‘সুপারউওম্যান’। ওজনদার এই তকমা ধরে রাখতে হিমশিম জেনারেশন নেক্সট। ঘরে-বাইরে দশভূজা হওয়ার চাপে নাজেহল তাঁরা।
ফলে নিত্য দিনের ইঁদুড় দৌড় থেকে সরে দাঁড়ান অনেকেই। অনিচ্ছা সত্ত্বেও চাকরি ছেড়ে দম নিতে চান। পরিসংখ্যান বলছে সংখ্যাটা বাড়ছে। ইন্টারন্যাশনাল লেবার ফোর্স-এর তথ্য অনুযায়ী দেশে মোট শ্রমিকের মাত্র ২৯% মহিলা। ২০০৪-’০৫ সালে যা ছিল ৩৭%। এমনকী তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পেও মহিলা কর্মী সংখ্যা ২০১০ সালে ছিল ২৬%। ২০১২ সালে তা ২২%। কর্পোরেট মহলেরও নজর এড়ায়নি এই তথ্য। অধিকাংশ সংস্থার মহিলা কর্মী সংক্রান্ত বিশেষ নীতি রয়েছে। তবে বেশির ভাগ খাতায়-কলমে বলেই অভিযোগ। আজ নারী দিবসের পরিপ্রেক্ষিতেও ঘুরে ফিরে আসছে সেই একই প্রশ্ন।
তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে সমীক্ষা অনুযায়ী ৫-১০ বছরের অভিজ্ঞ মহিলাদেরই চাকরি ছাড়ার প্রবণতা বেশি। কারণ এই সময়ে বিয়ে, সন্তানধারণের ঝক্কি নিয়ে পারিবারিক জীবনের চাকায় জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। কাজের জায়গায় কিছু বাড়তি সুবিধা পেলে সিদ্ধান্ত বদলাতে পারে বলে মনে করে এয়ারটেল, কোকা কোলা, মাইন্ডট্রি, টিসিএস-সহ বহু সংস্থা।
দিল্লি কাণ্ডের পরে ভাবমূর্তি ফেরাতে ইতিমধ্যেই এ বারের বাজেটে মহিলা ব্যাঙ্ক ও নির্ভয়া তহবিল গড়ে সাড়া ফেলেছেন অর্থমন্ত্রী। নড়েচড়ে বসেছে কর্পোরেট জগৎও। ন্যাসকমের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সঙ্গীতা গুপ্তের দাবি, মহিলাদের কর্মদক্ষতা ধরে রাখতে সুযোগ সুবিধা দিলে আখেরে সংস্থারই লাভ হবে। কারণ শেষ পর্যন্ত তা হিসেবের খাতায় ফুটে উঠবে।
দক্ষ কর্মী এ ভাবে ধরে রাখতে পিছপা নয় অনেক সংস্থাই। যেমন এয়ারটেলের অফিসে রয়েছে বাচ্চাদের ডে-কেয়ার সেন্টার। আছে মুদিখানা। বিল জমা, ব্যাঙ্কের কাজ সামলাতে ‘কঁসিয়র্জ ডেস্ক’। সংস্থার মানবসম্পদ বিভাগের আর মহালক্ষ্মীর দাবি, ছোট ছোট সুবিধা পরিবেশকে গ্রহণ -যোগ্য করে। অস্ট্রেলীয় বহুজাতিক ইম্পিরিয়াল সার্ভকর্প -এর প্রধান মিনাল সিংহের মতে বাঁধা-ধরা কাজের সময়ে ছাড় ইত্যাদির দিকে নজর দেওয়া দরকার। ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তেও মহিলাদের গুরুত্ব দেওয়া জরুরি বলে মনে করেন কোকা কোলা ইন্ডিয়ার মানবসম্পদ ও পরিষেবা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট সমীর ওয়াধওয়ান। টমাস কুক ইন্ডিয়ার প্রধান অ্যাড্রিয়ান উইলিয়ামস-এর দাবি এ বিষয়ে প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার। মানবসম্পদ বিশেষজ্ঞ তুষার বসুর মতে কর্মী-সুবিধার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট মানদণ্ডের প্রয়োজন। ব্যালান্স শিটে যেমন চাই চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের শিলমোহর, তেমনই কর্মীরা কী কী সুবিধা পাচ্ছেন, তার মূল্যায়ন প্রয়োজন।
|
অফিস যখন পাশে
• অফিসের চৌহদ্দিতে ক্রেশ ও মুদিখানা
• কঁসিয়র্জ ডেস্ক - বিভিন্ন বিল জমা, ব্যাঙ্ক ও পোস্ট অফিসের কাজের পরিষেবা
• সম্ভাবনাময় মহিলা কর্মীদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ
• বাঁধা-ধরা সময় না-মেনেও অফিসের কাজ করার সুবিধা |
বাস্তব ছবি |
• মহিলা শ্রমিক
• তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী |
ন’বছরে ৩৭% থেকে কমে ২৯%
দু’বছরে ২৬% থেকে কমে ২২% |
তথ্যসূত্র: ইন্টারন্যাশনাল লেবার ফোর্স |
|
|