‘হোয়াট আ নাইট’মঙ্গলবার রাতে তাদের শহরের দলের জয়কে এ ভাবেই বর্ণনা করছে বার্সেলোনার বহুল প্রচারিত সংবাদপত্র ‘মুন্দো দেপোর্তিভো’। জনপ্রিয় ক্রীড়া দৈনিক ডেইলি মারকা-র প্রথম পাতার বিশাল শিরোনামের বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়, ‘বার্সেলোনার প্রত্যাবর্তন’।
প্রত্যাবর্তন বলে প্রত্যাবর্তন! দু’সপ্তাহ আগে সান সিরোয় ০-২ হারের পর এই ম্যাচে বার্সার উপর সে ভাবে ভরসা করতে পারেননি ফুটবল বিশেষজ্ঞরা। মঙ্গলবার রাতে নিজেদের মাঠে যে চার গোলে জিতে কোয়ার্টার ফাইনাল লাইন আপে ঢুকে পড়বেন মেসিরা, তা আন্দাজ করতে পারেননি জুয়াড়িরাও। চমকে যাওয়া ইউরোপীয় ফুটবল মহলের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হচ্ছে, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেতাবই জিতে ফেলেছে বার্সা। তবে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে একটা রেকর্ড করে ফেলেছে মেসির দল। প্রথম লেগে (যেখানে অ্যাওয়ে ম্যাচে নিজেদের কোনও গোল নেই) দু’গোলের ব্যবধান মুছে ফিরতি ম্যাচে জয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এই প্রথম। মেসিও গত রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তাঁর ৫৮তম গোলে পৌঁছে সর্বকালীন সেরা গোলদাতার তালিকায় নিস্তেলরুইকে (৫৬) টপকে দুইয়ে উঠে এলেন। সামনে শুধু রাউল (৭১ গোল)। |
বার্সেলোনা শিবির কতটা উল্লসিত, তা দাভিদ ভিয়ার কথা শুনেই বোঝা যায়। “এই জয়ের দারুণ সেলিব্রেশন হওয়া উচিত। কোয়ার্টার ফাইনালে আমাদের সামনে কারা, ও সব এখন ভাবছিই না। এমন জয়ের রাত শুধু আনন্দ করে কাটাব। এই জয়টা সব সময় মনে রাখার মতো।”
দলের সেরা তারকা লিওনেল মেসিও উচ্ছ্বাসে ভাসছেন। বলছেন, “সমর্থকরা যা চাইছিলেন, তাঁদের তা দিতে পেরে বেশি ভাল লাগছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকার দু’নম্বরে উঠে আসার চেয়েও বেশি আনন্দের এটা। আমাদের দল যে ফর্ম দেখাল, তেমন ফর্ম বজায় থাকলে আমাদের আটকানো মুশকিল।”
মেসি নিজেই যা ফর্মে রয়েছেন, তাতে অভিভূত দলের সহকারী কোচ ইওর্দি রৌরা। “লিও দেখিয়ে দিল ফুটবলটা কী করে খেলতে হয়। যাঁরা ওর ফর্ম নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন, তাঁরা নিশ্চয়ই এই ম্যাচটা দেখলেন।” ম্যাচের শেষ গোলদাতা আলবা বলেছেন, “মিলানের মাত্র একটা গোল পেলেই চলে যেত। কিন্তু আমরা দেখিয়ে দিলাম, কঠিন পরিস্থিতি কী ভাবে সামলাতে হয়। এই জয়টা আমাদের খুব দরকার ছিল। অনেক কিছু প্রমাণ করার ছিল।”
সারা ম্যাচে বার্সেলোনার দাপট ঠিক কী রকম ছিল, তা মিলান কোচ ম্যাসিমিলিয়ানো আলেগ্রির কথাতেই পরিষ্কার। তিনি বলেন, “প্রথম আধ ঘণ্টাতেই বার্সা আমাদের যে রকম চাপে ফেলে দিয়েছিল, তাতেই প্রায় দম বন্ধ হয়ে যায়। আমরা খারাপ খেলেছি ঠিকই। কিন্তু এই জয়ের পুরো কৃতিত্ব ওদের।”
প্রিয় দলের জয়ে ন্যু ক্যাম্পের গ্যালারি যখন উচ্ছ্বাসে ভাসছে, তখন কোচ টিটো ভিলানোভার ক্যানসারের চিকিৎসা চলছে নিউ ইয়র্কে। সেখান থেকেই টিমের কৌশল ঠিক করে দেন সহকারী রৌরার মাধ্যমে। “খেলার পর টিটোর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। দারুণ খুশি। ও তো পারলে এখনই দৌড়ে এখানে চলে আসে,” বলেছেন রৌরা। সম্ভবত ২৫ মার্চ দলের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন টিটো। |