জয়পুরে উদ্ধার ২৯ জন নাবালিকা
শোরও বেশি মদের বোতল, স্টোর রুমে কিছু পচা সব্জি, একটা ভাঙাচোরা শৌচাগার আর একটি মাত্র ঘর। এমনই পরিস্থিতির মধ্যে থেকে মঙ্গলবার ২৯ জন নাবালিকাকে উদ্ধার করল জয়পুর পুলিশ। সকলেরই বয়স ৫ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে।
পুলিশ জানায়, রোজ ভাল খাবার এবং পড়াশোনার ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন দরিদ্র খ্রিস্টান পরিবারের মেয়েদের এনে রাখা হত ‘গ্রেস হোম’ নামে এই খ্রিস্টান প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু এখানকার আবাসিক নাবালিকারা না কখনও স্কুলে যেতে পেরেছে, না কোনও শিক্ষক এই হোমে এসেছেন তাঁদের পড়াতে। এমনকী, কোনও মহিলা ওয়ার্ডেনও নেই এই হোমে। ২৯টি মেয়ের দেখাশোনার দায়িত্ব ১৪ বছরের এক কিশোরের উপরে। নিজেদের বাড়ির লোকেদের সঙ্গে কোনও ভাবে যোগাযোগ রাখার অনুমতি ছিল না এখানকার আবাসিকদের। পরিবারের লোকেরাও ফোন করে খবর নিতে পারতেন না এই নাবালিকাদের।
জয়পুরের একটি কলোনিতে দু’ঘরের একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েই চলছিল হোমটি। সামনেই রয়েছে পার্ক। অথচ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হোমের মেয়েদের কখনও বাইরে খেলতে বেরোতেও দেখা যেত না। হোমে একটি শিশুর মৃত্যু হলে সামনে আসে সমস্যাটা। ওই শিশুর পরিবারের তরফে অভিযোগ যায় পুলিশে। এর পরে এক মাস ধরে হোমটি সম্পর্কে খোঁজখবর নেয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন। পুলিশের মদত নিয়ে এ দিন তারাই তল্লাশি চালায় ওই হোমে। উদ্ধার হয় ওই ২৯ নাবালিকা। এত কিছুর পিছনে যার হাত, হোমের সেই মালিক জেকব জনও আটক হন এ দিন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
রাজস্থানের শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন দীপক কালরা এ দিন বলেন, “একটি হল ঘরের মধ্যে সবক’টি মেয়ে থাকত। নিজেদের মতো পড়াশোনা করত। কোনও মহিলা ওয়ার্ডেন তো নেই-ই, ওদের দেখাশোনার জন্য কোনও পরিচারিকাও নেই এই হোমে।” তিনি আরও জানান, হোমটির নথিভুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে পারেননি মালিক। যদিও এমন সব হোমের ক্ষেত্রে সরকারি অনুমোদন প্রয়োজন। তার নথিভুক্তির কাগজপত্র থাকার কথা। হোমটি বেআইনি ভাবেই চলছিল। সরকারি নথিভুক্ত করানো থাকলে, সরকারের তরফে নিয়মিত পরিদর্শন হত। দেখা হত, আবাসিক নাবালিকারা ঠিক মতো যত্ন পাচ্ছে কি না। কিন্তু সে সবের ব্যবস্থাই ছিল না।
জয়পুরের অন্য এক প্রান্তে ছোট ছোট ছেলেদের জন্যও এমন আর একটি হোম চালান জেকব জন। সেখানকার ১৫ জন আবাসিককেও এ দিন উদ্ধার করে পুলিশ। তাদের সকলকে শহরের বিভিন্ন জায়গায় আপাতত রাখা হয়েছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, উদ্ধার হওয়া ছেলে-মেয়েদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। করানো হবে কাউন্সেলিংও।
এই ‘গ্রেস হোম’ চালানোর জন্য কোথা থেকে টাকা পেতেন জেকব, তা এখনও পরিষ্কার নয়। হোমের বাইরে নোটিস বোর্ডে বিদেশি অতিথিদের সঙ্গে আবাসিকদের ছবি দেখে পুলিশের ধারণা, বিদেশ থেকে অর্থ সাহায্য আসত এই হোমের জন্য। তবে এ বিষয়ে আরও তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.