ইন্দিরা আবাস যোজনায় ঘর পাওয়া দু’টি পরিবারকে ফের ‘নিজ ভূমি নিজ গৃহ’ প্রকল্পে জমির পাট্টা দেওয়ার অভিযোগ উঠল কাটোয়ায়। পুরসভার সংহতি মঞ্চে পাট্টা বিলির সময়েই এই অভিযোগের কথা জানতে পারেন রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প, ভূমি এবং বস্ত্র দফতরের প্রতিমন্ত্রী স্বপন দেবনাথের কাছে। তিনি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার মহকুমা প্রশাসন কাটোয়া ১ ব্লকের ৪০ জন, কাটোয়া ২ ব্লকের ১৮ জন ও মঙ্গলকোটের ৭০ জনের হাতে ‘নিজ গৃহ নিজ ভূমি’ প্রকল্প থেকে পাট্টা দেওয়া হয়। স্বপন দেবনাথ বলেন, “বর্ধমান জেলায় ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা প্রায় ন’হাজার। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৬৪৬৯ জনের হাতে পরচা সমেত পাট্টার কাগজপত্র দেওয়া হয়েছে।” এর পরে উপভোক্তাদের হাতে পাট্টার কাগজ তুলে দেওয়ার সময়েই অভিযোগ ওঠে, কাটোয়া ১ ব্লকের গোয়াই পঞ্চায়েতের জাজিগ্রামের আরতি হেমব্রম ও সোনামনি হেমব্রমের পরিবারের নামে ইন্দিরা আবাস যোজনার ঘর রয়েছে। সেই বাড়িতেই আরতিদেবী ও সোনামনিদেবী থাকেন। |
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আরতিদেবী ও সোনামনিদেবী বাড়ি কাগজে-কলমে জাজিগ্রামে দেখানো হলেও ওই দু’জন আসলে থাকেন ভাটিগাছা গ্রামে। পাট্টার কাগজপত্র পাওয়ার পরে বিএলএলআরও দফতরের আধিকারিকদের সামনেই তাঁরা বলেন, “আমাদের বাড়ি ভাটিগাছা গ্রামে। বেশ কয়েক বছর আগে পঞ্চায়েত থেকে বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। বুধবার বিকেলে জানতে পারি সরকার আমাদের জমি দিচ্ছে।”
পাট্টা নিয়ে উঠেছে আরও অভিযোগ। কাটোয়া ১ ব্লকের ৪০ জন পাট্টা প্রাপককে সুড্ডো গ্রামের খাসজমিতে পাট্টা দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, ভাটিগাছা গ্রামের দু’টি পরিবারকে জাজিগ্রামের ঠিকানা দেখিয়ে পাট্টা দেওয়া হয়েছে। যাঁরা আগেই পাট্টার কাগজপত্র পেয়েছেন। শ্যামলী মুর্মু, সুকু মুর্মুরা অবশ্য জানান, তাঁরা আগে পাট্টা পাননি। শ্যামলীদেবী বলেন, “আমার শাশুড়ি পাট্টা পেয়েছেন। আমরা শাশুড়ির সঙ্গে থাকি না।” আর সুকু মুর্মুর দাবি, “আমার ভাসুর এর আগে পাট্টা পেয়েছেন।”
কাটোয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের বংশী ঘোষের অভিযোগ, “এর আগে অন্তত দু’জন নাবালকের নামে এই প্রকল্প থেকে জমির পাট্টা অনুমোদন হয়েছিল। তাঁদের নামে ইন্দিরা আবাস যোজনান প্রথম পর্যায়ের টাকাও অনুমোদন হয়েছে।” কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ, “সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ প্রকৃত গরিবদের বঞ্চিত করা হচ্ছে।” কাটোয়া ১ বিএলএলআরও বিকাশ গায়েন বলেন, “ইন্দিরা আবাস যোজনার প্রাপক ‘নিজ গৃহ নিজ ভূমি’ প্রকল্প থেকে পাট্টা পাচ্ছেন, আমার জানা ছিল না। ভোটার পরিচয়পত্র দেখে আমরা পাট্টা দিয়ে থাকি। পরে দেখে নাবালক বলে মনে হলেও আমাদের কিছু করার নেই।” মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “আমি মহকুমা প্রশাসনকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।”
|