এখনই বড় পতনের আশঙ্কা নেই বাজারে
যেন ‘ফ্ল্যাশ ফ্লাড’। কোথাও কিছু নেই, হঠাৎই তীব্র স্রোত। এমনটাই ঘটেছে শেয়ার বাজারে গত সপ্তাহে। বাজেটে বাজারের জন্য কোনও বারুদ না-থাকায় সূচক একটু ম্লানই ছিল। উত্থানের কোনওই সঙ্কেত ছিল না দেশের ভিতর থেকে। হঠাৎই ঊর্ধ্বচাপের খবর আসে বিদেশ থেকে। এর পর আর সূচককে ধরে রাখা যায়নি। মঙ্গল থেকে শুক্রবারের মধ্যে সেনসেক্স ওঠে ৭৬৫ পয়েন্ট। পৌঁছে যায় গত এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ জায়গায়। সূচক বাড়লে লগ্নিকারীদের মনে তা স্বস্তি দেয় সন্দেহ নেই। কিন্তু বৈদেশিক কারণে সূচকের হঠাৎ উত্থান হলে ভয় থাকে যে, তা হঠাৎ পড়তেও পারে। দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী না-হলে এবং বিদেশি লগ্নির উপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে থাকলে বাজারে হঠাৎ হঠাৎ উত্থান-পতনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
দেশের ভিতরে এখন এমন কোনও খবর নেই, যা বাজারের চাঙ্গা ভাবকে ধরে রাখতে পারে। ক্ষীণ আশা, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ১৯ মার্চ যদি সুদ কমানোর পথে হাঁটে। এর পর এপ্রিলের মাঝামাঝি শুরু হবে ২০১২-’১৩ সালের আর্থিক ফলাফল তথা ডিভিডেন্ড ঘোষণার পালা। পাশাপাশি, মিলবে বর্ষা সম্পর্কে পূর্বাভাস। সুখের কথা, আশার বাণী শুনিয়েছে রেটিং এজেন্সি ‘মুডিজ’। মুডিজ মনে করে, ২০১২ সালের ৫.১% থেকে বেড়ে ২০১৩ সালে ভারতের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধির হার পৌঁছবে ৬.২ শতাংশে এবং ২০১৪ সালে তা স্পর্শ করবে ৭%। বাস্তবে যদি এমনটি ঘটে, তবে তা অবশ্যই তা বাজারকে শক্তি জোগাবে। মুডিজ অবশ্য এও বলেছে, পাশাপাশি আর্থিক সংস্কার চালিয়ে যেতে হবে। তা না-হলে মূল্যবৃদ্ধি আবার চেপে বসবে।
বিশ্ব বাজার আর কয়েক দিন চাঙ্গা থাকলে সেনসেক্স ফের ২০ হাজার পেরোতে পারে। বড় মাপের পতনের আশঙ্কা এখনই কেউ করছেন না। শেয়ার বাজার আরও খানিকটা উঠবে এবং চাঙ্গা অবস্থা কিছু দিন স্থায়ী হবে, এই আশায় বসে আছে মিউচুয়াল ফান্ড শিল্পও।
শুক্রবার সেবি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ইক্যুইটি শেয়ারের মতো প্রেফারেন্স শেয়ারকেও বাজারে নথিবদ্ধ করা যাবে। প্রেফারেন্স শেয়ারের ডিভিডেন্ড আগে থেকেই নির্দিষ্ট করা থাকে। বছর বছর তার পরিবর্তন হয় না। বন্ডের মতো নির্দিষ্ট মেয়াদও থাকে এই শেয়ারের। মেয়াদ শেষে টাকা ফেরত দেওয়া হয়। ডিভিডেন্ড ও টাকা ফেরতের ব্যাপারে ইক্যুইটি শেয়ারের তুলনায় অগ্রাধিকার থাকায় এই শেয়ারের নাম দেওয়া হয়েছে প্রেফারেন্স শেয়ার। দেশের অগ্রণী সংস্থাগুলি প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যু এবং নথিবদ্ধ করার পথ বেছে নিলে এই শেয়ার জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যদি ১৯ তারিখে রেপো রেট কমায় এবং তার দরুন বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি যদি জমার উপর সুদ হ্রাসের সিদ্ধান্ত নেয়, তবে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এপ্রিলে ডাকঘরের কোনও কোনও প্রকল্পেও সুদ হেরফের করার কথা ভাবা হতে পারে। সুদ হ্রাসের যখন বেশ চাপ আছে, তখন অবশ্য কয়েকটি ব্যাঙ্ক সম্প্রতি ছোট থেকে মাঝারি মেয়াদে সুদ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছে।
সোনার দর একটু একটু করে পড়েই চলেছে। ভবিষ্যতে যাঁদের সোনা প্রয়োজন হবে, তাঁরা বাজার বুঝে ছোট ছোট আকারে সোনা কিনে রাখতে পারেন। যোগ দিতে পারেন স্বর্ণ সঞ্চয় প্রকল্পে। বেশ কিছু দিন হল থমকে আছে ফ্ল্যাটের দামও। নির্মাণ খরচ অনেকটাই বেড়েছে। কিন্তু চাহিদা তেমন না-বাড়ায়, দর সে ভাবে বাড়তে পারছে না। বরং কয়েকটি এলাকায় নতুন মেট্রো প্রকল্প শ্লথ হয়ে পড়ায় সেই সব অঞ্চলে দাম খানিকটা পড়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। রাজ্যে শিল্প, ব্যবসা, কর্মসংস্থান পরিস্থিতির উন্নতি না-হলে বাড়ি/ফ্ল্যাটের চাহিদা খুব একটা বাড়বে বলে মনে হয় না। গৃহনির্মাণ শিল্পের উপর অনেকটা নির্ভর করে সিমেন্ট, ইস্পাত, রং, বৈদ্যুতিক, বৈদ্যুতিন, আসবাব ইত্যাদি শিল্প। অর্থাৎ সামগ্রিক স্বার্থে বাড়ি/ফ্ল্যাটের চাহিদা বৃদ্ধির প্রয়োজন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.