ছাত্র অবস্থা থেকেই সিউড়ি ও আশেপাশের পুরনো বনেদি বাড়িতে যাতায়াত ছিল। তার সূত্রেই ওই সব বাড়ির সংগ্রহে থাকা পুরনো সামগ্রীর প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন সিউড়ির বাসিন্দা, বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী সুমার সিংহ। সেই থেকেই ওই সামগ্রীগুলির ইতিহাস সংগ্রহ করতে শুরু করেছিলেন তিনি। পরে চাকরি পেয়েছিলেন সিউড়ি কালেক্টরেটে। কর্মরত অবস্থায় দফতরের গ্রন্থাগারে গিয়ে পুরনো বইপত্র পড়তে শুরু করেছিলেন। কিন্তু সেই জানা শুধু নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে চাননি সুমারবাবু। ফলে আঞ্চলিক ইতিহাস সম্পর্কে নিজে জানতে এবং অন্যদেরও জানাতে মনের মধ্যে তাগিদ অনুভব করেন। তারপর ২০০০ সালে চাকরি থেকে অবসর। অবসরের পরে পুরোদস্তুর সিউড়ির প্রাচীন ইতিহাস নিয়ে গবেষণায় মন দেন সুমারবাবু। দিনের পর দিন পড়ে থাকতেন সিউড়ি কালেক্টরেটের মহাফেজখানায়। দুষ্প্রাপ্য সব নথি পড়ে তার লিখে রাখতে শুরু করলেন তিনি।
ইংরেজ শাসনকালে সিউড়ি ছিল ইংরেজদের কাজকর্মের জায়গা। সেই সময়ের তথ্য সংগ্রহ করায় মন দেন সুমারবাবু। নিজে টাকা খরচ করে প্রকাশ করেন সিউড়ির ইতিহাস নিয়ে একটি দুর্মূল্য গ্রন্থ। পরে অবশ্য কলকাতার একটি প্রকাশনী সংস্থা গ্রন্থটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ করেছে। সুমারবাবু সাম্প্রতিক লেখা প্রকাশিত হয়েছে স্থানীয় একটি লিটল ম্যাগাজিনে। বীরভূমের প্রাচীন ও বর্তমান শিল্প ব্যবস্থা নিয়ে তাঁর লেখা ওই নিবন্ধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। প্রবীণ গবেষক এখন ব্যস্ত বীরভূমের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে লেখালেখিতে।
|
আগেই রাজ্যের নাট্য জগতে বিশেষ সুনাম কামিয়েছিল লাভপুরের ‘বীরভূম সংস্কৃতি বাহিনী’। এ বার রাজ্য ছাড়িয়ে নয়া দিল্লিতেও পা রাখল এই সংস্থা। সম্প্রতি সেখানে একটি আমন্ত্রণমূলক নাটক প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছিল লাভপুরের এই দলটি। যার উদ্যোক্তা ছিল নয়া দিল্লির কালীবাড়ি ও কেন্দ্র সরকারের সঙ্গীত নাটক অকাদেমি। প্রতিযোগিতায় সংস্থা তাঁদের বহু চর্চিত নাটক ‘নাগিনীকন্যার কাহিনী’ (তারাশঙ্করের একই শিরোনামের গল্পটি অবলম্বনে রচিত) মঞ্চস্থ করে। প্রতিযোগিতায় কোনও পুরস্কার না পেলেও নাটকটি সেখানকার দর্শকদের সমাদার পেয়েছে। অনুষ্ঠানে একুশটি রাজ্যের বিভিন্ন নাট্যসংস্থাও নিজেদের নাটক মঞ্চস্থ করে। নয়া দিল্লি থেকে ফিরেই লাভপুরের ‘বীরভূম সংস্কৃতি বাহিনী’ রওনা দিয়েছে কেরলের কোচিকোট শহরে। নেহরু যুব কেন্দ্রের আমন্ত্রণে ওই শহরে আগামী ১৪ মার্চ বীরভূমের সংস্থাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিয়ে নানা অনুষ্ঠান করবে।
|
এই প্রথম বিশ্বভারতীতে দৃষ্টিহীনদের অনুষ্ঠান। তারই সঙ্গে ‘ডাকঘর’। গত সোমবার সন্ধ্যায় দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের নিয়ে এমনই সব অনুষ্ঠান হয়ে গেল বিশ্বভারতীর লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে। অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল বিশ্বভারতীর দৃষ্টিহীন ছাত্রছাত্রীরা অনুষ্ঠান দিয়ে। শেষে ছিল রবীন্দ্রনাথের ডাকঘর নাটকটি। তাতে অভিনয় করেন কলকাতার দৃষ্টিহীনদের একটি সংস্থা ও কৃষ্ণনগরের হেলেন কেলার স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের সেই প্রযোজনা দর্শকদের মনকে নাড়া দিয়েছে। উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত-সহ বহু বিশিষ্ট জন।
|
সাঁইথিয়ার ‘ভবানীপুর সপ্তপদী সংস্কৃতি সোসাইটি’র আত্মপ্রকাশ হয়েছে মাত্র কয়েক বছর আগেই। ওই সংস্থার জনা কয়েক তরতাজা সদ্য তরুণ-তরুণী সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে মশগুল। এলাকায় তাঁরা নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে দর্শকদের নজর কেড়েছেন। সম্প্রতি সোসাইটি উত্তরপ্রদেশের মাইনপুর শহরে নেহরু যুব কেন্দ্র আয়োজিত এক সপ্তাহের জাতীয় একতা শিবিরে যোগ দিয়েছিল। বাংলার একমাত্র প্রতিনিধি হয়ে সাত দিনের সেই সান্ধ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন তাঁরাই। এ ছাড়া সাফল্য এসেছে ক্যুইজ প্রতিযোগিতাতেও। সোসাইটি পেয়েছে চতুর্থ স্থান। শিবিরে উত্তরপ্রদেশ থেকে তিনটি এবং সাতটি রাজ্যের বিভিন্ন সংস্থা যোগ দিয়েছিল।
|
সংক্ষেপে: বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে সিউড়ি থানার উদ্যোগে এলাকার ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে একটি প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা হল। গত শনিবার স্থানীয় ডিআরডিসি হলে আয়োজিত ওই প্রতিযোগিতায় পঞ্চম-দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৭০ জন পড়ুয়া যোগ দিয়েছিল। |
তথ্য: অরুণ মুখোপাধ্যায়।
ছবি: নিজস্ব চিত্র। |