয়। ক্রমশ নিশ্চয়ই জানা যাবে এই সিদ্ধান্তের পিছনে এই একটাই কারণ, না আরও কতগুলো ঘটনাও রয়েছে। মনে হয় না একটা কারণে এত বড় ঘটনা ঘটল।
মোহালির টেস্ট দেখার জন্য মুখিয়ে রয়েছি। অস্ট্রেলিয়ার অনেক বিতর্কিত কোচ ওঁদের দলের ইস্পাত কঠিন মানসিকতা নিয়ে অতীতে অনেক কথা বলেছেন। এই টেস্টেই বুঝতে পারব সে সব সত্যি, না কি কোচেরা স্টিভ ওয়, অ্যালান বর্ডার, রিকি পন্টিংদের পারফরম্যান্সের আলোর নীচে নিজেদের অদক্ষতাকে লুকিয়ে রেখে অযথা বড়াই করে এসেছেন।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.